১৯৩২ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়া ভারত খেলেছে ৫২৯টি ম্যাচ। অর্ধ সহস্র এই ম্যাচের মধ্যে ভরতের হয়ে সাদা পোশাক গায়ে জড়িয়েছেন ২৯৪ জন ক্রিকেটার। সর্বশেষ টেস্টের পোশাক গায়ে অভিষেক হয়েছে শার্দুল ঠাকুরের।
ভারতীয় ক্রিকেটের টেস্ট যাত্রা অনেক লম্বা পথ পারি দেওয়ার সাথে সাথে ক্রিকেটাররাও দেশের হয়ে বয়ে এনেছেন সম্মান পাশপাশি নিজের নামের পাশেও লিখিয়েছেন অসংখ্য রেকর্ড। শচীন তেন্ডুলকরের সর্বাধিক সেঞ্চুরি করা, সেহবাগের ত্রিপল সেঞ্চুরি কিংবা পঞ্চাশেরও অধিক ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরি হাঁকানো এমন সব অর্জন রয়েছে টিম ইন্ডিয়ার ক্রিকেটারদের।
তবে আজ আমরা জানবো এমনই ৫ জন ক্রিকেটারের কথা যারা তাঁদের টেস্ট ক্যারিয়ারে হাঁকিয়েছেন একটিমাত্র শতক!
৫. মহম্মদ কাইফ
২০০০ সালে অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ আসরে শিরোপা জয়ী অধিনায়ক মহম্মদ কাইফ জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়ানোর সুযোগ পান মূলত সেখান থেকেই। ঐ বছরই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় তাঁর। মাত্র ২০ বছর বয়সে টেস্ট অভিষেক হলেও ছয় বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারে মাত্র ১৩টি টেস্ট ম্যাচে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন কাইফ।
মিডল অর্ডারে ব্যাট করা এই ক্রিকেটার ২০০৬ সালে তাঁর খেলা সর্বশেষ টেস্ট সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৪৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। যা তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ারে একমাত্র সেঞ্চুরি। ২০১৮ সালের জুনে সব ধরণের ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন কাইফ।
৪. অজিত আগরকার
ভারতের হয়ে ২১৬তম ক্রিকেটার হয়ে টেস্টের ক্যাপ মাথায় দেয়া অজিত আগরকার সব ফরম্যাট মিলিয়ে ম্যাচ খেলেছেন দুইশতাধিক। যেখানে লঙ্গার ভার্সনের ম্যাচ ছিল ২৬টি। মূলত বোলার হিসেবে পরিচিত অজিত তাঁর একমাত্র সেঞ্চুরিটি হাঁকিয়েছেন লর্ডসে। ১৯০ বলে ১০৯ রানের ইনিংস খেলার পাশাপাশি তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ারে ফিফটিও হাঁকিয়েছেন মাত্র একটি।
পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০০৬ সালে সর্বশেষ টেস্ট ম্যাচ খেলেন এই ক্রিকেটার। প্রতিভাবান এই ক্রিকেটার সাদা পোশাকের ক্যারিয়ারে সর্বমোট ৫৮ উইকেট নিয়েছেন, তাঁর ইনিংস সেরা বোলিং ৬/৪১।
৩. ইরফান পাঠান
মাত্র ১৯ বছর বয়সেই টিম ইন্ডিয়ার হয়ে সব ফরম্যাটে অভিষেক হওয়া ইরফান পাঠান জহির খানের সাথে জুটি বেধে দীর্ঘদিন ভারতীয় পেস বোলিং লাইনআপ সামাল দিয়েছেন।
পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচে হ্যাটট্রিক করা এই পেসার তাঁর ক্যারিয়ারে নিয়েছেন ১০০ উইকেট। বাঁহাতি এই বোলার ব্যাট হাতেও সাদা পোশাকে সহস্রাধিক রান করেছেন যেখানে তাঁর একমাত্র সেঞ্চুরিটি পাকিস্তানের বিপক্ষে। সৌরভ গাঙ্গুলির ২৩৯ সর্বোচ্চ ইনিংস খেলার ম্যাচে পাঠান ১২৯ বল মোকাবেলায় করেছেন ১০২ রান।
২০০৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সবশেষ টেস্ট ম্যাচ খেলা ইরফান ২০১২ সালে তাঁর সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন।
২. দীনেশ কার্তিক
ঘরের মাঠ ওয়াংখেরে স্টেডিয়ামে অজিদের বিপক্ষে ১৯ বছর বয়সে অভিষেক হয় দীনেশ কার্তিকের। তবে ভারতীয় ক্রিকেট ‘ধোনি যুগে’ থাকার ফলে হয়তো কিছুটা কম সময় জাতীয় দলের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছেন তিনি।
১৪ বছরের ক্যারিয়ারে মাত্র ২৬ টেস্ট ম্যাচ খেলা এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মিডল অর্ডারে ব্যাট করলেও ২০০৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওপেনিং পজিশনে ব্যাট করে ফিফটি হাঁকান কার্তিক। ২০০৭ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে প্রথম তিন অঙ্কের দেখা পান তিনি। অন্যদিকে একই বছর ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও সর্বাধিক রান সংগ্রাহকের তালিকায় ছিলেন।
বর্তমানে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে টিম ইন্ডিয়ার হয়ে মাঠ মাতালেও সর্বশেষ ইংল্যান্ড সফর চলাকালে লঙ্গার ভার্সনে ঋষভ পন্থের কাছে জায়গা হারান এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান।
১. অনিল কুম্বলে
ভারতীয় বোলারদের মধ্যে টেস্টে ৬১৯ উইকেট নিয়ে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সফল বোলার অনিল কুম্বলে। তাঁর ১৮ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু হয় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯৯০ সালে।
জিম ল্যাকারের পর বিশ্বে দ্বিতীয় বোলার হিসেবে টেস্টে এক ইনিংসে ১০ উইকেট নেয়ার কৃতিত্ব অর্জন করা কুম্বলে সর্বমোট খেলেছেন ১৩৯টি টেস্ট। তাঁর এই লম্বা ক্যারিয়ারে ব্যাট হাতে পাঁচটি ফিফটি এবং একটি সেঞ্চুরির সাহায্যে করেছেন ২৫০৬ রান। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওভালে ১১০ রানের ইনিংস খেলেন অনিল কুম্বলে।
২০০৮ সালে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে তাঁর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি টানেন। অন্যদিকে ২০১৬ সালে ভারত জাতীয় দলের কোচের দায়িত্বও পালন করেন এই স্পিন যাদুকর।