ধোনিকে কড়া কথা শোনাতে গিয়ে এখন নিজেই মস্করার পাত্র হয়ে উঠেছেন এমএসকে প্রসাদ 1

ইদানিং ফর্মে ছিলেন না বলে শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার আগে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ককে জাতীয় নির্বাচক মণ্ডলীর চেয়ারম্য়ান মান্নাভা প্রসাদ হুঁশিয়ারি দেন, ব্য়াটহাতে ধারাবাহিকতা দেখাতে না পারলে, ধোনিকে ভারতীয় দল থেকে সরে যেতে হবে তরুণ ক্রিকেটারদের রাস্তা করে দিতে। আর এসব কথা তিনি তাঁকে বলেছেন তার একটাই কারণ – ভারতীয় ক্রিকেটের স্বার্থ। ২০১৯ বিশ্বকাপ ইংল্য়ান্ড থেকে ভারতে আনতে এটাই নাকি টোটকা। হাতে ধোনির পরিবর্ত না থেকেও তাঁকে বলা হয়েছে, না পারলে সরে যেতে। ধারাবাহিকবাবে পারফর্ম করে যেতে না পারলে, নির্বাচকরা নাকি ধোনির পরিবর্ত খুঁজে নিতে বাধ্য় হবেন।
এমএসকে প্রসাদ লোকটা কে? কি করে তিনি জাতীয় নির্বাচক হলেন? কোনওদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন কি ভারতের হয়ে? অধিকাংশ ক্রিকেটপ্রেমীরা এই প্রশ্নের উত্তরগুলিই জানেন না। এখন না হয় ইন্টারনেটের যুগে রেকর্ড খুঁজে পাওয়া সুবিধা। কিন্তু, আজ থেকে পনেরো বছর আগে যদি ধোনি ক্রিকেট খেলতেন আর প্রসাদ তখন নির্বাচক হতেন, তাহলে জাতীয় নির্বাচকের কেরিয়ার সম্পর্কে প্রশ্নটা এলে তার উত্তর আদৌ পাওয়া যেত কি না সন্দেহ। ধরে নেওয়া হতো, লোকটা আসলে রাজ্য় স্তরের ক্রিকেটার ছিলেন। এখন জাতীয় নির্বাচক হয়ে সাপের পাঁচ পা দেখেছেন। কোনও জ্ঞানগম্য়ি নেই। যাঁকে যা পারছেন, বলে যাচ্ছেন। এমন বালখিল্য় আচরণ না করলেই পারতেন।
যাইহোক, এখন ইন্টারনেটের কল্য়াণে জাতীয় নির্বাচক মণ্ডলীর মিস্টার চেয়ারম্য়ানের আন্তর্জাতিক রেকর্ড সবার চোখের সামনে। কেউ যে ছিঃ ছিঃ করবেন, তারও উপায় নেই। তা করতে গেলেও তো রেকর্ড দরকার। প্রসাদের তো তাও নেই। টেস্ট ও একদিনের ক্রিকেটে কোনওদিন সবমিলিয়ে দু’শো রানই তুলতে পারেননি। আর টি-২০ ক্রিকেটের তো সে সময় অস্তিত্বই ছিল না। ধোনিকে কড়া কথা শোনানোর পর তা মিডিয়াতে এসে তিনি যেভাবে বড় মুখ করে জানান – তা অনেকটা অভিভাবকের মতো। পড়াশোনায় তাঁদের চেয়ে ঢের গুন ভালো ছেলে বা মেয়ে কথা না শুনলে ছোটো বাচ্চাকে বাবা-মা বলে ওঠেন, পড়াশোনা না করলে, তোমার খেলনা অন্য় কাউকে দিয়ে দেবো! ভাববার বিষয় হলো – কাকে ভারতীয় ক্রিকেটের স্বার্থের জ্ঞান দিচ্ছেন প্রসাদ? ধোনি এমন একটা মানুষ যিনি সবমসয় নিজের আগে ভারতীয় ক্রিকেটের কথা ভেবেছেন। তাঁকে এই কথা শোনানোর কোনও অর্থ হয় না। দ্বিতীয়, তাঁর বিকল্প খুঁজে নিতে বাধ্য় হবেন তাঁরা। ধোনির বিকল্প তো এই মুহূর্তে ভারতীয় ক্রিকেটে অন্দরে আতস কাঁচ নিয়ে খুঁজলেও পাওয়া যাবে না। ভালো উইকেটকিপার অথচ ভালো-ম্য়াচ ফিনিশার, এমন অপশন কই? নির্বাচকরা বোধ হয় ভুলে গিয়েছেন, ভারতীয় ক্রিকেটে আজ তরুণ প্রতিভাদের আসার পেছনে একজনের হাত রয়েছে। আর তাঁর নাম বিরাট কোহলি নন, মহেন্দ্র সিং ধোনি।
ধোনিকে কোনওদিন মুখে জবাব দিতে দেখা যায়নি। বরাবর পারফর্ম করে জবাব দিয়েছেন তিনি। এমএসডি’র কারণেই শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দু’ম্য়াচ বাকি থাকতেই নেতা বিরাটের টিম ইন্ডিয়া সিরিজ দখল করে নিয়েছে। আর তারপরই সোশ্য়াল নেটওয়ার্কিং সাইট ট্য়ুইটারে জাতীয় নির্বাচককে নিয়ে দেদার মস্করা শুরু হয়েছে।
সেই সব কিছু ট্য়ুইট পাঠকদের জন্য় রইল –
”এমএসডি আর এমএসকে – শব্দ দু’টির মধ্য়ে মহাসাগর সমান ফারাক। কিছু মানুষ বেশি কথা বলেন, আর কিছু মানুষ করে দেখান।”
”এমএসকে প্রসাদ : ধোনি না খেলতে পারলে ওর পরিবর্ত খুঁজে নেব আমরা। ধোনি : আচ্ছা ঠিক আছে, আপনারা যেমন বলছেন!”
”আশা করি, প্রধান নির্বাচক খেলা দেখেছেন। ধোনিচিত ইনিংস একমাত্র ধোনি খেলতে পারেন”
”মনে হয়, শ্রীলঙ্কা চমকে গিয়েছে। এত নাটকের পরও ভারত জিতছে। আশা করি, এমএসকে প্রসাদ বুঝতে পেরেছেন, ধোনি কি পারেন আর পারেন না।”
”পরপর দু’ম্য়াচে ধোনি ভারতকে জেতালেন। এমএসকে প্রসাদের গালে কষিয়ে চড় পড়েছে।”

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *