কোচের সঙ্গে দূর্ব্যবহার করার জন্য বড় শাস্তি পেতে পেতে কোনওভাবে বেঁচে গেলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য গৌতম গম্ভীর। চলতি বছরের ৬ই মার্চ ভুবনেশ্বরে বিজয় হাজারে ট্রফির একটি ম্যাচের মধ্যে দিল্লির কোচ ভাস্কর পিল্লাইয়ের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করার পাশাপাশি গৌতম গম্ভীরের বিরুদ্ধে তাঁর গায়ে হাত তোলার অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনা খতিয়ে দেখার জন্য চার সদস্যের কমিটি গড়েছিল দিল্লি ডিস্ট্রিক ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (ডিডিসিএ)। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ডিডিসিএ আইনজীবী বিক্রমজিৎ সেনের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। যে কমিটিতে বিচারপতি বিক্রমজিৎ সিংহের পাশাপাশি ছিলেন প্রাক্তন ক্রিকেটার মদনলাল, রাজেন্দ্র রাঠৌর এবং আইনজীবী সোনি সিংহ। ওই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে গম্ভীরের আচরণ যথাযথ ছিল না। সে কারণে গম্ভীরকে ঘরোয়া ক্রিকেটে চারটি ম্যাচের জন্য সাসপেন্ড করে ডিডিসিএ।
দিল্লি কোচের সঙ্গে খারাপ আচরণের জন্য শনিবার ওই চার সদস্যের কমিটি গম্ভীরকে প্রথম শ্রেনির ক্রিকেটে চার ম্যাচের জন্য সাসপেন্ড করে। বিচারপতি বিক্রমজিৎ সেন জানিয়েছেন, গম্ভীর এই রায় মেনে নিলে এবং একই অন্যায় ২০১৯ সালের ৩০শে মার্চ পর্যন্ত আর না করলে ওই দু্ই বছর মেয়াদের শাস্তির নিদান কার্যকর করা হবে না।
দিল্লির হয়ে বিজয় হাজারে ট্রফি খেলতে দলের সঙ্গে ওড়িশায় গিয়েছিলেন গৌতম গম্ভীর। সেখানে দলের কোচের সঙ্গে ঝামেলায় জড়ান গম্ভীর। সেখানে গম্ভীর কোচকে জানান, তিনি দলের তরুণ ক্রিকেটারদের তুলে আনার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারছেন না। তার পরেই দু’জনের মধ্যে ঝামেলা বেঁধে যায়। দিল্লির কোচ ভাস্কর পিল্লাইকে তিনি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার পরে নাকি গায়ে হাতও তুলে দেন। এটার পরে দিল্লি ডিস্ট্রিক ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন এই ব্যাপারে তদন্তের জন্য একটা কমিটি গঠন করে। তার পর এক প্রতিক্রিয়া বিক্রমজিৎ সেন বলেছিলেন, “আমাদের কমিটি ওই ঘটনার পূর্ণ তদন্ত করার পর কোচের সঙ্গে খারাপ আচরণ করার জন্য গম্ভীরকে দোষী সাবস্ত্য করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “একটা দলে কোচের পদটা বেশ সম্মানজনক। সেখানে এক সিনিয়র ক্রিকেটার গোটা দলের সামনে কোচকে অপমান করেছেন। গম্ভীর সেদিনের আচরণ জেনে বুঝে করেছেন। আর তার মানে এটা নয় যে তিনি দলের হিতে এমনটা করেছিলেন।”
ওই সমিতি এ ব্যাপারে আরও বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলের ক্রিকেটারদের যাবতীয় অভিযোগ শোনার জন্য নতুন একটা পদ্ধতি অবলম্বনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে রাজ্য ক্রিকেটে অনুশাসন রাখার জন্য কড়া একটি নিয়ম তৈরির পরিকল্পনা করছে তারা। যাতে আগামীদিনে দলে কেউ নিয়ম ভাঙার আগে যেন মাথায় রাখে, তার এই খারাপ আচরণের জন্য রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা তার বিরুদ্ধে কড়া সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এ ব্যাপারে বিক্রমজিৎ সেন বলেন, “রাজ্য ক্রিকেটে অনুশাসন আনার জন্য নতুন নিয়ম হওয়া উচিত। পাশাপাশি কেউ নিয়ম উলঙ্ঘন করলে, তার বিরুদ্ধে শাস্তি নির্ধারণ করতে হবে। ক্রিকেটে অনুশাসন বজায় রাখতে এটার প্রয়োজন রয়েছে। যখন ক্রিকেটাররা জেনে যাবে, নিয়ম ভাঙলে তাকে কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হবে, তখন তারা কিছু করার আগে দশবার ভাববে।”
উল্লেখ্য, দিল্লি কোচ ভাস্কর গম্ভীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও, নাইট নেতা তাতে অবশ্য বিশেষ গুরুত্ব দেননি। উল্টে গম্ভীরও কোচের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেন। দু’জনের সঙ্গে কথা বলেই গম্ভীরের বিরুদ্ধে এই সাজার কথা ঘোষণা করেছিল দিল্লি ডিস্ট্রিক ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের তদন্ত কমিটি।