বর্তমান সময়ে আইপিএলের প্রতিটা খেলা ক্রমে প্রতিযোগিতাকে জটিল এবং রোমাঞ্চকর করে তুলছে। প্রতিটা খেলার ফল এখন কোনও একটা দলকে প্লে অফের কাছে টানছে, তো অন্য দলকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে। নিজেদের শেষ ম্যাচে গুজরাট লায়ন্সের কাছে হার স্বীকার করে যেমন কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের কাছে এখন লিগের অবশিষ্ট খেলায় ডু-অর-ডাই হয়ে দাঁড়িয়ে। অন্যদিকে, টিম কেকেআর এরই মধ্যে প্লে অফে নিজেদের জায়গা পাকা করে ফেলেছে। এখন তাদের লক্ষ্য লিগের বাকি ম্যাচে জয় তুলে নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের প্রথম দুই’য়ে শেষ করা।
অবশেষে পঞ্জাব ম্যাচে কেকেআর দলে ফিরছেন এই মারকুটে ব্যাটসম্যানটি
আগের ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্স প্রতিপক্ষ আরসিবি-র ১৫৯ রানের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে মাত্র ১৫ ওভার ১ বলে। সেখানে কিংস ইলেভেন পঞ্জাব প্রায় জেতা ম্যাচ দলের বোলার এবং ফিল্ডারদের ব্যর্থতায় ৬ উইকেটে হেরে বসেছে গুজরাট লায়ন্সের কাছে। এর ফলে এখন প্লে অফের দৌড়ে থাকতে হলে কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের কাছে লিগের বাকি ম্যাচগুলি জেতা অবশ্যাম্ভি হয়ে পড়লো। স্বাভাবিকভাবে মঙ্গলবারের ম্যাচে প্রতিযোগিতায় নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে রীতিমতো লড়াই করবেন প্রীতি জিনটার দলের ক্রিকেটাররা।
গুজরাট ম্যাচে হাসিম আমলা শতরান হাঁকিয়েছিলেন দলের স্কোর বোর্ড সমৃদ্ধ করতে। পঞ্জাব টিম ম্যানেজমেন্টের বিশ্বাস, পরবর্তী ম্যাচের পাওয়ার প্লেতে আমলা আবারও একটা বড় ইনিংস হাঁকিয়ে বসবেন। সেই সময় তাঁকে সঙ্গ দিয়ে শন মার্শও সহজে স্কোর বোর্ডে ১০ ওভারের মধ্যে কমপক্ষে ৮১ রান তুলে নিতে সমর্থ হবেন। মার্শের সঙ্গে ক্রিজে থেকে আমলা যদি ৩৫ বলে ৫০ রান তুলে নিতে পারেন, তাহলে তাঁদের এই জুটি শুরুতেই ১২৫ রানের একটা ইনিংস খেলে নিতে পারবেন।
কেকেআর অবশ্য নিজেদের প্ল্যান অনুযায়ী এবারে ক্রমে এগিয়ে চলেছে। কাঁধের চোট সারিয়ে দলে ফিরে ক্রিস লিন ব্যাট ফের ব্যাটে ঝড় তুললেন। অন্যদিকে শেষ ম্যাচে সুনীল নারিনও ওপেনিং স্লটে ব্যাট করে ১৫ বলে অর্ধশতরান হাঁকিয়ে নতুন একটা রেকর্ড গড়ে বসলেন। এমনকি মোহালি ম্যাচে দলে ফেরার কথা রয়েছে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়ে শেষ দুই ম্যাচে নাইটদের জার্সিতে না খেলা রবিন উথাপ্পার। প্রতিবারের মতো এবারেও ব্যাটিংয়ে বোলিংয়ে দারুণ ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এই মুহূর্তে ১২ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট সংগ্রহ করে আইপিএলের লিগ টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করে আছেন গম্ভীররা।
কলকাতা এবং পঞ্জাবের কাছে মোহালি ম্যাচটা অবশ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুই দলই গুরুত্বপূর্ণ ২ পয়েন্ট পাওয়ার লক্ষ্যে একে অপরের বিরুদ্ধে নিশ্চিতভাবে কঠিন লড়াই চালাবে। একদিকে কেকেআর সব বিভাগে চূড়ান্ত ফর্মে রয়েছে, তো অন্যদিকে কিংস ইলেভেন পঞ্জাব লড়বে প্লে অফে যাওয়ার আশা টিকিয়ে রাখতে। হেড-টু-হেড এ পর্যন্ত আইপিএলে কেকেআর এবং টিম পঞ্জাব একে অপরের মুখোমুখি হয়েছে ১৯ ম্যাচে। যেখানে নাইটরা ১৩ ম্যাচে এবং কিংস ইলেভেন বাকি ৬ ম্যাচে জয় পেয়েছে। এক্ষেত্রে শাহরুখের দল অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে প্রীতির দলের চেয়ে। এমনকি চলতি আইপিএলের প্রথম পর্বেও পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ৮ উইকেটে ম্যাচ জিতে নিয়েছেন গম্ভীররা।
আইপিএলে ব্যাট হাতে চূড়ান্ত ফর্মে রয়েছেন নাইট নেতা গৌতি। এ পর্যন্ত ৩৩টি হাফ সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে বসেছেন এই কুড়ি-বিশের আঙিনায়। অন্যদিকে, সুনীল নারিনও ক্রমে ওপেনিং স্লটে নিজেকে ধাতস্ত করে ফেলছেন। বল হাতে উমেশ যাদবও দারুণ ফর্মে রয়েছেন। ইডেনে এই কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের একা চারটি উইকেট তুলে নিয়েছিলেন তিনি। সে ম্যাচে ক্রিস ওকস দুটি এবং সুনীল নারিন, গ্র্যান্ডহোম একটি করে উইকেট পেয়েছিলেন। ব্যাট হাতে সে ম্যাচে মনন ভোরা দলের হয়ে সর্বোচ্চ ২৯ রান তুললেও, ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে কিংস ইলেভেন পঞ্জাব সেবারে নিজেদের স্কোর বোর্ডে ১৭০ রান জমা করে ফেলেছিল। তাতেও জয় তুলে নিতে সমস্যা হয়নি কেকেআর-এর। স্বাভাবিকভাবে এই মুহূর্তে ১৮০ চেয়েও বেশি রান চেজ করে ম্যাচ জেতাটা যেন খুব একটা কঠিন কাজ নয় গম্ভীর, নারিনদের কাছে।