কেরিয়ার যখন শুরু করছিলেন, দুর্দান্ত ফিল্ডার হিসেবে ভারতীয় দলে নিজের আলাদা পরিচিতি করে নিয়েছিলেন। তারপরের সময়টা নানান ওঠা-নামার মধ্য়ে দিয়ে কেটেছে। তবে, যত দিন পেরিয়েছে, ভারতীয় ক্রিকেট থেকে ততই হারিয়ে গিয়েছেন সুরেশ রায়না। প্রতিভার কোনও অভাব নেই। কোনওদিন ছিলও না। কিন্তু, ধারাবাহিকতার অভাব উত্তরপ্রদেশের এই ক্রিকেটারটিকে দল থেকে বারবার বাইরে ঠেলে দিয়েছে। কামব্য়াক করেছেন, এটাও সত্য়ি। তবে, আবার দল থেকে ছিটকে যেতে সময়ও লাগেনি। গত তিন বছর সময়টা যেন আরও খারাপ চলছে। এক সময় যে ক্রিকেটারটি ফিল্ডিং দক্ষতায় যুবরাজ সিং ও বিরাট কোহলির পাশে নাম লিখিয়ে নিয়েছিলেন, আজ তাঁকেই ফিটনেসের কারণে অস্তিত্বের লড়াই করতে হচ্ছে।
২০১৫ সালে ভারতের একদিনের দল থেকে বাদ পড়েন রায়না। তারপর থেকে আর কোনও ওয়ান-ডে ম্য়াচ খেলার সুযোগ আসেনি ভারতের নীল জার্সি গায়ে। ফিল্ডিংয়ে নিজে যে স্ট্য়ান্ডার্ড তৈরি করেছিলেন, তার ধারেকাছেই যেতে পারছেন না সুরেশ। সে বছরই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন উত্তরপ্রদেশের এই ক্রিকেটারটি। বিয়ের পর ক্রিকেট জীবন যেমন বদলেছে, তেমনই ব্য়ক্তিগত জীবনও বদলেছে রায়নার। বাবা হয়েছেন। এখন মেয়ে গার্সিয়াকে দেখেই ফের ভারতীয় ক্রিকেটের মূল স্রোতে প্রত্য়াবর্তনের লড়াইয়ের অনুপ্রেরণা খোঁজার চেষ্টা করছেন তিনি।

হারানো ফিটনেস ফিরে পেতে রায়না এখন খুব খাটছেন। কিন্তু, অক্লান্ত পরিশ্রম করেও শ্রীলঙ্কায় একদিনের সিরিজে ভারতীয় দলে জায়গা হলো না। বেঙ্গালুরুর জাতীয় অ্য়াকাডেমিতে ‘ইয়ো-ইয়ো‘ টেস্ট ওতরাতে পারেননি। তবে, রায়না আশা করছেন, ২০১৯ বিশ্বকাপের আগেই ইংল্য়ান্ড যাওয়ার জন্য় ভারতীয় দলে নিজের হারানো জায়গাটা ফেরত নেবেন।
রায়না মতে তার মধ্য়ে এখনও যথেষ্ট ক্রিকেট বাকি রয়েছে। ভারতীয় দলকে দেওয়ার মতো অনেক কিছু এখনও রয়েছে তাঁর মধ্য়ে। তিনি বলেন, ”দু‘বছর আগে আমি যখন ট্রেনিং আর এসব নিয়ে ব্য়স্ত ছিলাম, সেসময় আমার স্ত্রী সন্তানসম্ভাবা হয়ে পড়ে। তখন আমি ভাবতে শুরু করেছিলাম, ক্রিকেট আমার জীবনের একটা অঙ্গ। ওটা ছাড়াও জীবন থেকে আরও অনেক কিছু উপভোগ করার রয়েছে। কিন্তু, এখন মেয়েকে দেখার পর, জীবনকে উল্টো দিক থেকে দেখছি – ক্রিকেটই আমার সবকিছু।”
রায়না মনে করেন, ভারতীয় দলে জায়গা ফিরে তাঁকে আরও সিরিয়াস হতে হবে, আরও ফোকাসড হতে হবে। মেয়ের জন্য় তাঁকে ভারতীয় দলে ফিরে আসতেই হবে। ”আমার আরও সিরিয়াস হওয়া উচিত ছিল, যাতে ভবিষ্য়ৎ সুন্দর হয়। আমি আমার স্ত্রীকে বলেছি, এটাই আমার জীবন, আমি আমাদের মেয়েকে ভালোবাসি, আমি তোমাকে ভালোবাসি, আমাদের পরিবারকে ভালোবাসি, কিন্তু আমি দেশের হয়ে খেলতে চাই। এখনও আমি চার-পাঁচ বছর ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যেতে পারব। আমার স্ত্রী আমায় বলেছে, সে সবসময় আমার পাশে আছে। আর আমার সবসিদ্ধান্তকে সমর্থন করবে।”