গতকাল রাজস্থান রয়্যালসের কাছে বাজেভাবে হারার পর কার্যত টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গিয়েছে চেন্নাই সুপার কিংস। টি২০ এর সময়ে কার্যত টেস্ট খেলার আমেজ নিয়ে এসেছিল চেন্নাই সুপার কিংসের ব্যাটসম্যানরা। আর তার জেরে পুরো ২০ ওভার ব্যাট করে মাত্র ১২৫ রান তুলতে সক্ষম হয় তারা। আর এর জন্য অনেকটাই দায়ী করা হয়েছে অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনিকে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এই বছর মানসিক ও শারীরিক ভাবে যেন অনেকটাই ঝিমিয়ে গিয়েছেন বিশ্বকাপজয়ী এই অধিনায়ক।
আর তার এমন মনোভাব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন ক্রিকেট প্রাক্তনী সহ বিশেষজ্ঞরা। তারা মনে করছেন, এই বছরই হয়ত শেষ আইপিএল মহেন্দ্র সিং ধোনির জন্য। যদিও সকলের থেকে এগিয়ে একেবারে অন্যরকমভাবে ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ককে সমালোচনা করলেন পাকিস্তানের কিংবদন্তী ব্যাটসম্যান জাভেদ মিয়াঁদাদ। তিনি মনে করেন, শারীরিক ভাবে ফিট থাকলেও ম্যাচ ফিট নন মহেন্দ্র সিং ধোনি।
এবারের আইপিএল এ কিপিংয়ে ঝলক দেখালেও ব্যাটিংয়ে চুড়ান্ত ফ্লপ বিশ্বের অন্যতম সেরা ফিনিশার। নয় ম্যাচে মাত্র ২৭.২০ গড়ে ১৩৬ রান করেছেন, যেখানে স্ট্রাইক রেট কিছুটা হলেও ভালো, ১৩২.৪০। কিন্তু পাকিস্তানের কিংবদন্তী ব্যাটসম্যান জাভেদ মিয়াঁদাদ মনে করেন, বয়সের কারণে আগের মত সেই ক্ষিপ্রতা আর নেই মহেন্দ্র সিং ধোনির।
জনপ্রিয় ভারতীয় ইংরেজি সংবাদপত্র দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ধোনির সম্বন্ধে জাভেদ মিয়াঁদাদ বলেছেন, “আপনার শারীরিক সক্ষমতা আমরা বয়সের তুলনায় কমতে থাকে। আপনি যত বয়স্ক হবেন, আপনার শারীরিক সক্ষমতা আরও নীচে নেমে যায় আর আপনাকে আরও বেশি পরিশ্রম করতে হবে আপনার ফিটনেসের জন্য যাতে আপনি শারীরিক দিক থেকে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছতে পারেন। শারীরিকভাবে মহেন্দ্র সিং ধোনি এখনও অনেক ফিট। কিন্তু আমি ওনার ম্যাচ ফিটনেস নিয়ে কথা বলছি। ধোনির মত বয়সের খেলোয়াড়দের জন্য, এটা আরও মুশকিল হয়ে পড়ে। আমার কাছে, ধোনির সমস্যার জায়গাগুলি হচ্ছে ওনার টাইমিং ও রিফ্লেক্স। যদি একজন খেলোয়াড় সম্পূর্ণভাবে ম্যাচ ফিট না হন, তাহলে ওনার টাইমিং এবং রিফ্লেক্স অনেক ধীরগতির হয়ে যাবে।”
এরপর মহেন্দ্র সিং ধোনিকে বিশেষ কিছু পরামর্শ দেন পাকিস্তানের এই কিংবদন্তী ব্যাটসম্যান। তিনি মনে করেন, ধোনিকে এখন নেট প্র্যাক্টিসে তার ব্যাটিংয়ের সময় বাড়াতে হবে এবং অনুশীলনের ড্রিলস আরও বাড়াতে হবে। এই প্রসঙ্গে মিয়াঁদাদ বলেছেন, “আমি যা দেখেছি, কিছু কিছু শটের ক্ষেত্রে ধোনির বডি পজিশন সঠিক ছিল না। এটি একটি অন্যতম কারণ তার টাইমিংয়ের সমস্যার জন্য। আমার পরামর্শ ধোনির কাছে হবে যে যাতে তিনি তার অনুশীলনের ড্রিল এবং নেট প্র্যাক্টিসে ব্যাটিংয়ের সময় আরও বাড়ান। উদাহরণ দিয়ে বলছি, যদি উনি ২০টি সিট আপ্স করেন, তাহলে সেটিকে বাড়িয়ে ৩০টি সিট আপ্স করতে হবে। যদি উনি পাঁচটি স্প্রিন্ট মারেন, তাহলে সেটিকে বাড়িয়ে আটটি স্প্রিন্ট করতে হবে। যদি উনি নেট প্র্যাক্টিসে এক ঘন্টা ব্যাটিং করেন, তাহলে সেটিকে বাড়িয়ে দুই ঘন্টা অবধি করিয়ে নিতে পারেন।”