ভারত আর অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচ মোহালি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলা হয়েছে। এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া দল নিজেদের দুর্দান্ত প্রদর্শনের কারণে ৪ উইকেট জিতে নিয়েছে। সেই সঙ্গে এই ম্যাচ জিতে অস্ট্রেলিয়ার দল সিরিজে ২-২ ফলাফলে সমতা ফিরিয়েছে। এখন সিরিজের শেষ তথা নির্নায়ক ম্যাচ ১৩ মার্চ দিল্লিতে খেলা হবে।
ভারত খাড়া করে ৩৫৮ রানের বিশাল স্কোর
এই ম্যাচের টস ভারতীয় দল জেতে আর প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভারতীয় দলের শুরুয়াত দুর্দান্ত থাকে আর দুই ওপেনার শিখর ধবন আর রোহিত শর্মা প্রথম উইকেটের জন্য ১৯৩ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। যদিও এই দুজনের আউট হতেই ভারতীয় দলের উইকেট নিয়মিত ব্যাবধানে পড়তে থাকে আর পুরো ভারতীয় দল নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৫৮ রানই করতে পারে। ভারতের হয়ে সবচেয়ে বেশি ১১৫ বলে ১৪৩ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলেন শিখর ধবন। অন্যদিকে রোহিতও দলের হয়ে ৯২ বলে ৯৫ রানের ইনিংস খেলেন। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে প্যাট কমিন্স ১০ ওভারে ৭০ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন।
অস্ট্রেলিয়ার দল ৪ উইকেট বাকি থাকতেই করে লক্ষ্য হাসিল
জবাবে লক্ষ্য তাড়া করতে নামা অস্ট্রেলিয়ার শুরুয়াত ভীষণই খারাপ থাকে। আর মাত্র ১২ রানের ভেতরেই তারা ওপেনার অ্যারণ ফিঞ্চ এবং শন মার্শের উইকেট হারিয়ে ফেলে। যদিও এরপর উসমান খোয়াজা আর পিটার হ্যান্ডসকম্ব ১৯২ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খোয়াজা ৯৯ বলে ৯১ রানের ইনিংস খেলেন, অন্যদিকে হ্যাণ্ডসকম্ব ১০৫ বলে ১১৭ রানের ইনিংস খেলেন। ষষ্ঠ উইকেটের জন্য অ্যালেক্স কেরিয়া আর অ্যাশটন টার্নারের মধ্যে ৮৬ রানের অপরাজিত পার্টনারশিপ হয় আর এই দুই ব্যাটসম্যান দলকে ৪৭.৫ ওভারে ৪ উইকেট বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতিয়ে দেন। অ্যাশটন টার্নার অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৪৩ বলে ৮৪ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলেন।
ম্যাচ শেষে ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি বলেন,
“পুরো ম্যাচেই উইকেট বেশ ভালোই থেকেছে, আমরা দুটি ম্যাচে দুবারই ভুল দিকে ছিলাম শিশিরের কারণে। শেষদিকে বল করা খুবই কঠিন, ছেলেরা তাদের সেরাট দিতে চেষ্টা করেছে, কিন্তু অ্যাস্টন দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছে। খোয়াজা আর হ্যাণ্ডসকম্বও দুর্দান্ত খেলেছে, কিন্তু অ্যাস্টনের ইনিংসটা ছিল ম্যাচ বদলে দেওয়া। শেষ ম্যাচেও আমরা বলেছিলাম যে শিশির ছিল, এবং আমরা তার ভুল দিকে ছিলাম। ওরা ভালো ক্রিকেট খেলেছে, আমরা সেটা মেনে নিয়েছি এবং এটা রেকর্ড চেজ, ওরা জয়ের দাবীদার।”
ম্যাচে শিশির ফ্যাক্টর নিয়ে বিরাট বলেন,
“(রাঁচিতে) যদি আমরা টস জিততাম তাহলে প্রথমেই ব্যাট করতাম। আজ আমাদের পঞ্চম বোলাররা ঠিক বল করতে পারেনি। যদি কেদার এবং বিজয় শিশিরে ভেতর বল করে, সেটা আরো কঠিন হয়ে যায়, (কেনও চহেলকে বল দেওয়া হল না) তাই এটা থেকে আমাদের বাঁচতে হত। বল করার জন্য এটা একটু বেশিই ভেজা ছিল, ফলে সঠিক জায়গায় বল করা একটু কঠিন হয়ে পড়েছিল। (স্ট্যাম্পিংয়ের সুযোগ নিয়ে) গুরুত্বপূর্ণ, আমরা ফিল্ডিংয়ে একটু শ্লথ ছিলাম এবং আমাদের সুযোগের সদ্বব্যবহার করার দরাকার ছিল। ডিআরএসের সিদ্ধান্ত আমাদের সকলকেই অবাক করে দিয়েছে এবং প্রত্যেক ম্যাচেই এটা কথা বলার জায়গায় দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। এটা ধারাবাহিক হতে দেওয়া যেতে পারেনা। ওটা ছিল একটা ম্যাচ বদলে দেওয়ার জায়গায়। সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে এবং ফলে ম্যাচও। আমরা কোনো কিছুইকে গ্র্যাণ্ডেট হিসেবে ধরে নিতে পারিনা। আমাদের আরো পরিশ্রম করতে হবে এবং পরের ম্যাচে আমাদের আরো বেশি তীব্রতা এবং প্যাশন নিয়ে মাঠে নামতে হবে এবং সিরিজ জেতার চেষ্টা করতে হবে।”