বিশ্বকাপের ক্রিকেটের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর ম্যাচ ১৪ জুলাই রবিবার ইংল্যান্ড আর নিউজিল্যান্ডের মধ্যে লর্ডস ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলা হয়েছিল। স্পেশাল ব্যাপার এটাই ছিল যে বিশ্বকাপের ইতিহাসের এই রোমাঞ্চকর ম্যাচ ফাইনালের মতো বড়ো ইভেন্টে হয়েছিল। মোট ১০২ ওভারের খেলায় দুই দলই সমান সমান রান করেছিলেন, কিন্তু ইংল্যান্ড দলকে বাউন্ডারির মারার হিসেবে বিশ্বকাপ ২০১৯ এর জয়ী বলে মেনে নেওয়া হয়।
ইংল্যান্ডের ২৬টি বাউন্ডারি, নিউজিল্যান্ডের ১৭ বাউন্ডারির চেয়ে ছিল এগিয়ে
এই ফাইনাল ম্যাচ যথেষ্ট রোমাঞ্চকর থেকেছে আর ১০০ ওভারের খেলার পর শেষে টাই হয়ে যায়। টাই হওয়ার পর সুপার ওভার খেলা হয়। সুপার ওভারেও এই ম্যাচ টাই হয়ে যায়। এরপর আইসিসির নিয়মের মোতাবেক দুই দলের সুপার ওভার মিলিয়ে বাউন্ডারি দেখা হয়। এই বিষয়ে ইংল্যান্ডের দল নিউজিল্যান্ডের চেয়ে এগিয়ে ছিল, কারণ ইংল্যান্ডের দল সুপার ওভার মিলিয়ে যেখানে মোট ২৬টি বাউন্ডারি মেরেছিল, সেখানে নিউজিল্যান্ডের দল মাত্র ১৭টিই বাউন্ডারি মারতে পেরেছিল। বাউন্ডারি মারার হিসেবেই ইংল্যান্ডকে বিশ্বকাপের জয়ী ঘোষিত করা হয়েছিল। অন্যদিকে নিউজিল্যাণ্ডের দল লাগাতার দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপের ফাইনালে হারের মুখ দেখতে হয়েছিল। আইসিরি এখন টি-২০ আন্তর্জাতিকে নতুন সুপার ওভার নিয়ম নিয়ে আসছে।
এখানে দেখুন আইসিসির সুপার ওভারের নিয়ম:
১. যদি ম্যাচ টাই হয়, তো সুপার ওভার খেলা হবে। যদি প্রথম সুপার ওভার টাই হয় তো পরে সুপার ওভার ততক্ষণ খেলা হবে যতক্ষণ না কেউ জয়ী হয়ে যায় বা যতক্ষণ না অসাধারণ পরিস্থিতি উৎপন্ন না হয়ে যায়।
২. সুপার ওভারে প্রত্যেক দল এক ওভার পাবে, যে বেশি রান করবে, সেই দলকে জয়ী মেনে নেওয়া হবে।
৩. ওভারে দুটি উইকেট পড়ে গেলে দলের ইনিংস শেষ হয়ে যাবে।
৪. প্রত্যেক দলকে সুপার ওভারে একটি রিভিউও দেওয়া হবে।
৫. আবহাওয়ার পরিস্থিতির অধীনে সুপার ওভার ম্যাচ নির্ধারিত দিনে একটি সময়ে আইসিসির ম্যাচ রেফারি দ্বারা নির্ধারিত করা হবে। সাধারণ পরিস্থিতিতে এটি ম্যাচ শেষ হওয়ার ৫ মিনিট পর শুরু হবে।
৬. সুপার ওভারের জন্য অধিকতম ২০ মিনিটের সময় থাকবে।
৭. সুপার ওভার ম্যাচ সেই পিচেই হবে, যতক্ষণ না গ্রাউন্ড অথরিটি আর আইসিসি ম্যাচ রেফারির পরমর্শে অ্যাম্পায়ার দ্বারা নির্ধারিত না করা হয়।
৮. ম্যাচে কেবল মাত্র নামাঙ্কিত খেলোয়াড়রাই সুপার ওভারে অংশ নিতে পারেন। যে কোনো খেলোয়াড়কে (ব্যাটসম্যান আর বোলার) চোট, রোগ বা অন্য কোনো রকম কারণেই পরিবর্ত দেওয়া হবে না।
৯. ম্যাচের যে কোনো সময় সুপার ওভারের জন্য এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
১০. অ্যাম্পায়ার সেই প্রান্তেই দাঁড়াবেন, যে প্রান্তে তিনি ম্যাচ শেষ করেছিলেন।
১১. ম্যাচে পরে ব্যাটিং করা দল সুপার ওভারে প্রথমে ব্যাটিং করবে।
১২. ফিল্ডিং অধিনায়ক বল নির্বাচন করবেন। এটি সুপার ওভারে অ্যাম্পায়ারদের দ্বারা প্রধান করা অতিরিক্ত বলের বাক্স থেকে নির্বাচিত করতে হবে।
১৩. ফিল্ডিং দল সেই প্রান্ত বাছবে যেখানে থেকে তাদের নিজেদের এক ওভার করতে হবে।
১৪. আইসিসি টি-২০ প্লেয়িং কন্ডিশন অনুযায়ী খেলা হওয়া ম্যাচে শেষ ওভারের জন্য আবেদন করায় প্রত্যেক দলের ওভার একটিই ফিল্ডিং রেস্ট্রিকশনের সঙ্গে খেলা হয়।
১৫. সুপার ওভারে জয়ী সাধারণত খেলার পরিস্থিতির অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি রান করা দলই হবে তা সে যেকটিই উইকেট পড়ুক।
যদি সুপার ওভার টাই হয়ে যায় তো তার পরের নিয়ম:
১৬. যদি সুপার ওভারও টাই হয় তো পরে সুপার ওভার ততক্ষণ খেলা হবে যতক্ষণ না কেউ জয়ী হয়।
১৭. সাধারণ পরিস্থিতিতে যে কোনো পরের সুপার ওভার আগের সুপার ওভার শেষ হওয়ার ৫ মিনিট পর শুরু হবে। ব্যবধান ৫ মিনিটের হবে।
১৮. আগের সুপার ওভারে দ্বিতীয় নম্বরে ব্যাটিং করা দল পরের সুপার ওভারে প্রথমে ব্যাটিং করবে।
১৯. গত সুপার ওভারে প্রত্যেক দল দ্বারা ব্যবহারের জন্য নির্বাচিত বলের ব্যবহার পরের সিপার ওভারে সেই দল দ্বারা করা হবে।
২০. ফিল্ডিং সাইডকে এরপরের সুপার ওভারে বিপরীত প্রান্ত থেকে বোলিং করতে হবে, যেখানে তারা আগের সুপার ওভারে বোলিং করেছিল।
২১. যদি কোনো ব্যাটসম্যান আগের সুপার ওভারে আউট হয়ে যায় তো তিনি পরের সুপার ওভারে ব্যাটিং করার জন্য অযোগ্য হবেন।
২২. গত সুপার ওভারে বোলিং করা বোলার পরের সুপার ওভার বোলিং করার জন্য অযোগ্য হবেন।
২৩. অন্য সমস্ত খেলার পরিস্থিতি প্রারম্ভিক সুপার ওভারের জন্য একই হবে।
২৪. এমন পরিস্থিতিতে যেখানে সময়ের বাধা রয়েছে, সেই অবস্থায় হোম বোর্ড সিরিজের শুরু আগে অংশ নেওয়া দলগুলির সুপার ওভারের সংখ্যা সীমিত করাতে পারে।