WTC Final: টেস্ট বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের (WTC) ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি ভারত। টসে জিতে প্রথমে প্রতিপক্ষকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। সেই সিদ্ধান্তই ব্যুমেরাং হয়ে আসে। প্রথম ইনিংসে স্টিভ স্মিথ, ট্র্যাভিস হেডের জোড়া শতরানের দাপটে ৪৬৯ রান তোলে অস্ট্রেলিয়া। জবাবে বেশ নড়বড়ে লেগেছিলো ভারতীয় টপ-অর্ডারকে। রাহানে, জাদেজা, শার্দুলের লড়াই ভারতকে ফলো-অনের হাত থেকে বাঁচালেও ব্যাগি গ্রিন বাহিনীর রানের আশেপাশেও পৌঁছে দিতে পারে নি। ২৯৬ রানে শেষ হয় ‘টিম ইন্ডিয়া’র প্রথম ইনিংস। অজিদের তুলনায় ১৭৩ রানে পিছিয়ে পড়ে তারা।
দ্বিতীয় ইনিংসে বল হাতে বরং অনেকটা সপ্রতিভ লেগেছে ভারতকে। সিরাজ-শামি-উমেশ, উইকেট পেয়েছেন সকলেই। ৩ উইকেট পান রবীন্দ্র জাদেজাও। লাবুশেনের ৪১ এবং অ্যালেক্স ক্যারির অপরাজিত ৬৬ রানের ইনিংস তাদের স্কোরবোর্ডকে সচল রাখে আজ। চতুর্থ দিনে ২৭০ রানের মাথায় ডিক্লেয়ার করে তারা। ভারতের সামনে জয়ের জন্য লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪৪৪ রান। ওভালের ইতিহাস বলছে ২৬৩ রানের বেশী এখানে চতুর্থ ইনিংসে তাড়া করে কেউ জেতে নি। প্রায় অসম্ভব কাজটাই জিততে গেলে করতে হবে ভারতকে। এই পরিস্থিতিতে মরণপণ ব্যাটিং ছাড়া জয়ের কোনো রাস্তা খোলা নেই ভারতের সামনে। প্রথম ইনিংসের যাবতীয় ভুলত্রুটি শুধরে নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে মরিয়া হয়ে জয়ের লক্ষ্যে ঝাঁপাবে ভারত। এমনটাই আশা করেছিলেন সমর্থকেরা। চেষ্টাও করেছিলেন দুই ওপেনার রোহিত শর্মা এবং শুভমান গিল। কিন্তু এক বিতর্কিত ক্যাচে জুটি ভাঙে আজ। ফেরেন শুভমান। তৃতীয় আম্পায়ার রিচার্ড কেটেলবরো’র সিদ্ধান্তে ক্ষোভের আগুন ছড়িয়েছে ওভালের গ্যালারিতে। সেই আঁচ এসে পড়লো ক্যামেরন গ্রিনের গায়ে।
Read More: WTC Final: কোহলি ও রাহানের ব্যাটেই আশা বেঁচে ভারতের, শেষ দিকে অপেক্ষা করে আছে কঠিন পরীক্ষা !!
ক্লার্কের স্মৃতি ফিরিয়ে বিক্ষোভের মুখে গ্রিন-

২০০৮ সাল, সিডনি টেস্টে মুখোমুখি ভারত এবং অস্ট্রেলিয়া। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ব্যাটের কোণায় বল লেগে স্লিপে দাঁড়ানো মাইকেল ক্লার্কের হাতে জমা পড়ে বল। অন্তত অজি শিবিরের তরফ থেকে দাবী করা হয় তেমনটাই। রিপ্লেতে যদিও দেখা যায় ক্যাচ ধরার সময় ক্লার্কের আঙুল বলের তলায় রয়েছে কিনা তা পরিষ্কার নয়। ক্রিকেটের নিয়মানুসারে বেনিফিট অফ দ্য ডাউট পাওয়ার কথা ছিলো সৌরভের। কিন্তু তা হয় নি সেইদিন। আম্পায়ার ছন্দে থাকা সৌরভকে সাজঘরে ফেরার নির্দেশ দেন। দেড় দশক পর সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি আজ দেখা গেলো ওভালের মাঠে। সেদিন আউট হয়েছিলেন সৌরভ, আজ দুর্ভাগ্যের বশে বাইশ গজ ত্যাগ করতে হলো শুভমান গিলকে।
অষ্টম ওভারের প্রথম বলটি পিচে পড়ে বেশ খানিকটা লাফিয়ে উঠেছিলো। স্কট বোল্যান্ডের ডেলিভারিটি থেকে অতিরিক্ত বাউন্স আশা করেন নি শুভমান। ফলে খেলতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন। গালিতে দাঁড়ানো ক্যামেরন গ্রিন সামনের দিকে বেশ খানিকটা ঝাঁপিয়ে ক্যাচ ধরেন। তবে তিনি বলটি আদৌ সঠিকভাভবে তালুবন্দী করেছিলেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশে থেকেই যায়। সঠিক সময় তাঁর আঙুল বলের নীচে এসেছিলো কিনা দীর্ঘ সময় রিপ্লে দেখেও তা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছিলো স্বয়ং তৃতীয় আম্পায়ারের। শেষমেশ রিচার্ড কেটেলবরো অস্ট্রেলিয়ার পক্ষেই সিদ্ধান্ত দিলেন আজ। ১৯ বলে ১৮ রান করে ফিরতে হলো শুভমানকে। এই সিদ্ধান্তের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে ক্রিকেটমহল থেকে। প্রাক্তন ভারতীয় ওপেনার বীরেন্দ্র শেহবাগ ট্যুইট করে প্রতিবাদ করেছেন। এমনকি ধারাভাষ্যের মাইক হাতে রবি শাস্ত্রী বলেই ফেলেন, “ব্যাটারের নাম স্টিভ স্মিথ হলে এটা আউট হত না।” বিতর্কিত ক্যাচে উইকেট নিয়ে ওভাল গ্যালারির ভারতীয় সমর্থকদের রোষানলে ক্যামেরন গ্রিন। তিনি যখন বল করতে এলেন গোটা মাঠ ধ্বনিত হলো ‘চিট’ ‘চিট’ স্লোগানে। অর্থাৎ প্রতারক অপবাদ শুনতে হলো তরুণ অস্ট্রেলীয় অলরাউন্ডারকে।