নিজের দেশের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা যে কোনো খেলোয়াড়ের স্বপ্ন। যদি আপনি বিশ্বকাপ জয়ী খেলোয়াড় হন আর তারপরও দলে জায়গা না পান তো তার অনুভব আলাদাই হয়। ভারতীয় দলের ৪জন খেলোয়াড়কে এই অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়েই যেতে হয়েছে। যা পরিস্কার দেখতেও পাওয়া গিয়েছে। বিরাট কোহলি এখনো পর্যন্ত নিজের অধিনায়কত্বে কোনো বড়ো টুর্নামেন্ট জেতেননি। কিন্তু তারপরও তার দলে অনেক কম এমন খেলোয়াড় খেলেছেন যার ভারতীয় দলকে বিশ্বকাপ জেতাতে ভীষণই গুরুত্বপূর্ণ যোগদান দিয়েছেন। এই খেলোয়াড়দের গতকিছু বছর অনেক কম সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আজ আমরা সেই ৪জন বিশ্বকাপ জয়ী খেলোয়াড়দের ব্যাপারে জানাতে চলেছি যাদের বিরাট কোহলির নেতৃত্বে একটিও সুযোগ দেওয়া হয়নি। যদিও কিছু সময় এই খেলোয়াড়রা ভীষণই ভালো প্রদর্শনও করেছিলেন তারপরও তাদের দলে সুযোগ দেওয়া হয়নি।
৪. রবিন উথাপ্পা
আইপিএলে গত মরশুমকে ছেড়ে দিলে রবিন উথাপ্পা ভালো প্রদর্শনই করেছেন। কিন্তু ভারতীয় দলে তাকে তারপরও খেলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। ভারতীয় দলের হয়ে তিনি শেষবার ২০১৫য় খেলেছিলেন। সেই সময় পর্যন্ত মহেন্দ্র সিং ধোনির হাতে অধিনায়কত্ব ছিল। রবিন উথাপ্পা ভারতীয় দলের হয়ে ৪৬টি একদিনের ম্যাচে ২৫.৯৪ গড়ে ৯৩৪ রান করেছেন। যার মধ্যে ৬টি হাফসেঞ্চুরিও শামিল রয়েছে। টি-২০ ফর্ম্যাটে তিনি ১৩টি ম্যাচ খেলেছেন যার মধ্যে ২৪.৯ গড়ে ২৪৯ রান করেছেন, যার মধ্যে একটি হাফসেঞ্চুরিও শামিল রয়েছে। তার স্ট্রাইকরেট থেকেছে ১১৮.০১। উথাপ্পা ২০০৭ এ টি-২০ বিশ্বকাপ জেতা ভারতীয় দলের সদস্য ছিলেন। টি-২০ ফর্ম্যাটে এই খেলোয়াড় নিয়মিত নিজেকে প্রমান করেছেন, কিন্তু তারপরো তার ভারতীয় দলে প্রত্যাবর্তন মুশকিল থেকেছে, যা কেউই বুঝতে পারেননি।
৩. ইউসুফ পাঠান
