কেরালা হাইকোর্ট ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত পেস বোলার সান্থাকুমারণ শ্রীসন্থের সাজা অপরিবর্তিত রাখার পর শ্রীসন্থ মিডিয়াতে যে মন্তব্য় করেছেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের নিয়ামক সংস্থা সম্পর্কে, তার জবাব দিয়েছেন বোর্ড অফ কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই)-এর সচিব। পরিষ্কার ভাষায় জানানো হয়েছে, কেরলের এই পেস বোলার বাজে বকছেন। নিয়ম-কানুন সম্পর্কে শ্রী কিছুই জানেন না।
২০১৩ সালে রাজস্থান রয়্য়ালসের হয়ে আইপিএল খেলার সময় আরও দুই ক্রিকেটারের সঙ্গে শ্রীসন্থের বিরুদ্ধে স্পট-ফিক্সিংয়ের অভিযোগ ওঠে। তারপর ২০১৫ সালে বিসিসিআই শ্রীকে আজীবন নির্বাসিত করে ক্রিকেট থেকে। এরপর থেকে নিজেকে বারবার নির্দোষ বলে আসছিলেন শ্রীসন্থ। গত বছর দিল্লির একটি বিশেষ আদালত পোক্ত প্রমাণের অভাবে শ্রীসন্থকে বেকসুর খালাস করে। যদিও দিল্লি পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত তার পরেও চালিয়ে যায়। কেরালা হাইকোর্ট গত অগস্টে শ্রীসন্থের পক্ষে রায় দিয়ে নির্বাসনের সাজা তুলে নিতে বলে বিসিসিআই‘কে। কিন্তু, ভারতীয় বোর্ড তাদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে। পাল্টা মামলা করে। এরপর গত মঙ্গলবার (সতেরো অক্টোবর) কেরালা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বিসিসিআই‘য়ের পক্ষে রায় দিয়ে নির্বাসনের সাজা বলবৎ রাখতে বলে। তারপরেই শ্রীসন্থ ট্য়ুইটারে তাঁর ক্ষোভ উগরে দেন চেন্নাই সুপার কিংস ও রাজস্থান রয়্য়ালসের নাম নিয়ে।
এরপর গত শুক্রবার শ্রী মিডিয়াতে বিসিসিআই সম্পর্কে আরও ক্ষোভ উগরে দেন। দুবাইতে একটি ইভেন্টে উপস্থিত হয়ে ক্রিকেট খেলার জন্য় দেশ ছাড়ার কথা বলেন তিনি। ”বিসিসিআই আমার ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে, আইসিসি নয়। যদি ভারতে খেলতে না পারি, তাহলে অন্য় দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলব। আমার এখন চৌঁত্রিশ বছর বয়স। এখনও ছ‘বছর ক্রিকেট খেলতে পারব। আমি মানুষ হিসেবে ক্রিকেটকে ভালোবাসি। তাই ক্রিকেট খেলতে চাই।” এরপর বিসিসিআই‘কে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বলে উল্লেখ করে শ্রী বলেন, ”বিসিসিআই ভারত সরকারের কোনও প্রতিষ্ঠান নয়। সম্পূর্ণ স্বশাসিত সংস্থা। আমরাই বিসিসিআই‘য়ের দলকে ভারতীয় দল বলি। কিন্তু, সবাই জানে বিসিসিআই একটি বেসরকারি সংস্থা।”
শ্রীসন্থের এই বক্তব্য়ের পর বোর্ডও ছেড়ে কথা বলার পাত্র নয়। বিসিসিআই সচিব অমিতাভ চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেন, ”শ্রীসন্থ বাজে বকছে। অন্য় দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলার কথা যেটা বলেছে, সব ফাঁপা কথা। ওর কথায় কোনও দম নেই।” বোর্ড সচিবের এই কথা বলার কারণও রয়েছে। বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা আইসিসি‘র নিয়ম-কানুনেই বলা আছে, কোনও পূর্ণ সদস্য় সংস্থার বোর্ড তাদের কোনও ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে নির্বাসন জারি করলে, সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটার অন্য় কোনও পূর্ণ সদস্য় দেশের বোর্ড বা অন্য় কোনও অ্য়াসোসিয়েশনের হয়ে ক্রিকেট খেলতে পারবে না। সেই সঙ্গে বিসিসিআই সচিব পাল্টা হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন শ্রীসন্থকে এই বলে যে বিসিসিআই সব আইনি ব্য়াপার সম্পর্কে ওয়াকিবহাল।