পাকিস্তান ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক এবং অলরাউন্ডার শাহিদ আফ্রিদির কাশ্মীরের প্রতি প্রেম কারো কাছেই লুকোনো নেই। তিনি প্রায়ইদিনই কাশ্মীরিদের ভারতের বিরুদ্ধে উস্কে থাকেন। আরো একবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অপমান করে আফ্রিদি নরেন্দ্র মোদিকে ধর্মীয় রোগে সংক্রামিত বলে কাশ্মীরিদের মনে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে বিষ ঢালার চেষ্টা করেছেন। এরপরই ক্রিকেট জগত এবং অন্যরাও তাকে দারুণভাবে তিরস্কার করেছেন।
শাহিদ আফ্রিদির কেনো রয়েছে কাশ্মীরের প্রতি টান?
পাকিস্তানের প্রাক্তন অলরাউন্ডার এবং অধিনায়ক শাহিদ আফ্রিদিকে প্রায়ই কাশ্মীরের মানুষের প্রতি সহানুভূতি দেখাতে আর ভারতের হয়ে কাশ্মীরিদের মনে ভারতের প্রতি বিদ্বেষ তৈরি করতে দেখা যায়। আসলে এটা খোলসা হয়েছে যে শাহিদ আফ্রিদির এক খুড়তুতো ভাই জঙ্গী ছিলেন যাকে ২০০৩ এ কাশ্মীরের অনন্তনাগে ভারতীয় সেনাবাহিনী দ্বারা মেরে ফেলা হয়েছিল। বিএসএফ ১২ সেপ্টেম্বর ২০০৩ এ বয়ান দিয়েছিল যে সাকিব নামের একজন জঙ্গীকে কাশ্মীরের অন্তত নাগে মারা হয়। সেই জঙ্গীকে নিয়ে বিএসএফের ইনস্পেক্টর জেনারেল বিজয় রমণ এই বিষয়ে খোলসা করেছিলেন যে জঙ্গী সাকিব শাহিদ আফ্রিদির খুড়তুতো ভাই। তিনি বলেছিলেন যে সাকিব অনন্তনাগে ২ বছর ধরে অ্যাক্টিভ ছিলেন আর তিনি আফ্রিদির সঙ্গে থাকা সম্পর্ককে মানুষকে প্রভাবিত করতে ব্যবহার করতেন। খবরের মোতাবেক জানা গিয়েছে যে সাকিব অনন্তনাগে অ্যাক্টিভ জঙ্গী সংগঠন হরকত-উল আনসারের ব্যাটালিয়ান কমান্ডার ছিলেন।
আফ্রিদির কাশ্মীরের সঙ্গে রয়েছে আরো একটি কানেকশন
শাহিদ আফ্রিদি এক বা দুবার নয় বরং বেশ কয়েকবার কাশ্মীরি ভাইবোনের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছেন। এর একটি কারণ আমরা আপনাদের উপরে জানিয়েছি। কিন্তু আরো একটি কারণ রয়েছে আফ্রিদির কাশ্মীরের প্রতি টানের। আসলে যদি ইতিহাসের পাতা খুঁড়ে দেখা যায় তো জানা যাবে যে ১৯৪৭-১৯৪৮ সালে আফ্রিদি উপজাতিই কাশ্মীরের উপর হামলা করেছিল। সেই আক্রমণের কারণে কাশ্মীরের বিষয়টি জটিল হয়ে যায় আর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীর একটি ঝামেলা হিসেবে রয়ে যায়।
সাম্প্রতিক কী বয়ান দিয়েছেন আফ্রিদি?
শাহিদ আফ্রিদি রবিবার একটি ভিডিয়োতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে পাকিস্তানী সৈনিকদের বলেছেন,
“আমি আপনাদের মধ্যে আসতে পেরে খুশি। একটি অনেক বড়ো রোগ (করোনা ভাইরাস) বিশ্ব ছড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু এর চেয়েও বড়ো রোগ মোদির মনে মাথায় রয়েছে। এই রোগটি হলো ধর্মীয় রোগ। উনি ধর্মকে নিয়ে শাসন করছেন। বহু বছর ধরে কাশ্মীরে আমাদের ভাই-বোন আর বয়স্কদের উপর অত্যাচার ক্রছেন। ওনাকে এর জবাব দিতে হবে। যদিও মোদি সাহসী হওয়ার চেষ্টা করেন, কিন্তু উনি ভীতু। ছোটো কাশ্মীরের জন্য তিনি নিজের ৭ লাখ সেনা মোতায়েন করেছেন। অন্যদিকে পাকিস্তানের মোট সেনাই মাত্র ৭ লাখ। কিন্তু উনি এটা জানেন না যে পাকিস্তানী সেনার পেছনে তাদের ২২-২৩ কোটি মানুষ (পাকিস্তানের জনসংখ্যা) দাঁড়িয়ে রয়েছেন। কাশ্মীরেও যে মানুষেরা সেনাবাহিনীকে সমর্থন করছেন তাদের সেলাম করছি”।
প্রসঙ্গত আফ্রিদির এই বয়ানের পর ভারতীয় ক্রিকেট দলের সমস্ত তারকা শিখর ধবন, যুবরাজ সিং, হরভজন সিং, সুরেশ রায়না প্রভৃতিরা সোশ্যাল মিডিয়ায় আফ্রিদিকে তিরস্কার করেছেন আর আফ্রিদির ভাবনার প্রতি নিরাশা প্রকাশ করেছেন।