ভারতীয় ক্রিকেট দলের গুনতি বিশ্বের সবচেয়ে ভাল দলগুলির মধ্যে হয়। তা সত্ত্বেও ড্রেসিংরুমে এমন কিছু সত্যি রয়েছে যা কেউ জানেন না। এই ঘটনার ব্যাপারে খেলোয়াড়রা হয় নিজের আত্মজীবনীতে নয়ত অবসর নেওয়ার পর কোনো ইন্টারভিউতে খোলসা করেন। আজ আমরা আপনাদের এমনই ৫টি ঘটনার ব্যাপারে জানাতে চলেছিল।
৫. শচীন আর রাহুল দ্রাবিড়
ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক রাহুল দ্রাবিড় আর শচীন তেন্ডুলকরকে ভাল বন্ধু হিসেবে মানা হয়। দুজনে এক সঙ্গে যথেষ্ট ক্রিকেট খেলেছেন। ২—৪ এ সৌরভ গাঙ্গুলীর অনুপস্থিতিতে রাহুল দ্রাবিড় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মুলতান টেস্টে অধিনায়ক ছিলেন। শচীন যখন ১৯৪ রানে ব্যাটিং করছিলেন সেই সময় দ্রাবিড় ইনিংস সমাপ্তি ঘোষণা করে দেন। এই ব্যাপারে খোলসা করতে গিয়ে শচীন একবার জানিয়েছিলেন যে তিনি ড্রেসিংরুমে পৌঁছনোর পর দ্রাবিড়কে বলেছিলেন, “আমাকে একলা ছেড়ে দাও”। তিনি এমনটা এই কারণে বলছিলেন কারণ যা হয়েছিল তা থেকে বেরতে তার সময়ের প্রয়োজন ছিল।
৪. দাউদ ইব্রাহিম
আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিম মুম্বাই বিস্ফোরণের দোষী আর ভারত সরকার দীর্ঘ সময় ধরে তাকে খুঁজে চলেছে। তিনি একবার ভারতীয় ড্রেসিংরুমে নিজেকে একজন বড়ো ব্যাবসায়ী পরিচয় দিয়ে ঢুকে পড়েছিলেন। তিনি দলকে ব্যাবসায়ী হিসেবে পরিচয় দেন আর ১৯৮৭তে শারজা কাপএ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচ জেতার জন্য প্রত্যেক খেলোয়াড়কে গাড়ি উপহার দেওয়ার কথা বলেন। এই ঘটনার খোলসা প্রাক্তন অধিনায়ক দিলীপ বেঙ্গসরকার করেছিলেন।
৩. অনিল কুম্বলেকে ১০ উইকেট নেওয়া থেকে আটকানো
ভারতীয় দলের লেগ স্পিনার অনিল কুম্বলে টেস্টে এক ইনিংসে ১০টি উইকেট নেওয়া বিশ্বের মাত্র দ্বিতীয় বোলার। তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৯৯৯তে দিল্লি টেস্টে এই কৃতিত্ব করে দেখিয়েছিলেন। এই ম্যাচে দশম উইকেট হিসেবে ক্রিজে পাকিস্তানের ওয়াসিম আক্রম আর ওয়াকার ইউনিস ছিলেন। ওয়াসিম এই ম্যাচের পর অনেক পরে খোলসা করেছিলেন যে কুম্বলে ৯ উইকেট নেওয়ার পর ওয়াকার ইউনিস তাকে রান আউট হওয়ার ব্যাপারে কথা বলেছিলেন। যদিও ওয়াসিম এ ব্যাপারে পরিস্কার মানা করে দিয়েছিলেন। শেষ কুম্বলে আক্রামকে আউট করে ১০ উইকেট পূর্ণ করেছিলেন।
২. গাঙ্গুলী আর সিধুর উপর বন্দুক তাক
সৌরভ গাঙ্গুলী ১৯৯৬ এর ইংল্যান্ড সফরে নিজের টেস্ট ডেবিউ করেছিলেন। ইয়ান বোথাম নিজের আত্মজীবনী বিফি’স ক্রিকেট টেলস ( Beefy’s Cricket Tales) এ খোলসা করেছিলেন যে লন্ডনে তার আর নভজ্যোত সিং সিধুর উপর ওই সফরে বন্দুক তাক করে হয়েছিল। সেখানে ট্রেনে কোনো এক ব্যক্তি গাঙ্গুলীকে বিয়ারের বোতল দিয়ে মেরে দিয়েছিল। তা দেখে নভজ্যোত সিং সিধু তার সঙ্গে লড়ে যান। এরপর ঘটনা যথেষ্ট বেড়ে যায় আর সামনের জন এই দুজনের উপর বন্দুক তাক করেন। গাঙ্গুলী সেই ব্যক্তিকে ধাক্কা দিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়াই উচিত কাজ মনে করেন। গাঙ্গুলী তার আত্মজীবনীতে এই ঘটনার ব্যাপারে লিখেছেন যে বন্দুক দেখে এক মুহূর্তের জন্য তার মনে হয়েছিল যে আজ এই ট্রেনেই তার জীবন সমাপ্ত হয়ে যাবে।
১. কপিল দেবের কান্না
ভারতীয় দলের বেশ কিছু খেলোয়াড়ের নাম ২০০০ সালে ম্যাচ ফিক্সিংয়ে যোগ হয়ে গিয়েছিল। এরমধ্যে মনোজ প্রভাকর, মহম্মদ আজহারউদ্দিন, অজয় জাদেজার নাম ছিল। এই খেলোয়াড়দের বিসিসিআই আজীবন ব্যান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই সময় এতে কোচ কপিলদেবের নামও টানা হয়েছিল। জাতীয় টিভিতে কপিলদেব চোখের জল ফেলতে ফেলতে বলেছিলেন যে আমি কারো কাছে ঘুষ নেওয়ার চেয়ে তার আগে আত্মহত্যা করব। আমার সমস্ত টাকা পয়সা নিয়ে নাও এসব আমি চাই না। আমি এমন পরিবার থেকে উঠে এসেছি যেখানে গর্ব সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস।