বিশ্বের পাশাপাশি ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার হলেন শচীন তেন্ডুলকর। যিনি দীর্ঘ দুই দশক নিজের ব্যাটিং তুলির টানে রাঙিয়ে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে। একটা সময় ব্যাট হাতে কমবেশি বিশ্বের সব বোলারের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছিলেন। তাঁকে সমীহ করতেন পৃথিবীর সব ক্রিকেটখেলিয়ে দলের প্রতিটি সদস্য। শুধু ক্রিকেটার নন, মাস্টার ব্লাস্টারকে জমের মতো ভয় পেতেন টিনসেল টাউনের বহু সুন্দরীরা। শচীনের অসাধারণ ব্যাক্তিত্বের কাছে কেমন যেন তালগোল পাকিয়ে ফেলতেন সবাই। কারণটা হল, তিনি মাস্টার ব্লাস্টার শচীন তেন্ডুলকর।

এখানে দেখুনঃ শচীন তেন্ডুলকরের বিরুদ্ধে বল বিকৃতির অভিযোগ তুললেন এই পাকিস্তানি ক্রিকেটারটি !
শচীন যখন ব্যাট হাতে ক্রিজে, গোটা দেশের নজর এসে থেমে যেত টেলিভিশনের পর্দায়। চারিদিক শুনসান। ভারতীয় দলের জার্সি গায়ে তাঁর একটা ম্যাচ উইনিং ইনিংস রাত বিরাতে উৎসবের চেহারা নিত শহরের রাস্তা–ঘাট থেকে অলিগলি। তিনি কোন জাতের ক্রিকেটার, সেটা আট থেকে আশি ভালোই জানতেন। আর তাই শচিনকে মনে মনে শ্রদ্ধার পাশাপাশি অনেকে ভয়ও পেতেন। সে তালিকায় রয়েছেন বলিউডের ডাকসাইটের সুন্দরী একতা কাপুর। যিনি বলিউডের বড় পর্দায় বেশ কয়েক’টি ভালো কাজ করার পাশাপাশি টিভির ছোট পর্দাতেও দারুণ সফল হয়েছেন। মূলত এই একতা কাপুরের সৌজন্যে দেশ–বিদেশের মহিলারা দীর্ঘদিন ধরে টিভিতে আটকে রোজকার সিরিয়ালে আক্রান্ত হয়ে রয়েছেন। ছোট পর্দায় তাঁর সাস–বহু সিরিয়ালগুলি বর্তমান সময়ে বেশ জনপ্রিয়। এভাবে তাঁর প্রযোজিত টিভি সিরিয়ালগুলির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা কামিয়ে এখন দেশের নামী ব্যবসায়ীতে পরিণত হয়েছেন একতা।

এত সবের পরেও একতা কাপুরের মনে কিন্তু একটা ভয় সব সময় চেপে বসে থাকতো। সেটা হল শচীন ভীতি। পাছে মাস্টার ব্লাস্টারের ব্যাটিং ধামাকা তাঁর ব্যবসায় তালা না মেরে দেয়। প্রতিপক্ষ দলের বিরুদ্ধে যখন ব্যাট হাতে শচীন ক্রিজে, স্বাভাবিকভাবে গোটা দেশের নজর চলে যেত টিভির পর্দাতে। এমনকি তখন বাড়ির মহিলারাও সিরিয়াল প্রীতি থেকে বেরিয়ে মাস্টার ঝড়ের দিকে নজর রাখতেন। বাস্তবে সেটাই সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় একতার কাছে। শচীনের খেলা দেখার জন্য চ্যানেল ঘুরিয়ে দেওয়ায় তাঁর টিভি শো’র টিআরপি নাকি তরতরিয়ে নেমে যেত। সম্প্রতি এই কড়া সত্যটি স্বীকার করে নিলেন খোদ হিন্দি টিভি শো’র বেতাজ মালকিন একতা কাপুর।

সম্প্রতি দিল্লিতে নিজের নতুন একটি টিভি শো লঞ্চ করতে এসে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, “আজ একটা সত্যি কথা স্বীকার করতে অসুবিধা নেই, ভরা ক্রিকেট মরশুমে আমি কিন্তু নিজের টিভি শো লঞ্চ করতাম না। কারণ, আমি দেখেছি, শচীন তেন্ডুলকর ব্যাট হাতে মাঠে নামলে আমার শো’র টিআরপি অনেকটাই নেমে যেত।”

এখানে দেখুনঃ সৌরভের বিরুদ্ধে অভিযোগের তীর বেদির
একটু থেমে, “যখন আমি নিজের শো’র টিআরপি নামতে দেখতাম, সবাইকে জিজ্ঞাসা করতাম, কারণটা কি? সবাই বলতো, শচীন খেলছে।”

একতা কাপুর আরও বলেন, “সফল সিরিয়াল ‘কিঁউকি সাস ভি কভি বহু থি’ এবং ‘কাহানি ঘর ঘর কি’ সময় শচীন ব্যাট করতে নামলেই আমার শো’এর দফারফা হয়ে যেত।”

শচীন সম্পর্কে নিজের এক অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে একতা কাপুর বলেন, “ট্রেনে সিমলা থেকে দিল্লি যাচ্ছিলাম। ট্রেন মাঝে একটা স্টেশনে থেমেছিল। তখন নাকি শচীন ৯৮ রানে ক্রিজে ব্যাট করছিল। সেদিন দেখেছিলাম, ট্রেনের প্রত্যেকটি যাত্রীর পাশাপাশি রেলের সমস্ত আধিকারিকরা অপেক্ষা করছিলেন শচীনের সেঞ্চুরির জন্য। সত্যি শচীনই পারেন সময়কে থামিয়ে দিতে।”