জাতীয় দলে একসাথে যত সময় কাটিয়েছেন দু‘জনের মধ্য়ে ততই বন্ধুত্ব আরও গাঢ় হয়েছে। আর সেজন্য় খুব খুশি বিরাট কোহলি। কারণ হাজার চেষ্টা করেও লোকে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির সঙ্গে তাঁর বিভেদ তৈরি করতে পারেননি। মিডিয়াতে এই বিস্ফোরক মন্তব্য় করেছেন বর্তমান ভারত অধিনায়ক।
‘ব্রেকফাস্ট উইথ চ্য়াম্পিয়ন্স‘ শীর্ষক একটি ওয়েব সিরিজে উপস্থিত হয়ে কোহলি তঁর বক্তব্য় রাখেন নানান প্রশ্নের ফাঁকে। ”অনেকেই বহুবার আমাদের মধ্য়ে বিভেদ তৈরি হওয়ার খবর প্রচার করতে চেয়েছে। নানান সময়ে নানান গল্প বলা হয়েছে। সবচেয়ে বড় ব্য়াপার হলো, ধোনিও ওইসব খবরগুলি পড়ে না, আর আমিও না। লোকে যখন আমাদের একসঙ্গে দেখে – ভাবে, ‘আরে এদের মধ্য়ে তো ঝামেলা চলছিল!‘ আমরা তখন হেসে উঠি অন্য়দের হাবভাব দেখে। কারণ, আমাদের জানা নেই, এমন কোনও সময় হয়েছে কি না।”
ঊনত্রিশ বছরের ধোনি বলেন, ”অনেকেই জানেন না, ধোনির মধ্য়ে শিশুসুলভ প্রেরণা আছে। ও যে কোনও জিনিসের সঙ্গে জড়িয়ে পড়তে পারে। ও সবসময় এনম কিছু খোঁজার চেষ্টা করে, যা ওর আগ্রহ বাড়ায়।”
মহেন্দ্র সিং ধোনির ভারতীয় দলে খেলার সময় তরুণ বিরাট কোহলির অনেক মজাদার স্মৃতি রয়েছে। তার মধ্য়েই একটা গল্প শুনিয়েছেন কোহলি। নিজের পুরনো দিনের একটি গল্প শুনিয়ে ম্য়াচ চলাকালীনই ধোনিকে হাসিয়ে ছেড়েছিলেন তিনি। কোহলির মুখেই সেই কথা শোনা যাক।
”অনূর্ধ্ব-১৭ স্তরে ক্রিকেট খেলার সময়কার একটা মজাদার ঘটনার কথা শুনিয়েছিলাম ধোনিকে। ওটা আমাদের অ্য়াকাডেমির ম্য়াচ ছিল। একটা নতুন ছেলে খেলতে এসেছিল। আমি তার হাতে বল ছুঁড়ে দিয়ে বলি, কাঁহা সে (কোথা থেকে)? (বিরাট জানতে চেয়েছিলেন, কোন এন্ড থেক বল করবে?) তাতে সেই ছেলেটা বলে ওঠে, ‘ভাইয়া, নজফগড় সে! (নজফগড় থেকে এসেছি, দাদা!)‘ ধোনিকে যখন ঘটনাটা বলি, সে সময় ম্য়াচ চলছিল। ও শোনামাত্রই হাসিতে ফেটে পড়ে।”
কোহলি এখন ভারতীয় দলের নেতা হলেও, ধোনির জন্য় তাঁর শ্রদ্ধা সেই আগের মতো আছে এখনও।
”ক্রিকেটে এত ক্ষুরধার মতিষ্কের কাউকে দেখেছি বলে আমার মনে পড়ে না। ম্য়াচ কোন দিকে এগোচ্ছে, কি করা উচিত – সব পরিকল্পনা অনায়াসে সাজাতে পারে ধোনি। অবশ্য়ই, আমারও ধারণা রয়েছে এব্য়াপারে। কিন্তু, আমি যখনই ওর থেকে পরামর্শ চাই, দশের মধ্য়ে আট-ন‘বার তা খাটবেই। বিগত এই বছরগুলিতে আমাদের বন্ধুত্ব আরও মজবুত হয়েছে।”
ধোনির থেকে বিরাটের হাতে এত সহজে অধিনায়কত্ব উঠে আসা এবং বিরাটের নেতৃত্বে ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যাওয়া সম্পর্কে যাঁরা সন্দেহ প্রকাশ করেন, তাঁদের উদ্দেশে কোহলির বার্তা, ”পরিবর্তনটা বেশ মসৃণভাবেই হয়েছে। দলের কেউ বুঝতেই পারেনি, আদৌ কোনও পরিবর্তন হয়েছে কি না। সবকিছু যেভাবে মসৃণ গতিতে এগিয়েছে এবং এগোচ্ছে, তার জন্য় ধোনিকে ধন্য়বাদ। আমার অধিনায়কত্বের শুরুতে ওকে পাশে পাওয়ার জন্য় আমি খুশি। নিজেকে ভাগ্য়বান মনে করি।”
ধোনিকে বিরাট চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করেন। বললেন, ”এমএস এবং আমার মধ্য়ে বোঝাপড়াটা খুব সুন্দর। যখন আমরা উইকেটের মধ্য়ে দৌড়োই রান নেওয়ার জন্য়, ও যদি আমাকে দু‘রান বলে, আমি চোখ বন্ধ করে দৌড়ই দু‘রান নেওয়ার লক্ষ্য়ে। কারণ, আমি জানি ও যখন বলেছে, ঠিকই বলেছে। আমি ঠিক দু‘রান দৌড়ে ফেলব।”