আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শুরু ১ আগষ্ট ২০১৯ এ হয়েছিল। অ্যাসেজ এর প্রথম টেস্ট আর জো রুটের নেতৃত্বাধীন ইংলিশ দলের সামনে ছিল নতুন টেস্ট অধিনায়ক টিম পেনের সঙ্গে নামা অস্ট্রেলিয়া দল। পুরো ক্রিকেট জগতে একটাই আলোচনা ছিল যে ফটাফট ক্রিকেটের যুগে টেস্ট ক্রিকেটকে বাঁচানোর উদ্দেশ্যে শুরু হওয়া এই চ্যাম্পিয়নশিপ সফল হবে কি না।
এই টুর্নামেন্টের ব্যাপারে সবচেয়ে প্রথম টেস্ট সিরিজ হিসেবে অস্ট্রেলিয়া আর ইংল্যান্ডের মধ্যে খেলা হওয়া অ্যাসেজ সিরিজই ছিল। বিশ্বের দুই সেরা দলের মধ্যে ২-২ ফলাফলে শেষ হওয়া এই সিরিজ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপকে সফলতা আর রোমাঞ্চের এক নতুন আশা জাগিয়েছিল। এরপর আলাদা আলদা দলের মধ্যে খেলা হওয়া টেস্ট সিরিজ ভীষণই রোমাঞ্চকর আর আর আলাদা স্তরেরই ক্রিকেট দেখতে পাওয়া গিয়েছিল।
তা সে গত বছরের শেষে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে খেলা হওয়া বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি হোক বা তারপর কিছদিন পরে ভারত আর ইংল্যান্ডের মধ্যে খেলা হওয়া টেস্ট সিরিজই হোক, প্রত্যেকবারই ক্রিকেট রোমাঞ্চ নিজের চরমে ছিল। কিন্তু এত কিছু হওয়ার পরও কি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপকে বিশ্বকাপের মতো জনপ্রিয় এনে দিতে কিছু পরিবর্তনের প্রয়োজন? সেটা নিয়েই আলোচনা করা প্রয়োজন।
৩ থেকে ৫ ম্যাচের সিরিজে হোক ফাইনালের ফলাফল
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের বর্তমান ফর্ম্যাটে যে ফাইনাল ম্যাচ দিয়ে টুর্নামেন্টের বিজয়ী দলের সিদ্ধান্ত হবে সেটা কেবল একটাই টেস্ট ম্যাচের হবে। যা ১৮থেকে ২২ জুনের মধ্যে ইংল্যান্ডের সাউথহ্যাম্পটনে খেলা হবে। তবে এর আগে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে যতগুলো সিরিজে হয়ে সেটা ২বা তার বেশি ম্যাচের ছিল।
কিন্তু সমস্ত ক্রিকেট এক্সপার্ট আর ক্রিকেট ফ্যানেরদের এটাই মত যে আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের মতো এত বড়ো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের ফাইনাল আর জয়ীর সিদ্ধান্ত কেবল একটি টেস্ট ম্যাচ দিয়ে হওয়া একটা ভালো সিদ্ধান্ত নয় আর এতে ম্যাচের ফলাফলহীন থাকার সম্ভবনাও অনেক বেশি।
এই কারণে ক্রিকেটকে চালানা করা সবচেয়ে উচ্চস্তরীয় গর্ভনিং বড আইসিসিকে এই ব্যাপারে ভাবতে হবে যে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের জন্য ৩ বা তার চেয়ে বেশি ম্যাচের একটি সিরিজের আয়োজন করা উচিত।
পয়েন্টস টেবিলের টপ দল পাক হোম অ্যাডভান্টেজ
আসলে ফাইনাল ম্যাচ খেলা ভারত আর নিউজিল্যান্ড দুই দলের জন্য এটা বেশি আয়ত্ত্বে থাকবে না ইংল্যান্ডের সাউথহ্যাম্পটন দুই দলের জন্যই বিদেশী পরিবেশের মাঠ। এই কারনে দুজনের মধ্যে কোনো দলই ঘরোয়া পরিবেশের ফায়দা পাবে না।
এই দিক দিয়ে আইসিসির এই ব্যাপারে ভেবে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত যে যে দল পুরো বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শেষে ফাইনালের আগে শীর্ষে থাকবে তাকে ঘরোয়া পরিস্থিতির ফায়দা দেওয়া হোক। এর বড় বেনিফিট এটাই হবে যে সমস্ত দলের মধ্যে শীর্ষে বজায় থাকার জন্য একটা কড়া প্রতিদ্বন্ধীতা দেখতে পাওয়া যাবে।
দলের যা খুশি করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ঠিক করতে হবে নিশ্চিত শিডিউল
চ্যাম্পিয়নশিপের গত ২ বছরে সমস্ত দল যে টেস্ট সিরিজ খেলেছে তার শিডিউল আর সম্পূর্ণ রূপরেখা সেখানের ক্রিকেট বোর্ড প্রস্তুত করেছে। এর মধ্যে বেশকিছু ক্রিকেট বোর্ড নিজেদের দলের জন্য নিজেদের হিসেবে কমজুরি দলের বিরুদ্ধে সিরিজ ঠিক করেছিল। যার পর তারা সহজেই জয়ও হাসিল করে নিয়েছে।
এই কারণে পয়েন্টস টেবিলে অন্য মজবুত দলগুলি এই ব্যাপারে যথেষ্ট লোকসানের মুখে পড়েছে। এই দিক দিয়ে আইসিসিকে এমন একটা প্যাটার্ন তৈরি করতে হবে যাতে দলগুলির মধ্যে ম্যাচগুলি নিয়ে এটা ঠিক করা যেতে পারে যে আইসিসি আন্তর্জাতিক টেস্ট র্যা ঙ্কিংয়ে কোন স্থানে থাকা দল কোন নম্বরে থাকা দলের সঙ্গে সিরিজ খেলবে। এই প্রক্রিয়ায় টেস্ট ক্রিকেটে রোমাঞ্চ আরও বাড়বে।