১৯৭৫ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল প্রথম বিশ্বকাপের আয়োজন করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৮ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এবং বিশ্ব আসরে সর্বশেষ সংযোজন টি-২০ বিশ্বকাপ। প্রতি ২/৪ বছর পর পর অনুষ্ঠিত হওয়া এই সকল আসরে অংশ নিতে জোর প্রস্তুতি চালায় প্রতিটি ক্রিকেট খেলুড়ে দেশ। পাশপাশি ক্রিকেটাররাও মুখিয়ে থাকেন তাঁর ক্যারিয়ারে বিশ্বকাপে অংশ নেওয়ার জন্য।
আজ দেখবো এমনই চারজন ভারতীয় ক্রিকেটার যারা আইসিসির তিনটি ট্রফি জয়ী স্কোয়াডের সদস্য ছিলেন।
#৪. হরভজন সিং
বর্তমানে জাতীয় দলের বাইরে থাকলেও একসময় টিম ইন্ডিয়ার স্পিন বিভাগ একা হাতেই সামাল দিতেন হরভজন সিং। তাঁর স্পিন ঘুর্ণির ফাঁদে ফেলতেন বিশ্বের বাঘা বাঘা সব ব্যাটসম্যানদের।
২০০৭ সালে বিশ্ব টি-২০, ২০১১ সালে আইসিসি বিশ্বকাপ এবং ২০০২ সালে ভারতের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ী স্কোয়াডের সদস্য ছিলেন এই স্পিনার।
২০০২ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ৫ ম্যাচে ৬ উইকেট, বিশ্ব টি-২০তে ৬ ম্যাচে সাত উইকেট এবং আইসিসি বিশ্বকাপ ২০১১ আসরে বল হাতে ৯ ম্যাচে ৯ উইকেট পকেটে পুরেন তিনি।
#৩. বীরেন্দ্র সেহবাগ
তাঁর যুগে ভারতীয় দলের ওপেনার হিসেবে সেরা অবস্থানেই ছিলেন তিনি। প্রতিপক্ষ বোলারদের উপর স্ট্রিমরোলার চালিয়ে শুরু থেকে শেষপর্যন্ত খেলে যেতেন আক্রমণাত্মক মনোভাব নিয়ে।
২০০২ সালে ভারতের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের স্কোয়াডে থাকা সেহবাগ ঐ আসরে ৫ ম্যাচে রান করেন ২৭১। অন্যদিকে ৫ বছর পর বিশ্ব টি-২০ আসরে টিম ইন্ডিয়ার স্কোয়াডে থাকলেও আততায়ী ইনজুরির কবলে পড়ে মিস করেন ফাইনাল ম্যাচ। ২০১১ সালে বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য হয়েও ছিলেন এই ওপেনার। ঐ আসরে বাংলাদেশের বিপক্ষে বিধ্বংসী ১৭৫ রানের ইনিংস খেলে টুর্নামেন্টে ইনিংসে সেরা ব্যক্তিগত রান সংগ্রাহকও হন সেহবাগ।
#২. যুবরাজ সিং
টিম ইন্ডিয়ার অন্যতম ম্যাচ উইনার ক্রিকেটার হিসেবে সর্বদাই লেখা থাকবে যুবরাজ সিংয়ের নাম। ২০০২ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ী দলের সদস্য হয়ে থাকলেও ঐ আসরে তিনি ম্যাচ খেলেছেন ৫টি। যেখানে ব্যাট হাতে নামার সুযোগ পেয়েছেন ২টি ম্যাচে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচে ৬২ রানের ইনিংসটি ছিল ঐ আসরে তাঁর সেরা ইনিংস।
২০০৭ সালে বিশ্ব টি-২০ আসরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে স্ট্রুয়াট ব্রডের ছয় বলের সবকয়টিকে ছক্কায় পরিণত করে এই ফরম্যাটে মাত্র ১২ বলে ফিফটি করার রেকর্ড গড়েন তিনি। টুর্নামেন্টে ৬ ম্যাচে করেন ১৬৮ রান। অন্যদিকে ২০১১ বিশ্বকাপে ৯ ম্যাচে ৩৭৫ রান সহ ৯ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন ক্যান্সার জয়ী এই ক্রিকেটার।
#১. মহেন্দ্র সিং ধোনি
ভারতীয় ক্রিকেটের উজ্জ্বল নক্ষত্র মহেন্দ্র সিং ধোনির প্রাপ্তিটা এক্ষেত্রে একটু বেশি। কেননা আইসিসির বড় তিনটি টুর্নামেন্টের ট্রফি জয়ের সময় টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
২০০৭ সালে বিশ্ব টি-২০ আসরের শিরোপা জয়ের সময় শেষ ওভারে তাঁর সিদ্ধান্তেই জাগিন্দার সিংয়ের হাতে বল তুলে দিলে শেষ ওভারে ভারত ম্যাচ জিতে ৫ রানে। ২০১১ বিশ্বকাপে ভারতীয় দল টুর্নামেন্টে অংশ নেয় মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে। ঐ আসরে ফাইনালে ছক্কা মেরে ম্যাচ জেতানো ধোনি ৯ ম্যাচে রান করেন ২৪১। ২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের সময়ও আকাশী নীল জার্সির অধিনায়কত্বের ভার ছিল উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মহেন্দ্র সিং ধোনির হাতে। ঐ আসরে রোহিত শর্মাকে দিয়ে ওপেনিং পজিশনে ব্যাট করানো এবং স্পিনার দিয়ে ওপেনিং বল করানো সহ ম্যাচের মেজাজ বুঝে সিদ্ধান্ত নিয়ে ভারতকে ৫ রানে জয়ী করেন ধোনি।