ঘরের মাঠে ভারত-ইংল্যান্ডের ওয়ান ডে ম্যাচ আয়োজন করার তখন জোর তোড়জোড়। ঠিক তখনই সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে তাঁর বাড়ির ঠিকানায় উড়ে আসে একটা খুনের হুমকি চিঠি।সেটাও আবার পাশের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিকেট প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে যোগ দিলে মহারাজকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয় সেই চিঠিতে। হুমকি চিঠি পাওয়ার পর পুলিশ প্রশাসনের পরামর্শে সেবারের মতো সেই অনুষ্ঠানে যোগ দেননি সিএবি প্রেসিডেন্ট। তবে বাংলার ক্রিকেটের উন্নয়নের স্বার্থে এবারে সেই আতঙ্কের চাঁদর থেকে বেরিয়ে নির্ভীক প্রিন্স অফ ক্যালকাটা সরাসরি পৌঁছে গেলেন সেই মেদিনীপুরে। নিজের প্রিয় জেলার প্রধান শহরের অরবিন্দ স্টেডিয়ামে উপস্থিত হয়ে তিনি উদ্বোধন করলেন জগমোহন ডালমিয়া ক্রিকেট কোচিং সেন্টার সহ ইন্ডোর স্টেডিয়াম। স্টেডিয়াম সংলগ্ন একটি ডর্মিটরি তৈরির কথাও ঘোষণা করেন মহারাজ। সেখানে তিনি বলেন, “সিএবি এখানে সমস্ত ধরণের সুযোগ সুবিধা দেবে ভালোমানের খেলোয়াড় পাওয়ার জন্য। জানি এই জেলায় প্রতিভার অভাব নেই। আমি চাই, মেদিনীপুর থেকে ভবিষ্যতে যেন আরও অনেক অশোক দিন্দা জাতীয় ক্রিকেটে উঠে আসে।”
পশ্চিম মেদিনীপুরের ডিস্ট্রিক স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে উদ্যোগ নিয়েছিল সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে দিয়ে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিকেট প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করানোর. একই সঙ্গে ওই জেলার ক্রীড়াক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য সৌরভের মাধ্যমে বেশ কিছু নতুন কর্মসূচী গ্রহণ করারও পরিকল্পনা ছিল তাদের। মহারাজ তাদেরকে সেই মতো কথাও দিয়েছিলেন সেখানে উপস্থিত হওয়ার। কিন্তু তার মধ্যিখানে হঠাৎ একটা উড়ো চিঠি এসে সবকিছু ওলোট পালোট করে দিয়ে যায়।
পরবর্তী সময়ে যে যুবক সৌরভকে খুনের হুমকি দিয়েছিল, মেদিনীপুর পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার হয়ে সে যুবক জানিয়েছিল, সৌরভের ওপর তার কোনও ক্ষোভ নেই। সে স্থানীয় এক রাজনৈতিক নেতা এবং সেই অনুষ্ঠানের অন্যতম আয়োজকের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এমন কাজটি করেছিল। তখনকার মতো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য সৌরভ পুলিশ প্রশাসনের পরামর্শে সেই সফর বাতিল করলেও, মঙ্গলবার তিনি সেখানে উপস্থিত হয়ে ক্রিকেটের স্বার্থে একাধিক প্রকল্প ঘোষণা করে গোটা মেদিনীপুরের মুখে হাসি ফুটিয়ে তুললেন।উল্লেখ্য, সৌরভ সহ সেই অনুষ্ঠানে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তাদের পাশাপাশি জেলা শাসক জগদীশ মিনা এবং জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ উপস্থিত ছিলেন।