কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব বনাম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর ম্যাচটি খুব একটা না জমলেও ম্যাচ পরবর্তী সময়টি ছিল জল্পনা ও কল্পনায় ভরপুর। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি মন্তব্য অত্যন্ত ভাইরাল হয়ে যায়। পেসার শেল্ডন কটরেলের বলে যখন বিরাট কোহলি ক্যাচ আউট হয়ে প্যাভিলিয়নের দিকে রওনা দিচ্ছিলেন, তখন নাকি কমেন্ট্রিতে সুনীল গাভাস্কার হিন্দিতে বলে উঠেছিলেন, “ইনহোনে লকডাউন মে বাস অনুষ্কা কি গেন্দোঁ কি প্র্যাকটিস কি হ্যায়”। যার বাংলা করলে দাঁড়ায়, “কোহলি লকডাউনে শুধু অনুষ্কার বলেই অনুশীলন করেছেন।”
কিন্তু আদতে বিষয়টি ছিল একেবারে অন্য। আসলে গাভাস্কারের এই মন্তব্যটিকে ভূল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। টুইটারে এক নেটিজেন একটি ভিডিও পোস্ট করেন, যেই সময়ে গাভাস্কার এই মন্তব্যটি করেছিলেন। সেখানে একেবারে স্পষ্ট হিন্দি ভাষায় তিনি বলেছিলেন, “লকডাউন থা তো সিরফ অনুষ্কা কি বোলিং কি প্র্যাক্টিস কি থি উনহোনে, উও ভিডিও দেখি হ্যায়, উস সে তো কুছ নেহি হোনা হ্যায়।” যার বাংলা সারমর্ম করলে বোঝায়, “লকডাউনে বিরাট শুধু অনুষ্কার বোলিংয়ে প্র্যাক্টিস করছিল। আমি একটি ভিডিওতে দেখেছি। এতে তেমন কিছুই হবে না।” যার ফলে এটি স্পষ্ট, অন্য কোনও নোংরা ভাবনায় গাভাস্কার এই মন্তব্য করেননি।
কিন্তু সেসব বিচার না করেই সরাসরি ভারতের কিংবদন্তী ওপেনারকে আক্রমণ করতে শুরু করেন নেটিজেনরা। কথা শোনাতে ছাড়েননি বিরাট পত্নী তথা বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী অনুষ্কা শর্মা। কিন্তু সমস্ত জল্পনা ও কল্পনা সরিয়ে এবার মুখ খুললেন গাভাস্কার। জনপ্রিয় সংবাদ চ্যানেল ইন্ডিয়া টুডের একটি সাক্ষাৎকারে গাভাস্কার নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন।
জনপ্রিয় ক্রীড়া লেখক এবং বিশেষজ্ঞ বোরিয়া মজুমদারের সাথে সেই সাক্ষাৎকারে সুনীল গাভাস্কার অনুষ্কা শর্মার ইনস্টাগ্রাম পোস্ট সম্বন্ধে বলেছেন, “আমি তাকে কোথায় দোষ দিলাম? এখানে আমি সেক্সিস্ট কিভাবে হলাম? আমি শুধু বলেছি যা আমি ভিডিওতে দেখেছি যা আশেপাশের কোনও প্রতিবেশী রেকর্ড করে ছেড়ে দিয়েছিল। বিরাটের কোনও প্র্যাকটিস ছিল না আর একমাত্র প্র্যাকটিস ও করেছে তাদের বিল্ডিং কম্পাউন্ডে অনুষ্কার সাথে। এটাই আমি বলেছিলাম। এখানে আমি বিরাটের ব্যর্থতার জন্য অনুষ্কাকে কই দোষ দিলাম? আমি শুধু বলেছি যে ভিডিওতে অনুষ্কা বিরাটকে বল করছিল।”
সুনীল গাভাস্কার বরাবরই আওয়াজ তুলেছেন ক্রিকেটাররা যাতে বিদেশ সফরে তাদের স্ত্রীদের নিয়ে যেতে পারে। সেই নিয়ে বোরিয়ার উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, “তুমি জানোই, আমিই একমাত্র যে সবসময় বলে এসেছি যে স্ত্রীদের সবসময় স্বামীদের সাথে যাওয়া উচিত বিদেশ সফরে। আমিই সেই ব্যক্তি যে অফিসে কাজ করতে যায়, আর যখন বাড়ি ফেরে, সে তার স্ত্রীয়ের কাছে ফিরে আসে। একইভাবে, ক্রিকেটাররা যখন কোনও সফরে যায় কিংবা দেশের মাটিতে খেলে, তখন কেন তারা তাদের সহধর্মিনীদের পাশে পাবে না? তাদের কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর, তারা তাদের স্ত্রীদের কাছে ফিরে আসে যেরকম সাধারণ মানুষ করে। তাই আমি ওকে দোষ দিচ্ছি না।”