অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে ২০১৫ বিশ্বকাপের আসর সমাপ্তি হয়েছে অনেক আগেই। তার চার বছর পর ২০১৯ বিশ্বকাপের নৌকা নোঙর করেছে ইংল্যান্ডের বন্দরে। গত বিশ্ব আসরে প্রায় সবকয়টি দলকেই দেখা গেছে আক্রমনাত্বক ব্যটিং করে রানের পাহাড় তৈরি করতে। যেখানে পুরো আসর জুড়ে ব্যটিংয়ের স্ট্রাইকরেট গড়ে ছিল ৮৮.৯৭। একদিনের ক্রিকেটে এমন স্ট্রাইকরেট নিয়ে ব্যাট করা ছিল যেকোনো বিশ্বকাপ আসরের সর্বোচ্চ স্ট্রাইকরেট।
অন্যদিকে বোলাররাও কম যাননি। কন্ডিশনের সুবিধা কাজে লাগিয়ে পেস বোলাররা যেভাবে ফায়দা তুলে নিয়েছেন তেমনি বিশ্ব মানের স্পিনাররাও উইকেট নিয়েছেন পাল্লা দিয়ে।
এবার দেখে নেওয়া যাক ২০১৫ বিশ্বকাপ আসর থেকে বিশ্বের সেরা পাঁচজন বোলারের তালিকা।
৫. ইমরান তাহির
২০১১ বিশ্বকাপে অভিষেক হবার পর থেকেই দক্ষিণ আফ্রিকা দলের হয়ে স্পিন ভেল্কি দেখিয়ে যাচ্ছেন তাহির। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মত কন্ডিশনে যেখানে পেসাররা বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকে সেখানে এই লেগি একাই প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করেছেন বল হাতে।
গত বিশ্ব আসর থেকে শুরু করে বর্তমান সময়েও ইমরান তাহির ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন ৫ এর চেয়ে কম করে। ২০১৫ বিশ্বকাপ থেকে শুরু এখন পর্যন্ত ৫০ ওয়ানডেতে তাহির তাঁর ঝুলিতে পুরেছেন ৭৯টি উইকেট। তাঁর এই উইকেট সংগ্রহ করতে ম্যাচপ্রতি রান খরচ করতে হয়েছে ২৬.৬৩ করে এবং ওভারপ্রতি খরচ করেছেন ৪.৯১ রান করে। আগামী বিশ্বকাপেও হয়তো এই স্পিনার তাঁর জাদু দেখাতে প্রস্তুত থাকবেন।
৪. ট্রেন্ট বোল্ট
বাইশ গজে অগ্নিঝরা গতি দিয়ে বল করা কিউই বোলার ট্রেন্ট বোল্ট মিচেল স্টার্কের পর সবচেয়ে দ্রুত গতির বোলার হিসেবে বিবেচিত রয়েছেন বর্তমান। ডেথ বোলার স্পেশালিস্ট বোল্ট টিম সাউদির সাথে জুটি বেধে বল করে জিতিয়েছেন বহু ম্যাচ। তাছাড়া ২০১৫ বিশ্বকাপে তাঁর সুইং এখনো গেঁথে আছে ক্রিকেট ভক্তদের মনে। গত বিশ্ব আসর থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ৪১টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলা এই পেসার দখলে নিয়েছেন ৮২টি উইকেট। তাঁর ম্যাচপ্রতি রান খরচের মাত্রা গিয়ে ঠেকেছে ২৪.২৪৬’এ। অন্যদিকে ওভারপ্রতি গড়ে রান দিয়েছেন ৫.৩৯। কিউই এই পেসার বর্তমানে আইসিসি বোলারদের ওয়ানডেতে র্যাঙ্কিংয়ে রয়েছেন ২য় স্থানে। তাই তাঁর এই অবস্থান ধরে রেখে আগামী আসরেও নিজের সেরাটা ঢেলে দিতে চাইবেন এই পেসার।
৩. কাগিসো রাবাদা
সেরা পাঁচ বোলারের তালিকায় দ্বিতীয় দক্ষিণ আফ্রিকান বোলার হিসেবে যার নামটি আসে তিনি হলেন কাগিসো রাবাদা। ওয়ানডে ফরম্যাটে বাংলাদেশের বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচেই হ্যাটট্রিক সহ মাত্র ১৬ রান খরচায় ৬ উইকেট নেন এই প্রতিভাবান পেসার।
আরও পড়ুন :জসপ্রীত বুমরাহর প্রেমে মজেছেন এই সুন্দরী অভিনেত্রী
ডানহাতি কিংবা বাঁহাতি যেকোনো ব্যাটসম্যানকেই গতির কাছে হার তো মানানোর পাশাপাশি তাঁর বাউন্স খেলতেও হিমশিম খেতে হয় বিশ্বসেরা ব্যাটসম্যানদের। গত বিশ্বকাপের পর থেকে ৫৪টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে ম্যাচপ্রতি ২৬.০৯ গড় ও ওভারপ্রতি ৫.০৩ গড়ে উইকেট নিয়েছেন ৮৬টি। তাই বিশ্বকাপের আগামী আসরে রাবাদাই হতে পারেন দক্ষিণ আফ্রিকার তুরুপের তাস।
২. আদিল রশিদ
ইংল্যান্ড জাতীয় দলের ওয়ানডে ফরম্যাটে নিয়মিত মুখ আদিল রশিদ দলের কাণ্ডারি হয়ে আবির্ভূত হন যখন প্রতিপকক্ষের ব্যাটসম্যানরা মাটি কামড়ে পিচে থাকতে চান। প্রতিভাবান এই স্পিনার ভারতের বিপক্ষে সাম্প্রতিক সময়ে ছিলেন অনেকটাই উজ্জ্বল। বিশেষ করে কোহলির মত বিশ্বসেরা ব্যাটসম্যানের উইকেট কয়েকবার তাঁর ঝুলিতে পুরেছেন।
শুধু বল হাতেই নয় ব্যাট হাতেও দলের বিপর্যয় সামাল দেয়ার সামর্থ্য রাখা এই ক্রিকেটার গত বিশ্বকাপ থেকে এখন পর্যন্ত ৬৮টি ওয়ানডে ম্যাচে ইংল্যান্ডের জার্সি গায়ে মাঠে নেমে ম্যাচপ্রতি ২৯.৯০ গড়ে এবং ওভারপ্রতি ৫.৫০ গড়ে রান খরচ করে নিয়েছেন ১১০ উইকেট।
১. রশিদ খান
ক্রিকেট বিশ্বে সবচেয়ে কম সময় ধরে খেলে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পাওয়া বোলার সম্ভবত আফগান রশিদ খান। অনুর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে নিজের স্পিন জাদু দেখিয়ে নজর কাড়া রশিদ এখনো পূর্ণ করেননি নিজের জীবনের ২০টি বসন্ত।
ওয়ানডে ক্রিকেটে সবচেয়ে দ্রুত ১০০ উইকেট নেয়ার ক্ষেত্রে তিনি পেছনে ফেলেছেন অজি ফাস্ট বোলার মিচেল স্টার্ককে। রান দেয়ার ক্ষেত্রে অতি কৃপণ এই বোলার গড়ে প্রতি ২২টি বল করে একটি করে উইকেট নিয়েছেন এখন পর্যন্ত। অন্যদিকে ২০১৫ বিশ্বকাপের পর থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ৫২টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে ১১৮ বার ব্যাটসম্যানদের প্যাভিলিয়নের পথ দেখিছেন। তাঁর ম্যাচপ্রতি রান খরচের পরিমাণ মাত্র ১৪.৪৪ আর ওভারপ্রতি খরচ করেছেন ৩.৯ রান করে।
আরও পড়ুন:বিশ্ব সুন্দরী ধোনিকে দিলেন মন, বললেন মনের কথা
শুধু কি তাই প্রতিভাবান এই ক্রিকেটার ওয়ানডেতে অলরাউন্ডারদের র্যাঙ্কিংয়েও রয়েছেন প্রথম স্থানে। তাই আগামী বিশ্ব আসরে এই স্পিনারকে সামাল দিতে হয়তো কষ্ট হতে পারে বড় বড় দলগুলোর ব্যাটসম্যানদের।