মহেন্দ্র সিং ধোনি। যবে থেকে ভারতীয় ক্রিকেটে পা রেখেছেন, আলোচনার ক্রেন্দ্রবিন্দুতে থেকেছেন। বলা ভালো, লাইমলাইট শুঁষে নেওয়ার জন্মগত প্রতিভা রয়েছে তাঁর মধ্য়ে। টেস্টের আসর থেকে অবসর নেওয়ার পর (প্রায় তিনবছপ হতে চলল) এখন শুধু সীমিত ওভারের ক্রিকেটে খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন। শ্রীলঙ্কায় টেস্ট সিরিজ চলার সময়, তাঁকে নিয়ে আলোচনাটা সাময়িক বন্ধ ছিল। কিন্তু, ওই ক্ষণিকের বিরতি। সাদা জার্সির ক্রিকেট সিরিজ শেষ হতেই এমএসডি আবার খবরে।
রবিবার থেকে ডাম্বুলায় পাঁচ ম্য়াচের একদিনের ক্রিকেট সিরিজ শুরু হচ্ছে শ্রীলঙ্কা ও ভারতের মধ্য়ে। সবার নজর এখন মহেন্দ্র সিং ধোনি কেমন পারফর্ম করেন, তার ওপর। শ্রীলঙ্কা সিরিজের জন্য় গত রবিবার যখন দল বাছাই হয়, তখন দেখা যায়, তিন সিনিয়র ক্রিকেটারের মধ্য়ে যুবরাজ সিং ও সুরেশ রায়নাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। মহেন্দ্র সিং ধোনিকে দলে রাখা হয়েছে। তবে, অটোমেটিক চয়েস নন। সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু, ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করতে হবে। না হলে সরে যেতে হবে ২০১৯ বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নকে ভুলে।
২০১৬ বছরটা একেবারেই ভালো যায়নি ভারতের প্রাক্তন অধিনায়কের। তেরো ম্য়াচে মাত্র ২৭৮ রান। গড় ২৭.৮০। বোঝাই যাচ্ছে, এইভাবে ব্য়র্থ হতে কোনওদিনই মাহিকে দেখতে অভ্য়স্ত নয় ক্রিকেট বিশ্ব। এবছর শুরুটা ১৩৪ রান দিয়ে ইংল্য়ান্ডের বিরুদ্ধে। সবাই ভেবেছিলেন, মাহি তাহলে গতবছরের জড়তা কাটিয়ে গা ঝাড়া দিয়ে উঠলেন। ব্য়াডপ্য়াচ তাহলে কেটে গিয়েছে। কিন্তু, তারপর থেকে ফের শান্ত হয়ে পড়েছে ধোনির ব্য়াট। ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে ধীরগতির এমন একটি ইনিংস খেলে বসেন যে তাঁর অতি বড় সমর্থককেও বোর হতে হয়েছে। ১১৪ বলে ৫৪ রান করেন বিশ্বের সর্বকালের অন্য়তম সেরা ম্য়াচ ফিনিশার। ১৯০ রানের লক্ষ্য়মাত্রা তাড়া করতে নেমে ভারত ম্য়াচটি ১১ রানে হারে। সত্য়ি কথা, দলে তো আরও দশটা ক্রিকেটার ছিলেন, তাঁরা কি করছিলেন? তবে, ভুলে গেলে চলবে না, ধীরগতির ইনিংস খেলা ক্রিকেটারটির নাম মহেন্দ্র সিং ধোনি। ফলে, তাঁকে ওভাবে খেলতে দেখে সমালোচনা হওয়াটা স্বাভাবিক।
শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সীমিত ওভারের ক্রিকেট সিরিজের দল নির্বাচনের পর প্রধান নির্বাচক ধোনিকে ডেকে সতর্ক করে দিয়েছেন, ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ খেলতে হলে পারফর্ম করতে হবে। তারপর আবার মিডিয়াতে প্রাক্তন টেনিস স্টার আন্দ্রে আগাসির প্রসঙ্গ টেনে এনে উৎসাহ দেওয়ার নামে ধোনিকে বয়সের খোঁটা দিয়েছেন নির্বাচক মণ্ডলীর চেয়ারম্য়ান মান্নাভা প্রসাদ। এই কথা শোনার পর ধোনিও চুপ করে বসে থাকার পাত্র নন। নির্বাচনের আগের দিন সবাইকে দেখিয়ে দিয়েছেন ভারতকে বিশ্বকাপ এনে দেওয়া অধিনায়ক – ছত্রিশ বছর বয়সে এসেও তিনি এখনও দলের তরুণ ক্রিকেটারদের থেকেও অনেকটা বেশি ফিট। আর বরাবর পারফর্ম করে জবাব দেওয়া অভ্য়াস বলে নেটে জোর অনুশীলন করছেন। সিরিজ না শুরু হলে মাঠে নামার উপায় নেই। আর তাই ধোনির রোষ গিয়ে পড়েছে বোলারদের ওপর। নেটে ব্য়াটিং প্র্য়াক্টিস করার সময় স্থানীয় বোলারদের যেমন পেটাচ্ছেন, তেমনই তার হাতে বেদম পিটুনি খেতে হচ্ছে ভারতীয় দলের বোলারদেরও।