ঘরের মাঠের অ্যাডভান্টেজ নিয়ে বৃহস্পতিবার কটকে তিন ম্যাচের সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ১৫ রানে হারিয়ে গোটা সিরিজটাই জিতে নিল ভারত।যদিও সেটার চেয়ে এই মুহূর্তে ভারতীয় ক্রিকেটে আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বারাবাটিতে যুবি-ধোনির ২৫৬ রানের জুটি।বিশেষ করে যুবরাজের ১৫০ রানের ঝকঝকে ইনিংসটি।দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে প্রায় তিন বছর পর জাতীয় দলে ফিরে একটা কঠিন পরিস্থিতিতে দলের হয়ে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে নিজের ক্রিকেট জাত চেনালেন তিনি।বর্তমান সময়ে যেখানে ভারতীয় দলে তারকাদের ভিড়, সেখানে অভিজ্ঞ ধোনির কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই ধরণের একটা মারকাটারি ইনিংস খেলে টিমে নিজের গুরত্ব আবারও বুঝিয়ে দিতে যুবি সফল হলেন।কটকের ওই ইনিংস খেলে তিনি বুঝিয়ে দিলেন, সীমিত ওভার ক্রিকেটে মিডল অর্ডারে তাঁর এখনও দলকে অনেককিছু দেওয়ার বাকি আছে।
প্রায় ছ’বছর পর জাতীয় দলের জার্সি গায়ে শতরান হাঁকিয়ে রাতারাতি তিনি ফের সংবাদের শিরোনামে চলে এসেছেন।দলে নিজের জায়গা পাকা করে নেওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার তিনি ১৫০ রানের যে ইনিংসটি খেললেন, সেটা যুবির ওয়ানডে কেরিয়ারের সর্বোচ্চ ব্যাক্তিগত স্কোর। জাতীয় দলে কামব্যাক পর্বে ২২ গজে তিনি ব্রিটিশ বোলারদের এভাবে খড়-কুটোর মতো উড়িয়ে দেবেন, তা তাঁর সমালোচকেরাও ভাবতে পারেননি। মাঝে কানাঘুষো চলছিল, তিনি নাকি তরুণ কোহলির দলের জন্য একেবারে ফিট নন। সে প্রসঙ্গে যুবি বলেন, ‘সত্যি বলতে, আমি খবরের কাগজ পড়ি না। টেলিভিশন দেখি না। কে কোথায় কী বলেছেন, তা নিয়ে আমার কোনও মাথাব্যথা নেই। আমি জানি ক্যাপ্টেন বিরাট আমার ওপর আস্থা রেখেছে। গোটা দল রেখেছে। সেটাই সবচেয়ে বড় উপলব্ধি।আমি শুধু নিজের খেলার ফোকাস করে গিয়েছি।এবং এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য আমি এখনও দূর্দান্ত, সেটাই প্রমাণ করতে চেয়েছিলাম।আমার মনে হয়, শেষমেশ সেটা করতে পেরেছি।’
মারণ রোগ ক্যান্সারকে হার মানিয়ে জাতীয় দলে কামব্যাকের বিষয়টা যে খুব কঠিন, সেটা প্রতিটা পদক্ষেপে বেশ বুঝেছেন যুবি।এ বিষয়ে তিনি বলেন,‘ ক্যান্সার থেকে সুস্থ হয়ে ফেরার পরের সময়টা আমি ভুলিনি। প্রচুর কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিল আমাকে। আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়। তবে আমি কখনও মাঠে এবং মাঠের বাইরের লড়াই ছেড়ে দিইনি। সবসময় নিজের সঙ্গে নিজে লড়াই করতাম। আমাকে ব্যাট হাতে সফল হতেই হবে। ওই সময় বছর দুই–তিন আমার যে কী কেটেছিল, তা আমিই জানি। সুতরাং আবার বড় রানে ফিরতে পেরে সত্যি খুব ভাল লাগছে।’ বারাবাটির নিজের ইনিংস প্রসঙ্গে যুবি বলেন, ‘ওয়ানডে ম্যাচে ৫০ সবসময়ই বড় রান। তার চেয়েও বড় কথা হল, আমি নিজেকে ছাপিয়ে গেলাম। এটাই আমার এখন সর্বোচ্চ রান। দারুণ লাগছে।’ টিম ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারত আর মাত্র একটি ওয়ানডে ম্যাচ খেলবে। সে ম্যাচের পর টিম কোহলি ইংল্যান্ডে উড়ে যাবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে।কটকের মারকাটারি পারফরম্যান্সের পর ভারতের একদিনের দলে যুবি যে থাকছেন, তাতে আর কোনও সন্দেহ নেই।