ভারতীয় দল সম্প্রতিই শেষ হওয়া অস্ট্রেলিয়া সফরে সমস্ত সমস্যা সত্তেও দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলে ২-১ ফলাফলে বর্ডার গাভাস্কার ট্রফিতে ঐতিহাসিক জয়লাভ করে। এই জয়ের দলের হয়ে বেশকিছু নতুন হিরো আর তরুণ তারকা সামনে উঠে আসেন। যা দেখে বলা যেতে পারে যে ভারতীয় দলের ভবিষ্যত সুরক্ষিত হাতে রয়েছে। অ্যাডিলেডে হওয়া প্রথম টেস্ট থেকে ব্রিসবেনে হওয়া শেষ টেস্ট অর্যন্ত ভারতীয় দলের প্রধান খেলোয়াড়রা চোট আঘাতে সংঘর্ষ করছিলেন। কিন্তু এর মধ্যে নতুন জাতের তরুণ ক্রিকেটাররা যেভাবে উৎসাহ দেখিয়েহেন তা সত্যিই প্রশংসাযোগ্য ছিল। এই নতুন হিরোদের মধ্যে একজন হলেন দিল্লির তরুণ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান ঋষভ পন্থ।
বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে ভারতের জয়ের হিরো থেকেছেন পন্থ
অস্ট্রেলিয়া সফরে পুরো টেস্ট সিরিজ চলাকালীন নিজের দুর্দান্ত ক্লাস আর দুর্দান্ত ক্রিকেট অ্যাটিটিউডে ২৩ বছর বয়সী তরুণ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান ঋষভ পন্থ সমস্ত ক্রিকেট সমর্থকরা আর ক্রিকেট এক্সপার্টদের নিজের ভক্ত বানিয়ে ফেলেহেন। ৪ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে পন্থ ভারতীয় দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান করা ব্যাটসম্যান ছিলেন। কিন্তু দিল্লির এই তরুণ উইকেটকিপারের জন্য সবসময় বিষয়গুলি এতটা সহজ ছিল না। আইপিএল ২০১৯এ তাকে নিজের ফর্ম নিয়ে সংঘর্ষ করতে দেখা গিয়েছিল। বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে যাওয়ার আগে নিজের ক্রমবৃদ্ধিমান ওজন আর খারাপ উইকেটকিপিং স্কিলসের কারণে সোশ্যাল মিডিয়ায় পন্থকে নিয়ে দারুণভাবে ঠাট্টা তামাশা হয়েছিল।
গড়পড়তা উইকেটকিপিংয়ের কারণে ওয়ানডে সিরিজে পাননি সুযোগ
আইপিএল ২০২০ মরশুম পন্থের জন্য ব্যাট হাতে যথেষ্ট ভাল কেটেছিল। কিন্তু উইকেটের পেছনে তার প্রদর্শন আরও একবার নিরাশ করেছে আর এই কারণে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সীমিত ওভারের সিরিজের জন্য নির্বাচকরা তাকে উপেক্ষা করেন। এরপর অনুমান করা হচ্ছিল যে টেস্ট সিরিজে তিনি সুযোগ পেতে পারেন। টেস্ট সিরিজের আগে দ্বিতীয় প্র্যাকটিস ম্যাচে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি ইনিংস খেলা সত্বেও ভারতীয় দল অ্যাডিলেড টেস্টে ঋষভ পন্থকে প্রথম একাদশে খেলিয়েছিল। কিন্তু ২৩ বছর বয়সী তরুণ উইকেটকিপার নিজের আশা ছাড়েননি আর মেলবোর্ন টেস্টে তিনি প্রথম একাদশে জায়গা পান আর তারপর তিনি আর পেছনে ফিরে তাকাননি।
সোশ্যাল মিডিয়ার সমালোচনা থেকে দূরে আমি স্রেফ নিজের ক্রিকেটে মনোযোগ দিয়েছি—পন্থ
একটি চ্যানেলে ইন্টারভিউ চলাকালীন পন্থ সিনিয়র সাংবাদিক বোরিয়া মজুমদারের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে গিয়ে বলেন যে, “আমাকে প্রতিদিন যথেষ্ট সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছিল যা এই খেলার একটা অঙ্গ। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে আপনার নিজের উপর সম্পুর্ণ বিশ্বাস থাকা উচিত। আমি ভাগ্যবান ছিলাম যে আমার আশেপাশে এমন কিছু ভালো মানুষ ছিলেন যারা নিয়মিত আমাকে মেহনত করতে আর নিজের উপর বিশ্বাস রাখার জন্য উৎসাহিত করেছেন। আমি এই পুরো সময়টায় একটা কথাই শিখেচ্ছি যে যদি আপনি এগিয়ে চলেছন তো আপনি নিজের মধ্যে উন্নতি করছেন। বাকি এদিক ওদিকের ব্যাপার স্যাপারে মনযোগ দেওয়ার বদলে আপনার নিজের খেলার উপর ফোকাস করা উচিত। যাই হোক আজকের সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে আশেপাশের চিৎকারকে উপেক্ষা করা মুশকিল, কিন্তু আমি নিজের খেলায় ফোকাস বজায় রাখার জন্য এই সবকিছু থেকে দূরত্ব তৈরি করে ফেলেছিলাম আর এই টেকনিক আমার জন্যও কাজ করেছেন”।