ভারতীয় দলের হেড কোচ হওয়ার পর রবি শাস্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, ২০১৯ বিশ্বকাপ দিকে লক্ষ্য় রেখে এগোবেন তিনি। যে ক্রিকেটার ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করতে পারবেন না, তাঁর জায়গা হবে না বিশ্বকাপ যাওয়ার দলে। হাতে আর বেশি সময়ও নেই। তাই পরবর্তী বিশ্বকাপের জন্য় একটা শক্তপোক্ত টিম তৈরি করে নিতে চান শাস্ত্রী। কারণ, যত তাড়াতাড়ি সম্ভাব্য় টিম তৈরি করে ফেলতে পারবেন কোচ এবং অধিনায়ক, বিশ্বকাপের আগে ক্রিকেটারদের ততটা বেশি সময় দেওয়া যাবে নিজেদের মধ্য়ে বোঝাপড়া গড়ে তোলার জন্য়।
বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, অধিনায়ক বিরাট কোহলি ইতিমধ্য়েই কোচের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করে নিয়েছেন, কাকে কাকে বিশ্বকাপে সুযোগ দেওয়া যেতে পারে! কোন কোন সিনিয়র ক্রিকেটারের ওপর নজর রাখা হবে, তাও ঠিক হয়ে গিয়েছে। যদিও দলের দুই সিনিয়র ক্রিকেটারকে নিয়ে যখন প্রশ্ন করা হয়েছিল, তখন সোজাসুজি উত্তর না দিয়ে বিষয়টা এড়িয়ে যান শাস্ত্রী। বলেন, উপযুক্ত সময় এলেই সবকিছু জানা যাবে। সর্তকতা অবলম্বনটাও স্বাভাবিক। এনিয়ে সন্দেই নেই, যুবী এবং ধোনি – একদিনের ক্রিকেটে ভারতের সর্বকালের সেরা ম্য়াচ ফিনিশার। এই দু’জনকে দুম করে বাদ দিয়ে বসার পর ভারত যদি হোঁচট খায়, তাহলে ফ্য়ানেরা মুন্ডপাত করবে কোচের।
ধোনিকে ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত ভারতীয় দলে রাখার যুক্তি ও কারণ, দু’টিই রয়েছে। ধোনি ভারতকে তিনটি আইসিসি ট্রফি এনে দিয়েছেন, যা বিশ্ব ক্রিকেটে আর কোনও অধিনায়ক করে দেখাতে পারেননি। তরুণ দলকে বিশ্বকাপের মতো মেগা ইভেন্টে গাইড করতে পারবেন ধোনি। বিরাটকে এখনও তাঁর কাছ থেকে পরামর্শ নিতে দেখা যায়। তাছাড়া, উইকেটের পেছনে ধোনি এখনও বিশ্বের অন্য়তম সেরা উইকেটকিপার। কিন্তু, যুবরাজ সিং? ২০১১ বিশ্বকাপের ম্য়ান অফ দ্য় সিরিজ যুবী এখন তাঁর কেরিয়ারের পড়ন্ত বেলায়। ব্য়াটে রান নেই, বলে সেই ধার নেই। ফিল্ডিংয়েও তাঁর সেই বিদ্য়ুৎ গতি কমেছে। রিফলেক্সও নেই আগের মতো। পারফর্ম না করতে পারলে, তাঁর মতো একজন বুড়ো ক্রিকেটারকে খেলিয়ে যাওয়ার পেছনে কোনও যুক্তি হয় না।
আবার যুবরাজের মতো ম্য়াচ উইনার ও ফাইটারকে চট করে বাদ দেওয়া যায় না। অতীতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ম্য়াচ ভারতকে জিতিয়েছেন তিনি। অভিজ্ঞতা কম নয়। যতবার দল থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন, প্রতিবারই যোগ্য়তা দেখিয়ে কামব্য়াক করেছেন। এবছরের গোড়াতে ইংল্য়ান্ডের বিরুদ্ধ একদিনের সিরিজে ১৫০ রানের একটি ইনিংস খেলে দেখিয়ে দিয়েছেন সেঞ্চুরি করার ক্ষমতা তাঁর এখনও রয়েছে। তারপর আইসিসি চ্য়াম্পিয়ন্স ট্রফি ২০১৭’র প্রথম ম্য়াচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুবীর ৩২ বলে ৫৩ রান ভারতকে ম্য়াচ জিততে সাহায্য় করে। ফাইনালেও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুবরাজ লড়াই করে যান আউট হওয়ার আগে। এই বয়সে কামব্য়াক করার পর ১১টি ম্য়াচে তাঁর গড় ৪১.৩৩। স্ট্রাইক-রেট ৯৮.৬৭। ফলে যুবরাজকে ছেঁটে ফেলা সহজ হবে না।
এটাও সত্য়ি, যুবী মিডল অর্ডার ব্য়াটসম্য়ান হিসেবে ক্রিকেট কেরিয়ারের স্পিন বলই বেশি খেলেছেন। কিন্তু, ইদানিং স্পিন বল খেলতে গিয়ে দোনামনা করছেন তিনি। কোনটা ছাড়বেন, কোনটা মারবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না। বোঝাই যাচ্ছে, বসয় হয়েছে। এখনও কেরিয়ার গড়ার পরিবর্তে, দলে জায়গা বাঁচানো লক্ষ্য় হয়ে গিয়েছে তাঁর। তবে, ক্রিকেট বোদ্ধাদের মতে শ্রীলঙ্কা সফরে যুবীকে যদি সুযোগ দেওয়া হয় এবং তিনি যদি নিজের সুনামের প্রতি বিচার না করতে পারেন, তাহলে এটাই তাঁর কেরিয়ারের শেষ সিরিজ হতে পারে। এখানেই ইতি পড়ে যেতে পারে ভারতের এই স্টার অলরাউন্ডারের কেরিয়ারে।