গতকাল শুক্রবার ২৮ সেপ্টেম্বর ইউএইর দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে চলতি এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। এই ম্যাচে টস জিতে ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেয়। এই ম্যাচের শুরুয়াত দুর্দান্তভাবে করে বাংলাদেশ। তাদের দুই ওপেনার লিটন দাস আর মেহেন্দি হাসান প্রথম উইকেট জুটিতে ১২০ রান যোগ করেন যা ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের প্রথম উইকেট জুটিতে সবচেয়ে বড় পার্টনারশিপ। কিন্তু কেদার যাদবের বলে মেহেন্দি হাসান আউট হওয়ার পর বাংলাদেশের মিডল অর্ডার তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়ে। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ৪৮.৩ ওভারে মাত্র ২২২ রানেই অলআউট হয়ে যায়। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ভারতীয় দলের শুরুয়াত অন্যান্য ম্যাচের মত ভালো হয় নি। ভারতের দুই ওপেনার শিখর ধবন এবং রোহিত শর্মা মাত্র ৩৫ রানই যোগ করতে পারেন। এই ম্যাচে ভারতের মিডল অর্ডার ব্যর্থ হন। চতুর্থ উইকেটের জন্য দীনেশ কার্তিক এবং ধোনি ৫৪ রান যোগ করেন। শেষ দিকে ভারতীয় দলের লোয়ার মিডল অর্ডারের সৌজন্যে শেষ বলে এই ম্যাচ জিতে নেয় ভারতীয় দল। আসুন একবার দেখে নেওয়া যাক এই ম্যাচে কি কি রেকর্ড নথিভূক্ত হল।
১—এটাই প্রথমবার যখন ভারত কোনও ওয়ানডে ম্যাচে রান তাড়া করা শেষ করল ম্যাচের শেষ বলে। অন্যদিকে ২০০৬ এ হারারে ওয়ানডেতে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে হারার পর এটাই দ্বিতীয়বার যখন বাংলাদেশ এইভাবে দারুণ খেলেও শেষ বলে ম্যাচ হারল।
১—একই আন্তর্জাতিক ম্যাচে মেহেন্দি হাসান বাংলাদেশের প্রথম প্লেয়ার যিনি ব্যাট এবং বল দুই ক্ষেত্রেই ওপেন করলেন। এছাড়াও এই ম্যাচে প্রথমবার মেহেদি হাসান তার প্রফেশনাল কেরিয়ারে প্রথমবার ব্যাট হাতে ইনিংস ওপেন করলেন।
২—এটা দ্বিতীয় উদাহরণ যখন কোনও দল ওয়ানডে ফাইনালে শেষ বএ রান তাড়া করা শেষ করল। এর আগে ১৯৮৬ সালে অস্ট্রাল এশিয়া কাপে ভারতের বিরুদ্ধে জাভেদ মিঁয়াদদ শেষ বলে ছয় মেরে পাকিস্থানকে জিতিয়ে ছিলেন।
৬—৬ বার খেতাব জিতে ভারত এশিয়া কাপের সবচেয়ে সফল দল হওয়ার গৌরব অর্জন করল। শ্রীলঙ্কা দল পাঁচবার এই খেতাব জিতেছে। ভারত সাতবার এশিয়াকাপ সংস্করণ জিতেছে যার মধ্যে ২০১৬র একমাত্র এশিয়াকাপ টি২০ প্রতিযোগিতাও রয়েছে। সাতবার এশিয়া কাপ জেতা ভারতই বিশ্বের একমাত্র দল।
৬—নিজের পেশাদার কেরিয়ারে রোহিত শর্মা অধিনায়ক হিসেবে খেলা তার ৬টি ফাইনালই জিতলেন। তিনি চারটি টি২০ ফাইনাল জিতেছেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে এবং দুটি ফাইনাল জিতেছেন ভারতের হয়ে আর দুটিই ছিল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে।
৫৪—দীনেশ কার্তিক আর মহেন্দ্র সিং ধোনির মধ্যে হওয়া ৫৪ রানের পার্টনারশিপ গত ১৯টি একদিনের মধ্যে প্রথমবার ৫০ রানের পার্টনারশিপ, চতুর্থ বা তার নীচের উইকেট জুটিতে যার মধ্যে রোহিত, ধবন এবং কোহলি মজুত নন। এই ধরণের তাদের শেষ ৫০ রানের পার্টনারশিপ হল ২০১৭য় পুণে ওয়ানডে ম্যাচে, যেখানে কার্তিক চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৫৯ রান যোগ করেছিলেন হার্দিক পান্ডিয়ার সঙ্গে।
৩১৭—এত সংখ্যক রান এই এশিয়া কাপে রোহিত শর্মা করেছেন। এমএস ধোনির পর (৩২৭ রান ২০০৮) তিনি মাত্র দ্বিতীয় অধিনায়ক যিনি একটি এশিয়া কাপে ৩০০+ স্কোর করেছেন।
৭০০—এই জয় ওয়ানডে আন্তর্জাতিকের ভারতের ৭০০ তম জয়। অস্ট্রেলিয়া (৯৯৫) এবং ইংল্যান্ডের (৭৬৭) পর তারা তৃতীয় দল যারা ৭০০ ওয়ানডে আন্তর্জাতিক ম্যাচ জিতেছে।
৮০০—এই ম্যাচে দুটি স্ট্যাম্প করে এমএস ধোনি তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৮০০ শিকার পূর্ণ করলেন। তিন ফর্ম্যাটেই তিনি তৃতীয় উইকেটকিপার হিসেবে ৮০০ শিকার ধরলেন।
২০০২—শেষ উদাহরণ হিসেবে ভারত শেষবার একদিনের ক্রিকেটে ২০০+ রান সফল ভাবে তাড়া করেছিল কোনও প্লেয়ারের হাফ সেঞ্চুরি ছাড়াই ২০০২ সালে, যখন তারা ওভালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ২০৩ রান তাড়া করে জিতেছিল।