প্রথম টেস্টে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে যেভাবে লজ্জাজনক ব্যাটিং বিপর্যয় দেখালেন ভারতীয় দল, তাতে গোটা ক্রিকেট বিশ্বজুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে সমালোচনা। তারকাখচিত ভারতীয় ব্যাটিং অর্ডারকে মাত্র ৩৬ রানে গুটিয়ে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার দুই তারকা পেসার প্যাট কামিন্স এবং জস হেজলউড। আর ভারতের এমন ব্যাটিং বিপর্যয়ের পর উচ্ছ্বসিত পাকিস্তান ও বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ভারতের প্রতি বিদ্রুপমূলক বার্তা দিয়ে চলেছে তারা।
তবে ভারতীয় দলের এমন ব্যাটিং বিপর্যয় সম্বন্ধে ভাবতেই পারেননি পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা। শুরুতে বেশ উচ্ছ্বসিত লাগলেও বিশেষজ্ঞ হিসেবে, তারা ভাবতেও পারেননি এইভাবে ভারতীয় ব্যাটিং অর্ডারে ধস নামবে। ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ৩৬ রানে ভারতের অল আউট হওয়া নিয়ে সমালোচনায় লেগে পড়েছেন সকলে, আর সেরকমই নেমে পড়লেন পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটাররা।
পাকিস্তানের প্রাক্তন ওপেনার মোহসিন খান ভাবতেও পারেননি যে ভারত এমন লিড নেওয়া অবস্থায় থেকেও এভাবে গুটিয়ে যাবে। এই নিয়ে এই প্রাক্তন ওপেনার বলেছেন, “আমি নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যখন আমি দেখেছি অস্ট্রেলিয়া আবার ব্যাট করতে নেমেছে আর সকালে স্কোরবোর্ডে দেখি তাদের স্রেফ ৯০ রান দরকার। আমি আউটগুলো দেখছিলাম এবং সত্যি বলতে গেলে পিচে কোনও কিছুই ছিল না। আমার মনে হয়েছে ব্যাটসম্যানরা উদ্যোগের অভাব দেখিয়েছে এবং তারা দোনামনায় ছিল এই ভেবে যে অস্ট্রেলিয়ার পেসারদের বিরুদ্ধে কি করা উচিত।”
এদিকে পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়ক রশিদ লতিফ সেই সময়ের কথা উদ্ধৃত করলেন যখন ২০০২ সালে শারজায় অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পাকিস্তান দুই ইনিংসে মাত্র ৫৯ আর ৫৩ করতে পেরেছিল। সেই নিয়ে লতিফ বলেছেন, “এমন জিনিস হতেই পারে যখন বোলাররা একশো শতাংশ সময়ে সঠিক জায়গায় বল রাখে আর কিনারাগুলি সোজা ফিল্ডারের হাতে চলে যায়। আমার মনে হয় এই ধস নেমেছে কারণ ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা বোলিংকে আক্রমণ করে দাপট রাখার মানসিকতা নিয়ে এসেছিল। কিন্তু পিচের অবস্থা পালটে যায় আর আমার মনে হয় প্রথম দুই দিনে, পিচে কিছুটা স্পঞ্জি বাউন্স ছিল এবং একটু স্লো ছিল। কিন্তু তার পর, পিচ শক্ত হয়ে যায় এবং বোলারদের জন্য দারুণভাবে স্কিড করছিল, যে কারণে কিনারাগুলি সোজা ফিল্ডারের হাতে চলে যাচ্ছিল।”
এরপর পাকিস্তানের কিংবদন্তী পেসার শোয়েব আখতার কার্যত মজা উড়িয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারতের এমন বিপর্যয় নিয়ে। যদিও এই বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের মানসিকতাকে দায়ী করেছেন আখতার। তিনি বলেছেন, “আমার মনে হয়ে ওনাদের মানসিকতা একেবারে ইতিবাচক ছিল না প্রথম ইনিংসে লিড নেওয়ার পর, এবং অস্ট্রেলিয়াকে দ্বিতীয় দিনে অল আউট করার ফলে ভারতের কাছে বড় সুযোগ এসেছিল ম্যাচ জেতার।”
সব শেষে, পাকিস্তানের কিংবদন্তী ব্যাটসম্যান জাভেদ মিয়াঁদাদ বিশ্বাস করেন যে এই পারফর্মেন্স ভারতীয় ব্যাটিংয়ের মান বিচার করে না। যদিও এই বিপর্যয়ের সময়ে কোনও ব্যাটসম্যানই রুখে দাঁড়াননি, এই নিয়ে বিরক্ত মিয়াঁদাদ। তিনি বলেছেন, “সত্যি বলতে গেলে, আমার মনে হয় কিছু ডেলিভারি খেলা অসম্ভব ছিল কিন্তু যে বিষয়টি আমায় অবাক করে দিয়েছিল, তা হল ব্যাটিং অর্ডারের নীচের দিকেরও কেউ এসে রুখে দাঁড়ানোর চেষ্টা করল না। ৩৬ রানের এই টোটাল স্কোর একটি টিমের মূল্যকে তুলে ধরে না।”