রবিবারে কেকেআরের বিরুদ্ধে তাদের ঘরের মাঠে গো হারান হেরেছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। এখনও পর্যন্ত সাতটি ম্যাচের মধ্যে মাত্র দুটিতে জয়ী হতে পেরেছে এই দল। ফলে ৪ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার সর্বনিম্ন স্থানে অবস্থান করছে শক্তিশালী এই দল। এই অবস্থায় মরণ-বাঁচন লড়াই আসন্ন বিরাট কোহলির সামনে। কিন্তু প্রতিপক্ষ এবার সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। যারা আপাতত তৃ্তীয় স্থানে রয়েছে। পারবে কী আরসিবি এই ম্যাচে জিততে? একবার দেখে নেওয়া যাক।
কোলকাতার কাছে হেরে গিয়ে বিরাট কোহলি দুষলেন এই প্লেয়ারকে! দেখে নিন
দুটি দল একনজরে
সানরাইজার্স –
শেষ ম্যাচে নিশ্চিত জয়ের মুখে থেকেও জিততে পারেনি ডেভিড ওয়ারনারের এই দল। পুনের বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে শেষ মুহুর্তে ধোনির জ্যোতি ছিটকে পড়ায়, হারের মুখ দেখতে হয়েছিল এই দলকে। তবে গতবারের চ্যাম্পিয়ন এখনও পয়েন্ট তালিকায় বেশ ভদ্র জায়গায় রয়েছে। তবুও রাজার মত প্লেঅফে যাওয়ার জন্য আরসিবিকে হারাতে তারা পূর্ণ শক্তি প্রয়োগ করবেই।
আরসিবি –
শেষ ম্যাচে কেকেআরের কাছে কার্যত নিজেদের সমস্ত সম্মান বিলিয়ে দিতে হয়েছে। ইডেন গার্ডেন্সে সদ্য হওয়া এই ম্যাচে আরসিবির তাবড় ব্যাটসম্যাদের কার্যত পিপিলিকার মত মনে হয়েছিল কেকেআরের বোলারদের কাছে। কিন্তু এমন একটা খারাপ দিন হয়ত সবারই যায়। সেই কথা ভুলে গিয়েই সানরাইজার্সের বিরুদ্ধে শেষ বিষ টুকু ঢেলে দিতে চায় আরসিবি।
দলের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক –
সানরাইজার্স –
চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে হতে চলা এই ম্যাচে সানরাইজার্সের হয়ে একটা বদল লক্ষ্য করা যেতেই পারে। মোয়েস হেনরিকসের জায়গায় অলরাউন্ডার মহম্মদ নবীকে খেলাতে পারে ওয়ার্নার। সম্প্রতি নবীর বেশ প্রশংসা শোনা গিয়েছে। তবে হেনরিকসও ব্যাটে বলে দারুণ ফর্মে থাকায় এই নিয়ে রীতিমত চিন্তায় পড়েছে ২০১৬ আইপিএল চ্যাম্পিয়নরা। এই অবস্থায় হেনরিকসকে বাদ দিয়ে নবীকে দলে নেওয়া হবে কী না সেটাই বড় প্রশ্ন ।
আরসিবি –
লজ্জাজনক পরাজয়ের পরেও আরসিবির প্রথম একাদশে তেমন কোনও বদল হবে না বলে মনে হয়। কারণ কোহলি, গেইল ও ডেভিলিয়ার্স বিশ্বের সবথেকে বিধবংসী ব্যাটিং লাইনআপ। তবে ভাগ্য যেদিন খুব খারাপ থাকে সেদিন সবকিছু ঠিক করতে করতেও ভুল হয়ে যায়। কোহলিরাও ইডেনের ওই দিনটাকে এভাবেই দুঃস্বপ্ন হিসেবে ভুলে গিয়ে নতুন করে শুরু করতে চায়।
কোন দলের শক্তি কেমন –
সানরাইজার্স —
