ক্রিকেট মাঠ বা সাংবাদিক সম্মেলন, ভারতীয় দলের সহ-অধিনায়কের ধীরস্থির চলন দেখে, তাঁকে কুঁড়ে মনে হতে পারে বা অত্য়াধিক সিরিয়াস ভাব। কিন্তু, রোহিত নাকি ভীষণ রকমের রসিকতা করতে পারেন। আর তাও কেয়ারলেসভাবে। কোনও কিছু দামি জিনিস খোয়া গেলেও, সেটা খোঁজার জন্য় কোনওরকম হেলদোল থাকে না হিটম্য়ানের। ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি আবার বলেছেন, জাতীয় দলে রোহিতের আরও একটি ইমেজ রয়েছে, যেটা অনেকেরই জানে নেই। আর সেটা হল, রোহিত ভীষণ রকম রসিকতা করতে পারেন। আর তাও মুম্বইয়া টপোরি স্টাইলে। ‘ব্রেকফাস্ট উইথ চ্য়াম্পিয়ন‘ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে সঞ্চালক গৌরব কাপুরকে ভারতীয় ড্রেসিং রুমের এরকম নানান মজাদার গল্প শোনাচ্ছিলেন বিরাট, আড্ডার ফাঁকে।
রোহিত যেমন রসিকতা করতে পারেন, তেমনই আবার ভুলোমনা। বিরাট বলছেন, ”রোহিত এমন একজন মানুষ, যে খুব রসিকতা করতে পারে। এরকম মানুষকে জীবনে খুব কম দেখা যায়। ধরুন, ও আপনাকে কোনও বিষয় নিয়ে কথা বলবে। তখন ও কি করবে, মুম্বইয়ের সেই ‘টপোরি‘ স্টাইলে কথা বলবে। যেমন ধরুন আমি যদি বলি, লোখান্ডওয়ালাতে খুব ট্রাফিক ছিল। তখন রোহিত ‘টপোরি‘ স্টাইলে বলে উঠবে, ‘ওদিকে না, বহুত ছিল।‘ আমরা তারপর পাঁচ সেকেন্ড অপেক্ষা করি…দশ সেকেন্ড অপেক্ষা করি…‘হ্য়াঁ, ছিল, ভাই!‘ এবার কি বুঝবেন, আপনাকে বুঝে নিতে হবে। কে কতটা বুদ্ধিমান সে কথা বলছি না। কিন্তু, খোলসা করেও বলব না, আমি কি বুঝেছিলাম।”
রোহিতের ভুলোমনা সম্পর্কে বিরাট জানান, ”রোহিত খুব ভুলে যায়। এরকমভাবে কাউকে নিজের জিনিস ভুলে যেতে দেখিনি। কি করে মানুষ এত ভুলোমনা হয় কে জানে। ও আইপ্য়াড ভুলে যায়, ওয়ালেট ভুলে যায়, ফোন ভুলে যায়। সব কিছুই ভুলে যায়। শুধু ছোটোখাটো জিনিসের কথা বলছি না, রোজকার দরকারি মানে ব্য়বহার হয় এমন জিনিস ভুলে যায়।”
”আর তারপর বলে ওঠে, ‘ওতে কিছু এসে যায় না। হারিয়ে গেলে যাক। আমি আরেকটা কিনে নেবো।‘ ও কি কি জিনিস হারিয়ে ফেলে নিজেও জানে না। হোটেলের দিকে বাস রওনা হয়ছে। অর্ধেক রাস্তা চলে আসার পর ওর মনে পড়ে – ‘আরে প্লেনে আইপ্য়াডটা ফেলে এসেছি।‘ মাঝেমধ্য়ে এমনও হয়েছে যে ও নিজের পাসপোর্টটাও হারিয়ে ফেলেছে। এসব জিনিস হারিয়ে গেলে তো খুঁজে পাওয়া মুশকিল। আমাদের লজিস্টিকাল ম্য়ানেজার তাই আগে থেকেই জিজ্ঞাসা করে নেয়, ‘রোহিত শর্মা নিজের সব জিনিস ঠিকমতো নিয়ে এসেছে তো?’ রোহিত যতক্ষণ না হ্য়াঁ বলছে, বাস ছাড়বেই না।”
একদিনের ক্রিকেটে রোহিত শর্মা হায়েস্ট স্কোরার। রোহিতের মধ্য়ে যে প্রতিভা রয়েছে, এতদিন সবাই তা অনেকের মুখে শুনেছেন। এবার বিরাটের মুখেই শোনা যাক, তিনি কি বলছেন, ”রোহিত যখন জাতীয় দলে ঢোকে। প্রচারের আলোয় আসছে সবসবে। আমরা সবাই ওকে নিয়ে কৌতূহলী ছিলাম। সবাই তখন ওকে নিয়েই কথা বলছে। আমাদের অন্য় কাউকে নিয়ে লোকজন অতটা আগ্রহ দেখাচ্ছিল না। আমরা সবাই তখন তরুণ ক্রিকেটার। টি-২০ বিশ্বকাপের সময় আমি ওকে ব্য়াট করতে দেখি। সোফায় বসে ওর খেলা দেখছিলাম। আমি হাঁ হয়ে গিয়েছিলাম একেবারে। ওকে ব্য়াট করতে দেখে বুঝেছিলাম, লোকে এত কথা বলছে কেন! এত সুন্দর টাইমিং, যে কি বলব। মনে হচ্ছিল, ওর চেয়ে কেউ ব্য়াটেবলে ভালো সংযোগ আর কেউ করতে পারে না।”