বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের নিয়মিত ক্রিকেটার অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের বিরুদ্ধে স্ত্রী নির্যাতনের মামলা করেছেন তাঁর দীর্ঘদিনের জীবনসঙ্গিনী সামিরা শারমিন। গতকাল মামলা দায়ের করার পর রাতে গণমাধ্যমে সংবাদটি আসে। মোসাদ্দেকের স্ত্রী তাঁর আদি শহর ময়মনসিংহের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ নং আমলি আদালতে এই মামলাটি করেছেন। এমন সংবাদে তোলপাড় বাংলাদেশের ক্রিকেট পাড়ায়।
সংবাদ মাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী জানা যায় যে, ৬ বছর আগে ২০১২ সালে নিজের আপন খালাতো বোন সামিয়া শারমিনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন মোসাদ্দেক হোসেন। বিয়ের পর মোসাদ্দেক ক্রিকেট খেলার কারনে ঢাকাতে থাকলেও নিজ স্ত্রীকে ময়মনসিংহতেই রেখে আসতেন। আর এর মধ্যেই এই ক্রিকেটার অনেক অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়েছেন বলে দাবি তাঁর স্ত্রীর। বিয়ের পর শুরুর দিকে মোসাদ্দেকের সংসার সুখেরই ছিল তবে বাংলাদেশ জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার পর থেকেই নাকি তাঁর নৈতিক অবক্ষয় শুরু হয়।
সামিয়া শারমিনের বড় ভাই মোজাম্মেল কবির এ ব্যাপারে জনপ্রিয় বাংলাদেশি সংবাদ মাধ্যমে জাগোনিউজ২৪ এর সাথে কপোপকথনে জানান, “সৈকত (মোসাদ্দেক হোসেন) আমার খালাতো ভাই। পারিবারিকভাবে মেলামেশা থেকেই আমার ছোট বোন সামিয়া শারমিনের সঙ্গে পরিচয় এবং যা পরবর্তীতে বিয়েতে গড়ায় এবং আমরা বিষয়টা মেনেও নেই। ছয় বছর আগেই তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর কয়েক বছর ভালো কাটলেও যখনই মোসাদ্দেক সৈকত জাতীয় দলে নিয়মিতভাবে সুযোগ পাওয়ার পর থেকেই তার নৈতিক স্থলন ঘটতে শুরু করে।”
মোজাম্মেল অভিযোগ করে আরো বলেন, “সে (মোসাদ্দেক) ঘরে বসে বন্ধুদের নিয়ে মদপান করতে শুরু করে। অন্য নারীতে আকৃষ্ট হওয়া, তথা নানা অসামাজিক কার্যক্রমে লিপ্ত হতে থাকে। আমার বোন তাকে ওইসব অসামাজিক কার্যক্রম বন্ধের কথা বলতেই সে তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠে। তা থেকেই শুরু হয় বিবাদ ও দূরত্ব। আমরা বুঝতে পারি তারকা খ্যাতি, নাম-ডাক ও অর্থ তাকে বদলে দিয়েছে।”
মোসাদ্দেক তাঁর স্ত্রীর উপর শারীরিক নির্যাতন করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ দলের হয়ে সম্প্রতি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর শেষে দেশে ফিরে স্ত্রীর উপর অকথ্য নির্যাতন চালায় মোসাদ্দেক। আর অত্যাচার না সইতে পেরে বাধ্য হয়েই অবশেষে মামলা করেছেন তাঁর স্ত্রী।
মোজাম্মেল বলেন, “দিনকে দিন সৈকতের আচরণে অতিষ্ঠ আমার ছোট বোন বিষয়টি জাতীয় দলের সাবেক ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজনের কাছে জানান। সুজন সাহেব তার কথা শুনে আশ্বস্ত করে বলেন, ঠিক আছে মোসাদ্দেক সৈকত ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর আমেরিকা সফর শেষে দেশে ফিরে আসুক তারপর কথা বলে একটা আপোষ রফা করে দেবেন। সেই অনুযায়ী ১৫ আগস্ট সুজন সাহেবের সঙ্গে আমার বোন ও সৈকতের দেখা করার কথা ছিল।”
“এদিকে সৈকত ওয়েস্ট ইন্ডিজ যাবার আগে আমি ছোট বোন সামিয়া শারমিনকে আমার বাসায় এনে রাখি। সৈকত সুজন সাহেবের সঙ্গে বসার কথা বলে গত ১৪ আগস্ট আমার বোনকে তার বাসায় নিয়ে যায়। এরপর তার বাসায় নিয়ে বোনের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালায়। তাকে শারীরিকভাবে আঘাতের পাশাপাশি হুমকিও দেয়। সৈকতের নির্মম নির্যাতন ও হুমকিতে আজ আমার ছোট বোন তার বিপক্ষে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা করতে বাধ্য হয়েছে।”