ব্যাটিংয়ের দিক থেকে এখনও সানরাইজার্স অধিনায়ক ওয়ার্নারের ওপর নির্ভরশীল। যে কোনো ম্যাচেি ওয়ার্নারের ব্যাট না চললে দলের কী অবস্থা হতে পারে তা নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাচ্ছেনা। মিডল ওর্ডারে হেনরিকসের ব্যাটে তাও কিছুটা রান এলেও বাকিরা খুবই অনিশ্চিত ফর্মের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। তবে বোলিং নিয়ে কোনও চিন্তা নেই সানরাইজার্সের। এই বোলিং লাইনআপের বিষয়ে গোটা বিশ্বে আলোচনা করা হয়। সুতরাং এই ম্যাচে আরসিবির ভঙ্গুর ব্যাটিং লাইনআপের সামনে এটা একটা কঠিন চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে।
আরসিবি –
বিরাট কোহলি, ক্রিস গেইল, এবি ডেভিলিয়ার্স। এই তিনটি নাম একসঙ্গে বিশ্বের যেকোনও শক্তিশালী বোলিংলাইন আপের কাঠামো ভেঙে চুরমার করে দিতে পারে। ইডেনের ঘটনাকে একটি নিছক দুর্ঘটনা মনে করলেই, এই দল যেমন ছিল তেমনই রয়েছে। বোলিং বিভাগে পবন নেগি ও চাহলের দারুণ প্রদর্শনে বেশ কিছুটা ভরসা পেয়েছে আরসিবি। পাশাপাশি শ্রীনাথ অরবিন্দ ও টাইমল মিলসও পেস বোলিয়ের দায়িত্ব নিতে সক্ষম।
একাদশে বদলের সম্ভাবনা –
সানরাইজার্স –
এই ম্যাচে মহম্মদ সিরাজের জায়গা আশিষ নেহরাকে দেখার সম্ভাবনা প্রবল। কারণ এখনও পর্যন্ত সিরাজ ভাল প্রদর্শণ করতে পারেনি। সেখানে এই বোলারকে আরসিবির মত শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপের বিরুদ্ধে রাখা মানে হেলায় ৪০-৫০ রান দিয়ে দেওয়া। সেটা কোনও ভাবেই চাইছেন না ওয়ার্নার।
আরসিবি—
এখনও পর্যন্ত আরসিবির যে একাদশ রয়েছে তা তাদের শ্রেষ্ঠ একাদশ। একটা দিনের খারাপ ফলের জন্য কোনওভাবেই তারা বিচলিত নন। কাজেই এই একই একাদশ সানরাইজার্সের বিরুদ্ধেও দেখা যাবে।
মুখোমুখি হওয়ার ফলাফল —
এই আইপিএলে উদ্বোধনী ম্যাচে এই দুই দল শেষ বারের মত মুখোমুখি হয়েছিল। সেই ম্যাচে অবশ্য ৩৫ রানে হারতে হয়েছিল আরসিবিকে।
ম্যাচের ভবিষ্যতবানী –
সাতটি ম্যাচ খেলে তিনটিতে হেরে তৃ্তীয় স্থানে রয়েছে সানরাইজার্স। এই ম্যাচে জিতে তারা অন্তত নিজেদের স্থানটি বজায় রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করবেই।
অপরদিকে, আইপিএলের বাকি ম্যাচগুলি আরসিবির কাছে টিকে থাকার লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। যেকোনও ভাবে তাদের ম্যাচ জিততেই হবে। ঘরের মাঠে খেলা বলে কিছুটা সুবিধা পাবে আরসিবি। তবে সানরাইজার্সের ফর্মের দিকে লক্ষ্য রেখে এই লড়াই দারুণভাবে জমে উঠবে তা বলাই যায়। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে কোনও কিছুই বলা যাচ্ছে না এই ম্যাচ নিয়ে। দুজনের মধ্যে যে কেউই এই ম্যাচ থেকে ২ পয়েন্ট ছিনিয়ে নিতে পারে।