অবশেষে বিশ্বক্রিকেট নিয়ামক সংস্থার প্রধান কার্যকরি সমিতি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বেশকিছু নতুন নিয়ম পালনের ঘোষণা করলো। বর্তমান সময়ে একাধিক বিষয়কে মাথায় রেখে নতুন কিছু নিয়মের মোড়কে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে আরও কাছ থেকে জানার সুযোগ করে দিল তারা। লন্ডনে চলতে থাকা আইসিসি–র বার্ষিক সভায় ক্রিকেটে যে নতুন নিয়মগুলি নিয়ে পর্যোলোচনা হল, সেগুলি আগামী ১ অক্টোবর থেকে খেলায় কার্যকরি হবে।
আইসিসি–র সভায় ডিসিশন রিভিউ সিস্টেমে প্রয়োজনীয় পরিবর্তের সুপারিশ করা হয়েছে। আইসিসি–র নতুন নিয়ম অনুযায়ী দলের বোলিং সাইট ডিআরএস–এর সাহায্যে আম্পায়ারের কাছে এলবিডব্লুর জন্য আপিল করেন, এবং আম্পায়ারের নেওয়া আগের সিদ্ধান্ত যদি তাতে ভুল প্রমাণিত হয়, তাহলে সেই দলের ডিআরএস বেঁচে যাবে। এর ফলে একটা দারুণ পরিবর্তন আসবে যে ম্যাচের ৮০ ওভারের পর পাওয়া বিভিউ এবার থেকে বন্ধ হয়ে যাবে। এবার থেকে টি–২০ ক্রিকেটে ডিআরএস প্রয়োগে সম্মতি পাওয়া গিয়েছে। বল ট্র্যাকিং এবং এজ ডিটেক্ট বিষয়টি দেখা জরুরি হয়ে পড়বে।
এবার থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যাটের সাইডের ধার এবং ব্যাটের আকার নির্ধারিত করা হয়েছে। নতুন এই নিয়মের ফলে ব্যাটের চওড়া হবে ১০৮ মিমি এবং গভীরতা হবে ৬৭ মিমি। এবং ব্যাটের সাইডের মাপ হবে ৪০ মিমি। যদিও বিশ্বের নামীদামী ব্যাটসম্যানের ব্যাটের সাইডের মাপ হয় ৩৮ থেকে ৪২ মিমি পর্যন্ত। যদিও অনেকের ক্ষেত্রে এই মাপ ৫০ মিমি পর্যন্ত দেখা গিয়েছে। যেটা আইসিসি–র নিয়মবিরুদ্ধ।
কোনও ব্যাটসম্যানের ব্যাট যদি একবার মাঠে স্পর্শ করার পর ক্রিজে এসে ব্যাট সেখানে না স্পর্শ করে হাওয়ায় ভাসিয়ে রাখেন, তাতে তিনি এবার থেকে আউট হিসেবে বিবেচিত হবেন না। এর অর্থ ব্যাটের কিছুটা অংশ ক্রিজ স্পর্শ করার পর যদি হাওয়ায় উঠে যায়, তার পর বল উইকেটে এসে লাগলে ব্যাটসম্যান আউট হবেন না। সদ্য শেষ হয়ে যাওয়া আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের ওপেনার ব্যাটসম্যান রোহিত শর্মার সঙ্গেও ঠিক একই জিনিষ ঘটেছিল। যদিও তখন আইসিসি–র এই নতুন নিয়ম কার্যকর না হওয়ায় রোহিতকে নিজের উইকেট বিসর্জন দিতে হল।
এবার থেকে ফুটবলের মতো ক্রিকেটেও খেলোয়াড়দের খারাপ আচরণের জন্য তাঁদের মাঠের বাইরে চলে যেতে হতে পারে। ম্যাচ খেলাকালিন কোনও ক্রিকেটার অন্য ক্রিকেটার কিংবা মাঠে উপস্থিত আম্পায়ারকে শারীরিকভাবে আঘাত করলে তাঁকে এই শাস্তি পেতে হবে এবার থেকে। শুধু গায়ে হাত তোলা নয়, আম্পায়ার সহ অন্য খেলোয়াড়দের নিদিষ্ট কোনও খেলোয়াড় হুমকি দিলেও তাঁর ক্ষেত্রে এই শাস্তি প্রযোজ্য হবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অনুশাসন বজায় রাখতে এমন অভিনব সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে আইসিসি। কোনও ক্রিকেটারকে তাঁর এই অপরাধের জন্য একবার মাঠ থেকে আম্পায়ার বের করে দিলে সে ম্যাচে তিনি আর খেলতে পারবেন না। তা সে একদিনের ম্যাচ হোক কিংবা টেস্ট।