স্তম্ভিত ক্রিকেটদুনিয়া, চোখের জলে বাইশ গজ’কে বিদায় জানালেন এই তারকা !!

চলছে টেস্ট ক্রিকেটের মরসুম। ভারতের মাঠে টিম ইন্ডিয়ার মুখোমুখি হয়েছে ইংল্যান্ড। গতকাল রাঁচীর মাঠে দুর্দান্ত জয় ছিনিয়ে নিয়ে সিরিজ মুঠোবন্দী করেছেন রোহিত শর্মা (Rohit Sharma), শুভমান গিল’রা। আগামী বৃহস্পতিবার মুখোমুখি হতে চলেছে ক্রিকেটদুনিয়ার আরও দুই হেভিওয়েট- নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। টি-২০ সিরিজে ইতিমধ্যে জয় পেয়েছে অজিরা। টেস্টের আসরে দুই ট্রান্স-তাসমান প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে জয় পায় কে, তা […]

অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম, দিল্লি (Arun Jaitley Stadium)-

নাম – অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম

পুরাতন নাম – ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়াম

তত্ত্বাবধায়ক সংস্থা- দিল্লি ও জেলা ক্রিকেট সমিতি (DDCA)

মাঠের পরিমাপ- ৬৫-৬৫ মিটার (স্কোয়্যার বাউন্ডারি), ৬৮-৬৮ মিটার (স্ট্রেট বাউন্ডারি)

হোম টিম- ভারত, দিল্লি, দিল্লি ক্যাপিটালস (পুরুষ ও মহিলা)

দর্শকধারণ সক্ষমতা- ৩৫,২০০

প্রতিষ্ঠা- ১৮৮৩ খ্রীস্টাব্দ

ঠিকানা- নয়া দিল্লি, ভারত

লোকেশন- https://maps.app.goo.gl/z66MnxseU2YGfP5G9

অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম সম্পর্কে কিছু কথা-

১৮৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তৎকালীন ফিরোজ শাহ কোটলা – যা আজ অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম নামে পরিচিত। এটি, দিল্লি ও জেলা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (DDCA) দ্বারা পরিচালিত। বেশ কয়েকটি ঐতিহাসিক ম্যাচের সাক্ষী থেকেছে এই অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল অনিল কুম্বলের পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এক ইনিংসে ১০ উইকেট নেওয়া। ১৯৪৮-৪৯ মৌসুমে কোটলায় প্রথম টেস্ট অনুষ্ঠিত হয়েছিল, জন গডার্ডের নেতৃত্বে শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজ ভারতের বিরুদ্ধে পাঁচটি টেস্ট সিরিজ খেলেছিল। এই মাঠেই ১৯৮৩-৮৪ সালে, সুনীল গাভাস্কার তার ২৯তম সেঞ্চুরি করে স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের টেস্ট সেঞ্চুরির দীর্ঘস্থায়ী রেকর্ডের সমান করেন।

তবে, ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার একটি ওয়ানডে ম্যাচ বিপজ্জনক পিচের কারণে খেলা পরিত্যক্ত করতে হয়েছিল। যার পর আন্তর্জাতিক ভেন্যু হিসেবে এই মাঠের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। ১২ মাসের জন্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (ICC) কোটলার এই মাঠটি কে ব্যান করে দেয় এরপর ২০১১ সালের বিশ্বকাপে আবার আন্তর্জাতিক ম্যাচ করানোর ছাড়পত্র পায় দিল্লি ক্রিকেট এসোসিয়েশন। এরপর, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে, প্রাক্তন ডিডিসিএ সভাপতি এবং অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির মৃত্যুর পর, ২৪ আগস্ট ২০১৯ তারিখে তাঁর স্মরণে স্টেডিয়ামটির নামকরণ করা হয়। ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে স্টেডিয়ামটির আনুষ্ঠানিক নামকরণ করা হয় ‘অরুণ জেটলি ক্রিকেট স্টেডিয়াম’ নামে।

অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামের বিভিন্ন স্ট্যান্ডগুলি-

  • বিষণ সিং বেদী স্ট্যান্ড
  • মহিন্দর অমরনাথ স্ট্যান্ড
  • গৌতম গম্ভীর স্ট্যান্ড

★ ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে স্টেডিয়ামের একটি প্যাভিলিয়ন স্ট্যান্ডের নামকরণ করা হয় প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলির নামে। তাছাড়া, আগে প্রাক্তন ভারতীয় ওপেনার বীরেন্দ্র শেবাগের ভারতের প্রাক্তন মহিলা দলের অধিনায়ক আঞ্জুম চোপড়ার নামে গেটের নামকরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি দিল্লির তারকা ক্রিকেটার আশিষ নেহরার নামে আশীষ নেহরা এন্ড রয়েছে এখানে।

অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে ঘটা কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা-

  • ১৯৫২ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলার সময়, হেমু অধিকারী এবং গোলাম আহমেদ দশম উইকেটে গড়া ১১১ রানের রেকর্ড পার্টনারশিপের সাক্ষী ছিলেন। আজও এই রেকর্ডটি অক্ষুণ্ণ।
  • ১৯৮৩ সালে, অরিজিনাল লিটল মাস্টার সুনীল গাভাস্কার এই মাঠে তার ২৯তম টেস্ট শতরানটি হাঁকিয়েছিলেন। পাশাপশি, ওই দিনই স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের তৎকালীন টেস্টে ফরম্যাটে ২৯টি সেঞ্চুরির রেকর্ডের সমান করে ফেলেন ‘মুম্বইয়ের ব্র্যাডম্যান’।
  • ১৯৯৯ সালে, অনিল কুম্বলে পাকিস্তানের বিপক্ষে এক ইনিংসে ১০টি উইকেট নেওয়ার বিরল কৃতিত্ব গড়ে ফেলেন। ইংল্যান্ডের জিম লেকারের পর এই কৃতিত্ব অর্জনকারী দ্বিতীয় বোলার হয়ে উঠেছিলেন তিনি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৭৪ রান দিয়ে ১০ উইকেট নিয়েছিলেন অনিল কুম্বলে।
  • ২০০৫ সালের ডিসেম্বরে, শচীন টেন্ডুলকার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তার ৩৫তম টেস্ট সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে সুনীল গাভাস্কারের সর্বাধিক টেস্ট সেঞ্চুরির (৩৪) রেকর্ড ভেঙে দেন।
  • ১৯৮৭ , ১৯৯৬ , ২০১১ এবং ২০২৩ সালে ভারতে যখন ক্রিকেট বিশ্বকাপ আয়োজন হয়েছিল। প্রতি বিশ্বকাপেই এই স্টেডিয়ামে একদিনের আন্তর্জাতিক (ওডিআই) ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
  • ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার একটি ওয়ানডে ম্যাচ বিপজ্জনক পিচের কারণে খেলা পরিত্যক্ত করতে হয়েছিল। যার পর আন্তর্জাতিক ভেন্যু হিসেবে এই মাঠের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল।
  • ২০১৭-১৮ সালে দিল্লিতে ভারত ও শ্রীলঙ্কার তৃতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনে, ধোঁয়ার কারণে খেলা বন্ধ রাখতে হয়েছিল। এদিন শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটাররা বায়ু দূষণ-বিরোধী মুখোশ পড়তে দেখা গিয়েছিল, যা খেলার ব্যাঘাতের ক্ষেত্রে বিরল দৃশ্য। এমনকি, ভারত এবং শ্রীলংকার খেলোয়াড়দের মাঠের মধ্যে বমি করতে ও দেখা গিয়েছিল।
  • ২০১৯-২০ সালে ভারত সফরে আসে বাংলাদেশ। আর দুই দল টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচটি এই মাঠেই খেলেছিল (৩ নভেম্বর ২০১৯) যেটি ছিল আন্তর্জাতিক পুরুষ টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের ১,০০০তম ম্যাচ। যদিও সেদিন, এই ফরম্যাটে ভারতকে প্রথম ও একমাত্র বারের জন্য পরাস্ত করেছিল বাংলাদেশ।

অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম সংক্রান্ত কিছু সাধারণ প্রশ্নাবলী (FAQs)-

অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামটিতে দর্শকাশন কত ?

৩৫,২০০ জন।

অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামটি কবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ?

১৮৮৩ সালে।

অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামের পুরানো নাম কি ?

ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়াম।

ICC অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক ম্যাচ করানোর থেকে ১২ মাসের জন্য ব্যান করেছিল কেন ?

২০০৯ সালের ডিসেম্বরে ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার একটি ওয়ানডে ম্যাচ বিপজ্জনক পিচের কারণে খেলা পরিত্যক্ত করতে হয়েছিল। যার পর আন্তর্জাতিক ভেন্যু হিসেবে এই মাঠের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। ১২ মাসের জন্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (ICC) কোটলার এই মাঠটি কে ব্যান করে দেয়।

কবে ফিরোজ শাহ কোটলার নাম পরিবর্তন করে অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম রাখা হয়েছিল ?

এরপর, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে, প্রাক্তন ডিডিসিএ সভাপতি এবং অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির মৃত্যুর পর, ২৪ আগস্ট ২০১৯ তারিখে তাঁর স্মরণে স্টেডিয়ামটির নামকরণ করা হয়।