সম্ভবত এই মরশুম সেই সব মরশুমগুলোর একটি যা কলকাতা নাইট রাইডার্স কখনো মনে রাখতে চাইবে না। এই মরশুমে তারা শুধু প্লে অফে জায়গা পেতেই ব্যর্থ তাই নয়, বরং তারা একটা দল হিসেবে খেলতেও ব্যর্থ। তাদের দলের ড্রেসিংরুমেও নানা কন্ট্রোভার্সি থেকে এবং সেই সোঙ্গে প্লেয়ারদের মধ্যেও অশান্তি থেকেছে। যার ফল স্বরূপ তারা এই টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে গিয়েছে। এর মধ্যেই আগামি আইপিএল ২০২০তে যে তিন প্লেয়ারকে কেকেআর রিলিজ করে দিতে পারে আমরা আপনাদের জন্য সেই তালিকা তুলে এনেছি।
কেকেআর এই মরশুমে প্রথম পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে চারটিতে জিতে দুর্দান্ত শুরু করেছিল। ইনফ্যাক্ট এক সময় তারা পয়েন্টস টেবিলেও এক নম্বরে ছিল। কিন্তু হঠাত করেই নাটকীয়ভাবে মোড় ঘুরে যায় যখন তারা পরের ৬টি ম্যাচ পরপর হেরে যায়। যদিও এই বিতর্ক এবং অ্যান্দ্রে রাসেলের ব্যাটিং পজিশন তাদের ফের এই আইপিএলে ফিরিয়ে আনে, এবং এসব কিছু পরেই তাদের কাছে সুবর্ণ সুযোগ ছিল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে হারিয়ে প্লে অফে জায়গা করে নেওয়ার। যদিও এই ম্যাচে তারা তাদের অন্যতম খারাপ পারফরমেন্স করে এবং তারা প্লে অফের জায়গা হারিয়ে ফেলে। একবার দেখে নেওয়া যাক কোন তিন প্লেয়ারকে তারা সামনের মরশুমে রিলিজ করে দেবে।
১. কার্লোস ব্রেথওয়েট
এই তারকা অলরাউণ্ডারকে কেকেআর মাঝের কিছু ম্যাচে সুযোগ দিলেও তিনি তার ক্লাস প্রামান করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এই মরশুমে তিনি সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের থেকে কলকাতায় যোগ দিয়েছিলেন, দূর্ভাগ্যবশত তিনি আরো একবার মাঝের ওভারে রান করতে এবং রান আটকাতে ব্যর্থ হয়েছেন। যদিও তিনি খুবই অল্প সুযোগ পেয়েছেন নিজের ক্যালিবার দেখানোর। তবে যে কটি ম্যাচে তিনি সুযোগ পেয়েছেন তাতে তাকে ভীষণই সাধারণ দেখিয়েছে, যা কেকেআরের ম্যানেজমেন্টকে তাকে আগামি মরশুমে দলে রাখার কথা না ভাবতেই বাধ্য করবে। যদি তার পারফর্মেন্স দেখে ম্যানেজমেন্ট তাকে দলে না রাখার সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে সেক্ষেত্রে কেকেআরের ৪.৫কোটি টাকা বেঁচে যাবে যা তারা আইপিএল ২০২০ তে তারা কোনো ভাল বোলারের পেছনে বিনিয়োগ করতে পারবেন।
২. লকি ফার্গুসন
এই জোরে বোলারের কাছ থেকে কেকেআরের অনেক আশাই ছিল আইপিএল ২০১৯ মরশুমে, যদিও তিনি তার সাধারণ পারফর্মেন্সে সকলকেই ভুল প্রামানিত করেছেন। তার বোলিংয়ে যে আগুন একবারো দেখা যায়নি, যার ফল স্বরূপ তিনি দলে তার জায়গা হারান এবং হ্যারি গার্নি তার জায়গায় দলে আসেন। যে কটি ম্যাচে তিনি দলে সুযোগ পেয়েছেন সেকটিতে তিনি ১০.৭৬ ইকোনমি রেটে মাত্র ২টি উইকেট নিতে সফল হয়েছেন। ফার্গুসনের প্রধান সমস্যা যে তিনি শুরু পাওয়ার প্লেতেই রান দিয়েছেন তা নয় বরং মাঝের ওভারগুলিতেও তিনি যথেষ্ট রান বিলিয়েছেন।
১. রবিন উথাপ্পা
যদি আপনারা ভেবে থাকে যে মুম্বাইয়ের বিরুদ্ধে তার খারাপভাবে আউট হওয়াই কেকেআর ম্যানেজমেন্টের এই সিদ্ধান্তের কারণ তাহলে আপনি ভুল। শুধু মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে তার ধীর গতির ইনিংসই এর কারণ নয়, বরং তার ক্রিকেট স্কিল এবং তীব্রতা ধারাবাহিকভাবে কম হয়ে গিয়েছে। উথাপ্পা বছরের পর বছর ধরে কেকেআরের সেরা ব্যাটসম্যান থেকেছেন কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এই মরশুমে তাকে ব্যাটের মাঝখান দিয়ে বল মারতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে দেখা গেছে। শুধু মুম্বাইয়ের বিরুদ্ধেই নয় বরং তাকে আরসিবির বিরুদ্ধেও খারাপ ইনিংস খেলতে দেখা গেছে। যেখানে তারা মাত্র ১০ রানে হেরে যায়, যা রাসেলের ক্ষেত্রে দুটো হিটের মাত্র ব্যাপার ছিল। যদি কেকেআর প্লে অফের জায়গা না পাওয়ার কারণ খুঁজতে হয় তাহলে উথাপ্পা অবশ্যই একটা বড়ো কারণ। ১২টি ম্যাচ এই মরশুমে খেলে উথাপ্পা ১১৫.১০ স্ট্রাইকরেটে মাত্র ২৮২ রানই করতে পেরেছেন।