গত বুধবারই এশিয়া কাপের (Asia Cup 2025) ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিলো ভারতীয় দল। বাংলাদেশকে হারিয়ে এবার খেতাবী যুদ্ধের টিকিট নিশ্চিত করলো পাকিস্তানও। মহাদেশীয় মেগা টুর্নামেন্টের বিগত ১৬টি সংস্করণের মধ্যে ৮টি জিতেছে টিম ইন্ডিয়া। ২ বার সেরার শিরোপা জিতেছে পাকিস্তানও। কিন্তু ফাইনালে একে অপরের বিরুদ্ধে মাঠে এর আগে কখনও নামে নি উপমহাদেশীয় ক্রিকেটের দুই হেভিওয়েট। তাই আগামী রবিবার দুবাইয়ের মাঠে আয়োজিত হতে চলা ম্যাচটি যে ঐতিহাসিক তা বলাই যায়। চলতি টুর্নামেন্টে ইতিমধ্যেই দু’বার একে অপরের বিরুদ্ধে খেলেছে ভারত ও পাকিস্তান (IND vs PAK)। দু’বারই সহজ জয় পেয়েছে ‘মেন ইন ব্লু।’ ফর্মের বিচারে ফাইনালেও তাদেরই এগিয়ে রাখছেন বিশেষজ্ঞরা। রবিবারের ম্যাচ শুরুর আগে পাক শিবিরের দুই তারকাকে যদি শৃঙ্খলাবিধি ভঙ্গের অপরাধে শাস্তি দেয় আইসিসি, তাহলে ‘অ্যাডভান্টেজ’ আরও বাড়তে পারে ভারতের।
Read More: “ভারতের ইগো’কে হত্যা কর…” রবিবারের ফাইনালের আগে পাকিস্তানকে পরামর্শ শোয়েব আখতারের !!
শাস্তি পাচ্ছেন দুই পাক ক্রিকেটার-

২১ তারিখ এশিয়া কাপের (Asia Cup 2025) সুপার ফোর পর্বের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিলো ভারত ও পাকিস্তান। বিতর্কের সূত্রপাত সেখানেই। অর্ধশতকের গণ্ডী পেরোনোর পর ব্যাটকে বন্দুকের মত করে ধরে গ্যালারির দিকে তাক করতে দেখা গিয়েছিলো পাক ওপেনার সাহিবজাদা ফারহান’কে (Sahibzada Farhan)। খেলার মাঠে এহেন হিংসাত্মক উদ্যাপন কেন? প্রশ্ন তুলে আইসিসি’র কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিলো বিসিসিআই। ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা কাঠগড়ায় তুলেছিলো হারিস রউফকেও (Haris Rauf)। বাউন্ডারি লাইনে ফিল্ডিং করার সময় দর্শকদের দিকে আঙুলের সাহায্যে ৬-০ দেখাচ্ছিলেন তিনি। অপারেশন সিঁদুরের পর পাক সেনাবাহিনী দাবী করে আসছে যে ভারতের ৬টি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে তারা। কোনো প্রমাণ যদিও দেখাতে পারে নি তারা। হাতের ইশারায় সেদিন সেই অসমর্থিত দাবীকেই সত্যি বলে প্রতিপন্ন করার চেষ্টায় ছিলেন পাকিস্তানের এক্সপ্রেস পেসার।
বিসিসিআই-এর দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে আজ শুনানি ছিলো সাহিবজাদা ফারহান ও হারিস রউফের। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর যে শাস্তি এড়াতে ভারতীয় কিংবদন্তি বিরাট কোহলির (Virat Kohli) নাম উল্লেখ করেছেন সাহিবজাদা। একই ধরণের সেলিব্রেশন করেও কোনো শাস্তি পান নি বিরাট, ম্যাচ রেফারি রিচি রিচার্ডসনকে সেই কথাই বলেছেন তিনি। “আমি একজন পাঠান। আমাদের দেশে এভাবেই বন্দুক নিয়ে উদ্যাপন হয়,” জানিয়েছেন পাক ওপেনার। হারিস রউফ আবার অপারেশন সিঁদুর বা যুদ্ধবিমান ধ্বংসের বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। “৬-০’র কোনো অর্থই নেই। তাহলে এটা কী করে দোষের হতে পারে?” রিচি রিচার্ডসনকেই পালটা প্রশ্ন করেছেন তিনি। প্রসঙ্গত ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিলো পিসিবিও। গতকাল শুনানি হয়েছে তাঁর। সতর্ক করে আপাতত তাঁকে রেহাই দিয়েছে আইসিসি।
ফাইনালে বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে ভারত-

সাহিবজাদা ফারহান বা হারিস রউফ (Haris Rauf) যতই নিজেদের নির্দোষ বলে দাবী করুন না কেন, আজ শুনানিতে যে সাফাই দিয়েছেন তাঁরা, তা ম্যাচ রেফারি রিচি রিচার্ডসনের পছন্দ হয় নি বলেই খবর। রবিবারের ফাইনালের আগেই শাস্তি ঘোষণা করা হতে পারে তাঁদের। যদি নির্বাসিত করা হয় তাঁদের, সেক্ষেত্রে এশিয়া কাপের (Asia Cup 2025) খেতাবী যুদ্ধে বাড়তি সুবিধা পাবে ‘মেন ইন ব্লু।’ দুই গুরুত্বপূর্ণ সদস্যকে ছাড়াই মাঠে নামতে হবে পাকিস্তানকে। সাহিবজাদা খেলতে না পারলে বিকল্প হিসেবে মহম্মদ হারিস বা সাম আইয়ুবকে ওপেন করতে পাঠাতে পারেন পাক কোচ মাইক হেসন। আর হারিসের বদলি হিসেবে জায়গা পেতে পারেন হাসান আলি। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে নির্বাসন নয় বরং মাঠে অপশব্দের প্রয়োগ ও আগ্রাসী অঙ্গভঙ্গি করার অপরাধে বড় অঙ্কের জরিমানা করা হতে পারে দু’জনকেই।