Yash Dubey: এবার রঞ্জি ট্রফির আঙিনায় একটা অন্যরকম দৃশ্য দেখা গেল। অনেককেই মনে করেছিলে এই কাজটা করে দেখানো মোটেও খুব সহজ হবে না। কারণ, প্রতিপক্ষ ছিল বিরাট শক্তিশালী। তবে এবার সেই অসাধ্যসাধন করে দেখিয়েছে মধ্যপ্রদেশের ক্রিকেট দল। ৬৭ বছরের ইতিহাসে এই প্রথমবার মধ্যপ্রদেশ রঞ্জি ট্রফি জিতে নিল। ৪১ বারের চ্যাম্পিয়ন মুম্বাইকে হারিয়ে তারা এই মহামূল্যবান ট্রফি জিতে নিয়েছে। তাই বলা যেতেই পারে এই সাফল্য মধ্যপ্রদেশের জন্য ঐতিহাসিকও বটে। এই দিনটা দেখার জন্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে তাদের।
রঞ্জি জয়ের পথে মধ্যপ্রদেশের প্রতিটা ক্রিকেটারের অবদান রয়েছে। তবে কোন সন্দেহ নেই এই গুরুত্বপূর্ণ সাফল্যের পিছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান যশ দুবে। গোটা ফাইনাল ম্যাচ জুড়ে ব্যাট হাতে মুম্বাইয়ের বিরুদ্ধে অতিমানব হয়ে ওঠেন তিনি। ফাইনালের লড়াইয়ে ১৩৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন তিনি। শুধু তাই নয়, চলতি মরশুমে মধ্যপ্রদেশ দলের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও হন তিনি। তবে এই জায়গায় পৌঁছোতে যশ দুবেকে প্রচুর লড়াই করতে হয়েছে করতে হয়েছে।
যশ দুবের জীবন যেন লড়াইয়ের প্রতিচ্ছবি
মধ্যপ্রদেশের রঞ্জি ট্রফি জেতার পর এই মুহুর্তে যার নাম সবার মুখে মুখে তিনি হলেন যশ দুবে। বিশেষ করে নির্বাচকরা, যারা প্রতিনিয়ত তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হচ্ছেন। তবে কেরিয়ারের শুরুতে চিত্রটা এমন ছিল না। তার জীবনে একটা সময় ছিল যখন নির্বাচকরা তাকে দলে জায়গা করে দিতে দ্বিধা করতেন। কারণ তার দৃষ্টিশক্তি দুর্বল ছিল। যশ দুবে চশমা পরতেন, এর পাশাপাশি শৈশবেও তাকে অনেক সমস্যা মোকাবিআ করতে হয়েছে। তার ছোটবেলার কোচ শৈলেশ শুক্লা নিজেই দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সাথে এই বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন।
নির্বাচকরা যশ দুবেকে উপেক্ষা করতেন
চোখের সমস্যা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে শৈলেশ শুক্লা বলেন, “যশ দুবে যখন আট বা নয় বছর বয়সে ভোপালে আমার ক্রিকেট একাডেমিতে যোগ দেন। কয়েক বছর পরে, তার পড়তে অসুবিধা হচ্ছিল। তারপরে একজন চক্ষু চিকিৎসক তাকে চশমা পরার পরামর্শ দেন। দৃষ্টিশক্তিকে ব্যাটসম্যানের সবচেয়ে বড় শক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তাই নির্বাচকরা তাকে নির্বাচন করতে দ্বিধায় ছিলেন। তাদের মত ছিল, চশমা পড়ে ব্যট করতে অসুবিধার মুখে পড়তে হতে পারে।”
এই নিয়ে আরও কথা বলতে গিয়ে শৈলেশ শুক্লা জানান, “নির্বাচকদের বোঝানো কঠিন ছিল। এই বিষয়গুলো তার জন্য দীর্ঘ সময় সমস্যা হয়ে রয়ে যায়। কিন্তু, দুবে হাল ছাড়েননি এবং লড়াই চালিয়ে যান। ক্রিকেটার হিসেবে উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে তিনি কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার শুরু করেন। দলে সুযোগ পাওয়ার পর আবশ্য নিজেকে প্রমাণ করে দিয়েছে সে।”
দুবের রঞ্জি কেরিয়ার যথেষ্ট উজ্জ্বল
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যশ দুবে তার প্রতিটি ক্রিকেটীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে প্রমাণ করেন যে যদি কেউ কিছু করার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়, তবে কঠোর পরিশ্রম অবশ্যই ফল দেয়। অবশেষে দুবের সঙ্গেও ড়িক সেটাই ঘটেছে। চলতি রঞ্জি ট্রফি মরশুমে মধ্যপ্রদেশের হয়ে খেলে এই ব্যাটসম্যান ১০ ইনিংসে ৭৬.৭৫ গড়ে ৬১৪ রান করেছেন। ব্যাট হাতে নজর কাড়া যশ দুবে ২০১৮ সালে প্রথম শ্রেণিতে অভিষেক করেছিলেন। এখনও পর্যন্ত তিনি ২২টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ১৪৭৩ রান করেছেন এবং আশা করা হচ্ছে যে খুবই তাড়াতাড়ি তাকে টিম ইন্ডিয়ার হয়েও খেলতে দেখা যাবে। দুবের ফর্ম কিন্তু সেই কথাই বলছে।