চলতি আইপিএলে (IPL 2022) নিজেদের শুরুটা খুব খারাপ ছিল না কলকাতা নাইটরাইডার্সের। প্রথমদিকে তিন-চারটি ম্যাচ টপাটপ জিতে নিয়ে এবার প্লে অফে যাওয়ার বিষয়ে বড় দাবিদার হয়ে ওঠে শাহরুখ খানের দল। সেই সময় মনে হয়েছিল, এবার কলকাতাই হল ‘টিম টু বিট’। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পুরো চিত্রটাই যেন বদলে যায় শ্রেয়াস আইয়ারের দলের জন্য। টান পাঁচ-ছটি ম্যাচ হেরে লিগ টেবিলে নিজেদের অবস্থান বেশ খারাপ করে ফেলে গতবারের আইপিএল ফাইনালিস্টরা। এই হড়কানোর পিছনে অনেক কারণ থাকলেও, মূল সমস্যা দলের ব্যাটিং লাইনআপ। আরও পরিস্কার করে বললে, নাইট দলের টপ অর্ডার এখনও পর্যন্ত এবারের আইপিএলে চূড়ান্ত ফ্লপ। আর সেই কারণেই এই মুহুর্তে ১২টি ম্যাচের মধ্যে মাত্র ৫টি’তে জিতে লিগ তালিকার সপ্তম স্থানে রয়েছে তারা।
চলতি আইপিএলে কলকাতার পারফরমেন্স
সোমবার, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে ৫২ রানে হারিয়ে কিছুটা অক্সিজেন পেয়েছে কলকাতার নাইটরা। তবে এবারের টুর্নামেন্টে এখনও পর্যন্ত ৭টি ম্যাচে হেরে বসে রয়েছে কেকেআর। এতেই প্লে অফের স্বপ্ন কার্যত ফিকে হয়ে গিয়েছে শ্রেয়াসদের। হিসাব বলছে শেষ দুটি ম্যাচে কেকেআর জিতলে নাইটদের সর্বোচ্চ পয়েন্ট হতে পারে ১৪। এর মধ্যে আবার কেকেআরের রান রেটও খুব ভালো নয় (-০.০৫৭)। এমন অবস্থায় পরের রাউন্ডে ওঠা প্রচন্ড কঠিন কাজ। তাই শুধু দুটি ম্যাচ জিতলেই চলবে না, শেষ চারে যাওয়ার লড়াইয়ে দলগুলোকেও শেষের কয়েকটা ম্যাচে হারতে হবে।
কোন সমীকরণে শেষ চারে যাবে কলকাতা?
- কলকাতাকে তাদের বাকি দুটি ম্যাচও ভালো রান রেটে জিততে হবে।নাইটদের সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ ও লখনউ সুপার জায়ান্টসের সঙ্গে ম্যাচ খেলতে হবে। এই দুই দলের বিরুদ্ধে বড় জয় দরকার কেকেআরের। এমনটা হলে ১৪ ম্যাচে ৭টি জয় পাবে কলকাতা। যদি নেট রান রেট অন্য ৭টি ম্যাচ জয়ী দলের চেয়ে ভাল হয়, তবে কেকেআর প্লে অফে পৌঁছতে পারে।
- পাঞ্জাব কিংস ও গুজরাট টাইটান্সের বিরুদ্ধে দুটি ম্যাচেই হারতে হবে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরকে। এই পরিস্থিতিতে আরসিবির ১৪ ম্যাচে ৭টি জয় থাকবে।
- সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদকে কলকাতা এবং মুম্বাইয়ের কাছে হাটতে হবে এবং তারা জিতবে পাঞ্জাব কিংসয়ের বিরুদ্ধে। সেক্ষেত্রে ১৪ ম্যাচে সানরাইজার্সের থাকবে মাত্ট ৬টি জয়। মুম্বাইয়ের বিরুদ্ধে জিতলেও হায়দ্রাবাদ জয় পাবে মাত্র ৭টি।
- দিল্লি ক্যাপিটালস তাদের পরের ম্যাচে পাঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে জেতে এবং রাজস্থান রয়্যালস এবং মুম্বাইয়ের কাছে হারে। এমন পরিস্থিতিতে দিল্লির খাতায় রয়ে যাবে মাত্র ৬টি জয়।
- পাঞ্জাব কিংস আরসিবির বিরুদ্ধে জিতবে আরে হারবে দিল্লি ও সানরাইজার্সের কাছে। এমন পরিস্থিতিতে পাঞ্জাবের খাতায় বাকি থাকবে মাত্র ৬টি জয়। এমনকি দিল্লি এবং সানরাইজার্সের মধ্যে যে কোন একটি দলের বিরুদ্ধে জিতলেও তারা মাত্র ৭টি জয় পেতে পারবে। হ্যাঁ, এমন পরিস্থিতিতে সানরাইজার্স ও দিল্লির ৬টি করে জয় পাবে। আর সেক্ষেত্রে কেকেআরের কাছে প্লেঅফে পৌঁছানোর সুযোগ থাকবে।
- চেন্নাই সুপার কিংস তাদের পরের ম্যাচে মুম্বাইয়ের কাছে হারে এবং বাকি দুটি ম্যাচই জেতে বা হারে। এমন পরিস্থিতিতে চেন্নাইয়ের খাতায় সর্বোচ্চ ৬টি জয় থাকবে এবং তা প্লে অফের বাইরে চলে যাবে।
বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি
এই মুহুর্তে যা পরিস্থিতি তাতে প্লেঅফে যাওয়ার বিষয়টা আর নাইটদের হাতে নেই। এখন নিজেদের জয়ের সঙ্গেই বাকি ম্যাচের রেজাল্টের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে শাহরুখের দলকে। পয়েন্ট টেবিলের যা অবস্থা তাতে অনেকগুলি দলই ১৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ পর্যায় শেষ করতে পারে। সেক্ষেত্রে নেট রানরেট একটা বড় ফ্যাক্টর হতে দলেছে। তবে বাকি দুই ম্যাচের একটিতে হারলেই নাইটদের সমস্ত হিসেবের সলীল সমাধী হয়ে যাবে।