নিজের যোগ্যতার সাক্ষর রেখে আকাশী-নীল জার্সি গায়ে জড়াতে মুখিয়ে থাকেন প্রতিটি ক্রিকেটারই। জাতীয় দলের হয়ে খেলা যে গৌরবের বিষয় তাতে কোনো সন্দেহ নেই কারো মনে। তবে ঘরোয়া ক্রিকেট মাতিয়ে জাতীয় দলের স্কোয়াডে থেকেও মাঠে নামা হয়নি জাতীয় দলের জার্সি গায়ে এমন দুর্ভাগা পাঁচজন ক্রিকেটারের।
দেখে নিন সেই পাঁচ দুর্ভাগ্যবান ক্রিকেটারদের কে …
৫. ধীরাজ যাদব
মহারাস্ট্রের সাবেক ক্রিকেটার ধীরাজ যাদব ঘরোয়া ক্রিকেটে দীর্ঘদিন পারফর্ম করার পর ২০০৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ টেস্টের স্কোয়াডে দলের সাথে যোগ দেন। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে জাতীয় দলের ক্যাপ মাথায় পরা হয়নি তাঁর।
৭৬টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে ৫৬.০৬ গড়ে ২০টি সেঞ্চুরির সাহায্যে ৫৮৩১ রান করেছেন এই ব্যাটসম্যান। অন্যদিকে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটেও এই ব্যাটসম্যান ছিলেন দুর্দান্ত। ৩৭টি ম্যাচে ৪৭ গড়ে ৩টি সেঞ্চুরি ও ১১টি ফিফটির সাহায্যে ১৫৫৯ রান করেছেন তিনি।
৪. শিব সঙ্কর পাল
২০০০ সালের দিকে বেঙ্গল ক্রিকেটের নিয়মিত মুখ ছিলেন বল হাতে গতির ঝড় তোলা সঙ্কর। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এই পেসার ৬১টি ম্যাচে নিয়েছেন ২২০ উইকেট। তাছাড়া ১৫ বার ৫ বা তার বেশি উইকেট ও ২ বার নিয়েছেন ম্যাচে ১০ উইকেট। তাঁর এই পারফরম্যান্সের উপর ভিত্তি করে ২০০৪ সালে অজিদের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের চতুর্থ টেস্টের স্কোয়াডে জায়গা হয় তার। পরবর্তিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের দলেও ছিলেন সঙ্কর। তবে ভাগ্য সহায় না হওয়ায় জাতীয় দলের জার্সি শেষপর্যন্ত গায়ে জড়াতে পারেননি তিনি।
৩. রানাদেব বোস
ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় ক্রিকেটার ছিলেন রানাদেব বোস। ২০০৭ সালে শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দলের বিপক্ষে ম্যাচে একাই বল হাতে ৫ উইকেট নিলে তৎকালীন টিম ইন্ডিয়ার কাপ্তান রাহুল দ্রাবিড় রানাদেবকে টেস্ট দলে সুযোগ করে দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তবে নির্বাচকদের সুনজর পরেনি তাঁর উপর।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এই বোলার ৯১টি ম্যাচ খেলে ঝুলিতে পুরেছেন ৩১৭টি উইকেট। অন্যদিকে এই ফরম্যাটে ২৪ বার পাঁচ উইকেট ও ৬ বার ম্যাচে দশ উইকেট নিতে সক্ষম হয়েছেন এই বোলার। আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্স এবং কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়েও মাঠ মাতিয়েছেন রানাদেব।
২. সুনীল ভ্যালসন
ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ পারফরম্যান্স করে ১৯৮৩ বিশ্বকাপের টিম ইন্ডিয়ার স্কোয়াডে জায়গা করে নেন সুনীল। তবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে তাঁর পারফরম্যান্স মন কেড়ে নিতে ব্যর্থ হয় নির্বাচকদের। ফলে সেখান থেকেই জাতীয় দলে খেলার আশা চুপসে যায় সুনীলের।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৭৫টি ম্যাচে মাঠে নেমে ২১২টি উইকেট নিতে সক্ষম এই বোলার ১৯৮৭ সালে ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণ করেন। বর্তমানে আইপিএলের দল দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সুনীল লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ২২টি ম্যাচ খেলে ২৩টি উইকেট ঝুলিতে নিয়েছেন।
১. রাজেশ পাওয়ার
মুম্বাইয়ের ঘরোয়া ক্রিকেটে দলের গুরুত্বপূর্ণ বোলার রাজেশ একজন বাঁহাতি স্পিনার। ব্যাট হাতেও উজ্জ্বল এই ক্রিকেটার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২০০ উইকেটের বেশি নেয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ৯৫ রান করেছেন। এখন পর্যন্ত ৯৫টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে এই ক্রিকেটার নিয়েছেন ২৮১ উইকেট। যেখানে পাঁচ বা তার বেশি উইকেট নিয়েছেন ১১ বার ও এক ম্যাচে দশ উইকেট নিয়েছেন দুইবার। অন্যদিকে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটেও ৩৬ ম্যাচ খেলে ৩৯ উইকেট নিজের নামের পাশে লিখিয়েছেন তিনি।
ঘরোয়া ক্রিকেটে উজ্জ্বল পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে ২০০৭ বিশ্বকাপের ৩০ সদস্যের স্কোয়াডে নাম ছিল রাজেশের। তবে সেখানেই যেন সব স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় তার। ১৫ সদস্যের স্কোয়াড থেকে বাদ যায় এই স্পিনারের নাম। ২০১৬ সালে ক্রিকেটকে বিদায় জানান তিনি।