অলরাউন্ডার ইউসুফ পাঠানও দীর্ঘ সময় ধরে ভারতীয় দলে নেই। মাঝে আঝে তিনি নিজের দলের হয়ে ভালো প্রদর্শন করেছেন। কিন্তু তিনি প্রত্যাবর্তন করতে সফল হননি। তিনি ভারতীয় দলের হয়ে শেষবার ২০১২য় ধোনির নেতৃত্বে খেলেছিলেন। ইউসুফ পাঠানও ভারতীয় দলের হয়ে ৫৭টি একদিনের ম্যাচে ২৭ গড়ে ৮১০ রান করেছুলেন। যার মধ্যে ২টি সেঞ্চুরি আর ৩টি হাফসেঞ্চুরি শামিল রয়েছে। সেই সঙ্গে বল হাতে ৩৩টি উইকেটও নিয়েছেন। ২২টি টি-২০ ম্যাচে তিনি ৩৩.৬৯ গড়ে ১৩টি উইকেট নিয়েছেন এবং ব্যাট হাতে ১৮.১৫ গড়ে ২৩৬ রান করেছেন। ইউসুফ পাঠান এর মধ্যে ১৪৬.৫৮ স্ট্রাইকরেটে রান করেছেন। টি-২০ ফর্ম্যাটে এই খেলোয়াড় ভালো প্রমানিত হতে পারতেন, কিন্তু তাকে নিয়মিতভাবে কখনো দলে সুযোগ দেওয়া হয়নি। যে কারণে নিজের দলের হয়ে তারকা খেলোয়াড় হতে পারেননি যা তিনি হতে চাইতেন। পাঠান ২০০৭ আর ২০১১ দুই বিশ্বকাপ জয়েরই অংশ ছিলেন।
২. হরভজন সিং
স্পিন বোলার হরভজন সিংও দীর্ঘ সময় ধরে ভারতীয় দলের অংশ হতে পারেননি। তিনি গত দুটি আইপিএল মরশুমে ভীষণই ভালো প্রদর্শন করেছিলেন। কিন্তু তারপরও তাকে দলে ফেরানো হয়নি। ভারতীয় দলের হয়ে তিনি শেষবার ২০১৬য় খেলেছিলেন। হরভজন ভারতীয় দএল্র হয়ে ১০৩টি টেস্ট ম্যাচে ৩২.৪৬ গড়ে ৪১৭টি উইকেট নিয়েছিলেন। এছাড়াও ২৩৬টি একদিনের ম্যাচে তিনি ৩৩.৩৬ গড়ে ২৬৯টি উইকেট নিয়েছেন। টি-২০ ফর্ম্যাটে হরভজন সিং ২৮টি ম্যাচে ২৫,৩২ গড়ে ২৫টি উইকেট নিয়েছেন। ভাজ্জিকে তারপর দলে সুযোগ দেওয়া হয়নি। তিনি ২০০৭ আর ২০১১ দুই বিশ্বকাপেই ভারতীয় দলে ছিলেন। তারপরও বিরাট কোহলির নেতৃত্বে এই খেলোয়াড়কে খেলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। তবে তিনি ঘরোয়া ক্রিকেট খেলাও বন্ধ করে দিয়েছেন।
১. পীযূষ চাওলা
আরো এক স্পিন বোলার পীযূষ চাওলাও দীর্ঘ সময় ধরে ভারতীয় দলে সুযোগ পাননি। আইপিএলে নিয়মিত এই খেলোয়াড় নিজের প্রদর্শনে প্রভাবিত করেছেন। কিন্তু তারপরও তাকে দলে ফেরানো হয়নি। ভারতীয় দলের হয়ে শেষবার তিনি ২০১২য় খেলেছিলেন। পীযূষ চাওলা ভারতীয় দলের হয়ে ৩টি টেস্ট ম্যাচে ৩৮.৫৭ গড়ে ৭টি উইকেট নিয়েছেন, এছাড়াও ২৫টি একদিনের ম্যাচে ৩৪.৯১ গড়ে ৩২টি উইকেট নিয়েছেন। টি-২০ ফর্ম্যাটে তার খেলা ৭টি ম্যাচে তিনি ৩৭.৭৫ গড়ে ৪টি উইকেট নিয়েছেন। চাওলা ব্যাট হাতেও শেষ গুরুত্বপূর্ণ যোগদান দিতে পারতেন। চাওলা ২০১১ বিশ্বকাপে ভারতীয় দলে ছিলেন। কিন্তু তারপরও তাকে কখনো দলে সুযোগ দেওয়া হয়নি। যা নিয়ে নির্বাচকদের উপর অনেক বড়ো প্রশ্ন তোলা যেতে পারে যা ভীষণই গুরুত্বপূর্ণ হবে।