এই বার নাইট অধিনায়ক গম্ভীর যা করলেন, দেখলে শ্রদ্ধা বাড়বে 1
গৌতম গম্ভীর

মহৎ উদ্দেশ্য়ের সঙ্গে জড়িত হলেন ক্রিকেটার গৌতম গম্ভীর। দিল্লির ইন্দ্রপস্থ অ্য়াপোলো হাসপাতাল একটি জনসচেতনতামূলক প্রচারাভিযান শুরু করেছে শনিবার থেকে। তাতে যোগ দিয়েছেন ২০১১ বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় ক্রিকেট দলের অন্য়তম নায়ক। জনসচেতনতামূলক প্রচারাভিযানটির মূল উদ্দেশ্য় দেশের নাগরিগকদের মধ্য়ে অঙ্গদানের ব্য়াপারে জনজাগরণ গড়ে তোলা। ভারতে বহু মানুষ প্রতিবছর অঙ্গবিকল হয়ে যাওয়ার কারণে মারা যান বা প্রতিবন্ধী হয়ে পড়েন। কিন্তু, মারা যাওয়ার আগে যদি কোনও মানুয তাঁর অঙ্গগুলি দান করে দিয়ে যান, তাহলে তাঁর মৃত্য়ুর পর সেই অঙ্গ প্রয়োজনীয় মানুষের কাজে লাগতে পারে, সেই মানুষটি সুস্থ জীবন-যাপন করে বেঁচে থাকতে পারেন।
গম্ভীর নিজে ‘গিফ্ট আ লাইফ’ নামক একটি প্রচারাভিযানের সঙ্গে অনেক আগেই থেকে যুক্ত। ওই জনজাগরণমূলক প্রচারাভিযানের ব্র্য়ান্ড অ্য়াম্বাসাডর তিনি। অ্য়াপোলো হাসপাতালের অঙ্গদান প্রচারাভিযানের প্রসঙ্গে বলেন, ”এই মহৎ উদ্দেশ্য়র সঙ্গে জড়িত হতে পেরে আমি সম্মানিত বোধ করছি। অঙ্গদান সমানাধিকারবাদী ও নৈতিক কাজ।”
গম্ভীর যে ‘গিফ্ট আ লাইফ’ প্রচারাভিযানের সঙ্গে যুক্ত, সেটি অ্য়াপোলো ট্রান্সপ্ল্য়ান্ট ইনস্টিটিউট শুরু করেছে ২০১১ সালে। ওই প্রচারাভিযানের উদ্দেশ্য় হল, দেশের নাগরিকদের অঙ্গদান করতে আরও বেশি করে উৎসাহিত করা। সে সম্পর্কে গোতি বলেন, ”অঙ্গ প্রতিস্থাপন করতে গেলে অঙ্গদান জরুরি। প্রতি বছর হাজার হাজার রোগী মারা যায় অঙ্গের অভাবে। আমার মনে হয়, এই উদ্য়োগ সমাজে জনগণের মধ্য়ে অঙ্গদানের নিয়ে সচেতনতার যে অভাব রয়েছে, তা দূর করতে সাহায্য় করবে।” এখানে বলে রাখা ভালো, গম্ভীর ভারতের একমাত্র ক্রিকেটার যিনি তাঁর সমস্ত অঙ্গ এখন থেকেই দান করে রেছেছেন (মারা যাওয়ার পর তাঁর অঙ্গ যাতে কোনও প্রয়োজনীয়র কাজে লাগে)।
উল্লেখ্য়, ভারতে প্রতিবছর পাঁচ লক্ষ মানুষ অঙ্গের অভাবে মারা যান। এরমধ্য়ে দেড় লক্ষ মানুষ কিডনি প্রতিস্থাপন করাতে না পেরে মারা যান, কিডনি অভাবে। সমীক্ষা বলছে প্রতি বছরে তিনহাজার রোগীর কিডনি জোটে প্রতিস্থাপন করানোর জন্য়। আর সেই অভাব মেটানোর জন্য়ই অ্য়াপোলো হাসপাতাল জনগণকে সচেতন করতে চান, অঙ্গদানের ব্য়াপারে, যাতে কেউ মারা যাওয়ার পর তাঁকে পুড়িয়ে ফেলে তাঁর অঙ্গগুলি নষ্ট করার আগে, তা দিয়ে আরও একটি প্রান বাঁচানো যায়।
অ্য়াপোলো হাসপাতাল গ্রুপের সিনিয়র পেডিয়াট্রিক গ্য়াস্ট্রোএন্ট্রোলজিস্ট ও গ্রুপ মেডিকেল ডিরেক্টর অনুপম সিবাল বলেন, ”ভারতে মানুষ অঙ্গদান করতে চায় না কিছু গল্পকথা আর অন্ধবিশ্বাসের জন্য। সেই ব্য়াপারে আমাদের দেশের নাগরিকদের সচেতন করে তুলতে হবে, যাতে তাঁরা এগিয়ে আসেন এব্য়াপারে সাহায্য় করতে।”
ভারতের বহু মানুষই হার্ট, প্য়ানক্রিয়াস, লিভার, কিডনি ও ফুসফুসের সমস্য়ায় মারা যান। অথচ কেউ যদি মারা যাওয়ার আগে তা দান করে দিয়ে যান, তাহলে তাঁর মারা যাওয়ার পর সেই অঙ্গগুলি তাঁর দেহ থেকে বের করে সংরক্ষিত করে রাখা গেলে প্রয়োজনীয় রোগীদের দেহে তা প্রতিস্থাপন করে তাঁদের বাঁচানো যায়। বিশ্বের অন্য়ান্য় দেশের মতো ভারতেও প্রতিবছর ১৩ অগস্ট বিশ্ব অঙ্গদান দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয় এবং নানা উদ্য়োগ নেওয়া হয়, যাতে জনগকে এব্য়াপারে সচেতন ও উৎসাহী করে তোলা যায়।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *