নিজের দেশের মাটিতে নয়। এ একেবারে বিদেশ। শক্তি বাড়িয়ে বাঘ যে এভাবে হানা দেবে তাঁদের দেশে তা ভাবতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। কাজেই এই আক্রমন সামলাতে প্রস্তুতও ছিলেন না তাঁরা। মঙ্গলবার যা ঘটল, তা চোখকে মাথায় তুলল রীতিমত।
শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের একদিনের সিরিজ চলছে। তারই খেলা চলছিল এদিন। হঠাই বাঘের তান্ডবে কুপোকাত শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যানরা। এ আবার যে সে বাঘ নয়, একেবারে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। না, তবে এই হানায় কোনও প্রাণহানি হয়নি বা হওয়ার আশঙ্কাও ছিল না। তবে ক্রিকেট শ্রীলঙ্কার মানহানি হয়েছে বলাই চলে। শ্রীলঙ্কার ইনিংসের ফাইনাল ওভারে বল করতে আসেন তাসকিন আহমেদ। বাংলাদেশের এই ফাস্ট বোলার বাঘের থেকে কম কিছু নয়। কারণ প্রতিনিয়ত ১৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টার কাছাকাছি বল করতে সক্ষম এই বোলার। কখনও কখনও তা ১৪০ এর উপরেও চলে যায়। বাংলাদেশের এই বোলার শেষ ওভারে এসে তিনটি উইকেট নিয়ে করলেন হ্যাটট্রিক। যা বাংলাদেশের একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইতিহাসে এর আগে চার বার হয়েছিল।
এই তরুণ তুর্কী প্রথমেই একটা ফুল লেন্থ ডেলিভারিতে প্যাভিলিয়নে পাঠায় শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যান আসেলা গুণরত্নকে। মিড অফের দিক দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দিয়ে বসেন তিনি। তাসকিনের পরের শিকার হয় সুরঙ্গ লাকমল। একটা সাধারণ ফুলটস বলের সম্পূর্ণ ফায়দা তুলতে গিয়ে সোজা চালিয়ে দেয় লাকমল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত অসাধারণ ক্যাচ নিয়ে মুস্তাফিজুর রহমান তাঁকে সাজঘরে পাঠায়। তাসকিনের ক্রিকেটীয় জীবনে এরপরেই আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। অসাধারণ একটা ইয়র্কারে ছিটকে দেন নুয়ান প্রদীপের স্টাম্প। সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশের হয়ে রচনা করে ফেলেন এক ইতিহাস। কারণ তাসকিন দ্বিতীয় বোলার যিনি বিদেশের মাটিতে হ্যাটট্রিক করলেন। এর আগে শাহদাদ হুসেন হারারেতে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে খেলে হ্যাটট্রিক করেছিলেন।
একদিনের ক্রিকেট ইতিহাসে মোট ৪১ বার হ্যাটট্রিক হয়েছিল। তারমধ্যে বাংলাদেশের ঝুলিতে এল মোট ৫টি হ্যাটট্রিক। তাসকিন ও শাহদাদ ছাড়া, আবদুল রজ্জাক, রুবেল হুসেন ও তাইজুল ইসলামও হ্যাটট্রিক করেন। বাকি এই তিনটি হ্যাটট্রিকই হয় ঢাকার শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে।
সিরিজের এই দ্বিতীয় একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে টস জিতে শ্রীলঙ্কা ব্যাট করতে নেমে ৩১১ রান তোলে ৪৯.৫ ওভারে। মূলত ব্যাটিং সহায়ক পিচে অধিনায়ক উপুল থারাঙ্গা ৬৫ এবং কুশল মেন্ডিস ১০২ রান করেন। তবে বৃষ্টির জন্য ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা সম্ভবপর হয়নি বলে ম্যাচটি অমীমাংসিত থেকে যায়। ৩-ম্যাচের একদিনের আন্তর্জাতিক সিরিজের প্রথম দুটি ম্যাচের শেষে বাংলাদেশ ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে।