ভারতীয় নারী ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় হরমনপ্রীত কউরের বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে এবং যার ফলে পাঞ্জাব পুলিশের উপ-পুলিশ সুপারের পদটি হারাতে হয়েছে তাকে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাঞ্জাব সরকার তাদের তদন্তে পেয়েছে হরমনপ্রীত কৌরের সার্টিফিকেট ভুয়া ছিল।
এই বছরের শুরুর দিকে এই তারকা ব্যাটসম্যান পশ্চিম রেলের চাকুরি ছেড়ে দিয়ে পাঞ্জাব পুলিশের ডিএসপি পদে যোগ দান করেন। হরমনপ্রীত পাঞ্জাব পুলিশে চাকরি পেয়েছিলেন ভারতীয় মহিলা দলে খেলার সূত্রেই। গত বছর মহিলা বিশ্বকাপে ভারতের হয়ে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত পারফরমেন্স করেন এই ব্যাটসম্যান। এরপরই বিশ্বকাপ শেষে দেশে ফিরলে তাঁর সাফল্যে মুগ্ধ হয়ে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং তাঁকে ডিএসপির পদে নিয়োগ করেছিলেন। এই বছরের মার্চ মাসে হরমনপ্রীত কউর পুলিশের ডিএসপি পদে চাকুরীতে যোগ দান করেন। তবে ডিএসপি পদে যোগ দানের আগে তাকে কিছু সার্টিফিকেট জমা দিতে হয়েছিল যার ভিত্তিতে তাকে এই পদের যোগ্য বলে গণ্য করা হয়। কিন্তু এখন তদন্তের পর পুলিশ জানাচ্ছে, হরমনপ্রীত নিজের ডিগ্রির যে সমস্ত শংসাপত্র জমা দিয়েছিলেন সেগুলো আসলে জাল।
ভারতীয় মহিলা দলের এই অলরাউন্ডার দাবি করেছিলেন, ২০১১ সালে মীরাঠের চৌধুরী চরণ সিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি স্নাতক পাশ করেন। কিন্তু বাস্তবে খোঁজে নিয়ে দেখা যায় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে হরমনপ্রীতের নামে কোনও রেজিস্ট্রেশনই নেই যার মানে হচ্ছে হরমনপ্রীতের দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা ছিল।
এদিকে পাঞ্জাব পুলিশের এক কর্মকর্তা এ ব্যাপারে জানিয়েছেন সার্টিফিকেট জালিয়াতি করলেও তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলা করবেনা পুলিশ। তিনি বলেন, “যেহেতু খেলার মাঠে সাফল্যের নিরিখে তাঁকে চাকরিতে নিয়োগ করা হয়েছিল তাই হরমনপ্রীতের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে আমরা আর কোনও মামলা করার কথা ভাবছি না। তাছাড়া পরবর্তীকালে যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারলে তিনি আবার ডিএসপি পদে বহাল হতে পারবেন।”
তবে ভুয়ো ডিগ্রির খবরকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন হরমনপ্রীতের ম্যানেজার। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, পুলিশের তরফে সরকারিভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়ার কোনও চিঠি তাঁদের দেওয়া হয়নি। তাছাড়া একই সার্টিফিকেট দিয়ে রেলেও চাকরি পেয়েছেন হরমনপ্রীত তাই সার্টিফিকেটটি ভুয়ো হওয়ার প্রশ্নই আসে না।
উল্লেখ্য যে, গত মহিলা বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১১৫ বলে ১৭১ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছেন হরমনপ্রীত কৌর যা নিঃসন্দেহে বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা ইনিংস গুলোর মধ্যে একটি।