হার দিয়ে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ শুরু করেছিলো ভারতীয় দল (IND vs ENG)। লিডসের হেডিংলেতে পঞ্চম দিনের বোলিং ব্যর্থতায় পাঁচ উইকেটের ব্যবধানে হারতে হয় তাদের। এরপর এজবাস্টনে ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন শুভমান গিলেরা। অধিনায়কের অনবদ্য ব্যাটিং ও সিরাজ-আকাশ দীপের বোলিং বিক্রমের সৌজন্যে তারা জেতে ৩৩৬ রানের বিশাল ব্যবধানে। তবে সেই সাফল্যের রেশ থাকে নি বেশীদিন। লর্ডসে ফের ব্যর্থতাই সঙ্গী হয় টিম ইন্ডিয়ার। চতুর্থ ইনিংসে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ছিলো ১৯৩ রান। কিন্তু ১৭০-এর বেশী এগোতে পারেন নি যশস্বী জয়সওয়াল, শুভমান গিল’রা। কাজে আসে নি রবীন্দ্র জাদেজার মরিয়া অর্ধশতক’ও। তিন ম্যাচের শেষে ২-১ ফলে পিছিয়ে ‘মেন ইন ব্লু।’ ওল্ড ট্র্যাফোর্ড ও ওভালে দু’টি টেস্ট (IND vs ENG) বাকি রয়েছে এখনও। তার আগে ভারতীয় স্কোয়াডে তিন ক্রিকেটারের উপস্থিতি অস্বস্তিতে রাখছে সমর্থকদের।
Read More: গম্ভীরের অপছন্দের তালিকায় এই ক্রিকেটার, ফর্মে থাকা সত্ত্বেও পাচ্ছেন না সুযোগ !!
করুণ নায়ার-

২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়া সিরিজের পর ভারতীয় দল থেকে বাদ পড়েছিলেন করুণ নায়ার (Karun Nair)। ২০২৪-২৫ মরসুমে ঘরোয়া ক্রিকেটের আসরে অনবদ্য প্রদর্শনের সৌজন্যে ৮ বছর পর তাঁকে আন্তর্জাতিক আঙিনায় ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো বিসিসিআই। প্রচুর প্রত্যাশা ছিলো কর্ণাটকের ব্যাটারকে নিয়ে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে (IND vs ENG) চূড়ান্ত হতাশই করেছেন তিনি। প্রথম ম্যাচে করুণকে খেলানো হয়েছিলো ছয় নম্বরে। লোয়ার অর্ডারে নেমে দুই ইনিংসে করেন যথাক্রমে ০ ও ২০। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আউট হয়ে চাপ বাড়িয়েছিলেন ভারতের। এজবাস্টনে পছন্দের তিন নম্বরে ব্যাটিং-এর সুযোগ দেওয়া হয় তাঁকে। করুণের ব্যাট থেকে এসেছিলো মাত্র ৩১ ও ২৬। এরপর লর্ডসেও ৪০ ও ১৪-এর বেশী এগোতে পারেন নি তিনি। করুণকে বাদ দিয়ে বাকি দুই ম্যাচে সাই সুদর্শন বা অভিমন্যু ঈশ্বরণকে সুযোগ দেওয়ার দাবী উঠছে লর্ডসের হারের পর।
প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা-

জসপ্রীত বুমরাহ, আকাশ দীপ, মহম্মদ সিরাজ’রা এখনও অবধি যথেষ্ট ভালো পারফর্ম্যান্স করেছেন চলতি অ্যান্ডারসন-তেন্ডুলকর সিরিজে। ব্যতিক্রম প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা (Prasidh Krishna)। লিডস ও এজবাস্টনে তৃতীয় পেসার হিসেবে খেলানো হয়েছিলো তাঁকে। বিন্দুমাত্র দাগ কাটতে পারেন নি কর্ণাটকের ক্রিকেটার। হেডিংলেতে দুই ইনিংসে যথাক্রমে ১২৮ ও ৯২ রান খরচ করেছিলেন তিনি। পেয়েছিলেন মোট ৫ টি উইকেট। এজবাস্টনেও তাঁর পরিসংখ্যান আহামরি ছিলো না। প্রথম ইনিংসে ৭২ রান খরচ করেও কোনো উইকেট পান নি। আর দ্বিতীয় ইনিংসে ১টি উইকেট পেলেও তাঁকে খরচ করতে হয়েছিলো ৩৯ রান। অফ ফর্মে থাকা প্রসিদ্ধকে বয়ে বেড়ানো যে দলের পক্ষে বিশেষ সুখকর নয় তা এজবাস্টন টেস্টের (IND vs ENG) পর বুঝতে পেরেছেন গৌতম গম্ভীর। লর্ডসে ছেঁটে ফেলা হয় তাঁকে। সিরিজের বাকি ম্যাচগুলিতেও তাঁর খেলার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।
শার্দুল ঠাকুর-

তালিকায় তৃতীয় নামটি হতে পারে শার্দুল ঠাকুরের (Shardul Thakur)। মুম্বইয়ের হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে তাঁর ধারাবাহিক পারফর্ম্যান্স ও ভারত-এ’র হয়ে টিম ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে আন্তঃস্কোয়াড ম্যাচে অনবদ্য সেঞ্চুরির জোরে হেডিংলে টেস্টের একাদশে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু লিডসের বাইশ গজে চোখে পড়ে নি তাঁর ব্যাঘ্রবিক্রম। প্রথম ইনিংসে বল হাতে একটিও সাফল্য পান নি শার্দুল। বরং খরচ করেন ৩৮ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে পরপর দুই বলে অলি পোপ ও হ্যারি ব্রুক’কে ফিরিয়েছিলেন বটে। কিন্তু চাপ ধরে রাখতে পারেন নি প্রতিপক্ষের উপর। শেষমেশ ৫১ রান খরচ করে বসেন। লোয়ার অর্ডারে ব্যাট হাতে চূড়ান্ত হতাশ করেহেন শার্দুল। কঠিন সময়ে কোনো রকম প্রতিরোধ গড়া তো দূরে কথা বরং ১ ও ৪ করে ফেরেন সাজঘরে। তাঁকে হেডিংলে টেস্টের পরেই বাদ দিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। সুযোগ পেয়েছেন নীতিশ কুমার রেড্ডি।
এক নজরে ভারতের স্কোয়াড-
শুভমান গিল (অধিনায়ক), ঋষভ পন্থ (উইকেটরক্ষক/সহ-অধিনায়ক), ধ্রুব জুরেল (উইকেটরক্ষক), যশস্বী জয়সওয়াল, করুণ নায়ার, সাই সুদর্শন, অভিমন্যু ঈশ্বরণ, ওয়াশিংটন সুন্দর, কে এল রাহুল, রবীন্দ্র জাদেজা, নীতিশ কুমার রেড্ডি, শার্দুল ঠাকুর, আকাশ দীপ, আর্শদীপ সিং, কুলদীপ যাদব, মহম্মদ সিরাজ, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা, জসপ্রীত বুমরাহ।