গত বছর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশ নেওয়া ছিল প্রায় অনিশ্চিত। তবে শেষ মুহুর্তে অষ্টম দল হিসেবে আসরে অংশ নিয়ে বাজিমাত করে পাকিস্তান। সেমি ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারানোর পর ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা ঘরে তোলে তাঁরা।
সেই সময় থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ধারাবাহিক সাফল্যের দেখা পাচ্ছে পাকিস্তান। বর্তমানে আইসিসি ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান পঞ্চম। শুধু র্যাঙ্কিং নয় অন্যান্য যে সকল দিক বিবেচনা করলে পাকিস্তান হতে পারে ২০১৯ বিশ্ব আসরের চ্যাম্পিয়ন এমনই ৫টি কারণ এবার দেখে নেওয়া যাক।
# এখানে রয়েছে সেই পাঁচটি কারণ, যার জন্য পাকিস্তানি টীমকে বলা যেতে পারে, বিশ্বকাপ জেতার প্রবল দাবিদার
৫. শক্তিশালী পেস আক্রমণ
পাকিস্তান ক্রিকেট দলে পেসারদের আগমন নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। কিংবদন্তি ফজলে মাহমুদ থেকে শুরু করে বর্তমান সময়েও একের পর এক গতি তারকা দেখা গিয়েছে পাকিস্তান দলে।
পাকিস্তান দলে বর্তমানেও রয়েছে পেসারদের আধিক্য। যেখানে মোহাম্মদ আমিরের মত ম্যাচ জয়ী বোলারের সাথে রয়েছেন অভিজ্ঞতার সাক্ষর রাখা হাসান আলি। অন্যদিকে পিচে গতির ঝড় তুলতে প্রস্তুত রয়েছেন শাহিন শাহ আফ্রিদি ও উসমান খান শেনওয়ারির মত বোলাররা। তাছাড়া সাদা পোশাকে সফল হবার পর ওয়ানডেতে অভিষেকের অপেক্ষায় রয়েছেন আরেক তরুণ মহম্মদ আব্বাস।
ইংল্যান্ডের মত পেস সহায়ক কন্ডিশনে যেহেতু বসতে যাচ্ছে আগামী বিশ্বকাপের আসর তাই পেস বোলিং বিভাগে সর্বোচ্চ শক্তি নিয়েই মাঠে নামতে পারে পাকিস্তান।
৪. টপ অর্ডারে ফখর জামানের উপস্থিতি
পাকিস্তান দলের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের মধ্যে অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে ধরা যায় ফখর জামানকে। ওয়ানডে ফরম্যাটে এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের গড় রান ৫৭.৯৫। অন্যদিকে স্ট্রাইক রেটের দিক থেকেও বেশ খানিকটা এগিয়ে রয়েছেন তিনি। তাঁর স্ট্রাইক রেট ৯৭.৯৫, যা এই ফরম্যাটের জন্য যথেষ্ট দৃষ্টিনন্দন।
যদিও গত কয়েকটা সিরিজে দুবাইর মাঠে নিজেকে মেলে ধরতে পারছেন না তিনি। কিন্তু ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে আবারও যদি তাঁর ব্যাট হাসে তাহলে প্রতিপক্ষের জন্য তা হবে মারাত্মক ভয়ানক।
৩. মজবুত মিডল অর্ডার
বাবর আজম, হ্যারিস সোহেল, শোয়েব মালিকদের নিয়ে গড়া পাকিস্তানের মিডল অর্ডার বেশ অভিজ্ঞ। পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপে জ্বালানির যোগান দেয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকবে এই তিন ব্যাটসম্যান।
চলতি বছরের শুরুর দিকে দ্রুততম ২০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ কড়া বাবর আজম একজন প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। অন্যদিকে সব ধরণের বলই নিজের আয়ত্তে রাখা হ্যারিস সোহেল দিন দিন ধার বাড়িয়ে যাচ্ছেন তাঁর ব্যাটের। আরেক অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার শোয়েব মালিক দীর্ঘ সময় ধরে পাকিস্তানের মিডল অর্ডার সামাল দিচ্ছেন একা হাতে। তাই এদিক থেকেও বেশ ভাল অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান দল।
২. বিশ্বকাপের আগে পাকিস্তানের সময়সূচী
বিশ্বকাপ নিয়ে সর্বদাই সচেতন থাকা দল পাকিস্তান আগামী বিশ্বকাপের আগে ইংল্যান্ডের মাটিতে খেলবে ৫ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। যা তাঁদের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখবে বলা যায়। ইংল্যান্ডের কন্ডিশনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পাকিস্তানের এমন ক্রিকেট সূচি অবশ্যই উজ্জীবিত করবে দলকে।
অন্যদিকে দুবাইয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও ৫ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলে প্রস্তুতির শতভাগ সেরে নিবে তাঁরা।
১. বিশ্বব্যাপী টুর্নামেন্ট জেতার অভিজ্ঞতা রয়েছে সরফরাজ আহমেদের
২০০৬ সালে অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ আসরে সরফরাজের হাত ধরেই প্রথম শিরোপার দেখা পায় পাকিস্তান। অন্যদিকে ২০১৭ সালে আইসিসির ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে পাকিস্তানের অবস্থান তলানির দিকে থাকলেও সেখান থেকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিজেদের করে নিয়েছে সরফরাজের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান।
উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান সরফরাজ ম্যাচের মেজাজ বুঝে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রেও বেশ পটুতার পরিচয় দিয়ে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। তাই বিশ্বকাপেও তাঁর দক্ষ নেতৃত্বে পাকিস্তান শিরোপা তুলতে পারে ঘরে।