ভারতীয় ক্রিকেটেপ্রেমীদের মনে আশিস নেহেরা যতটা স্মরনীয় হয়ে থাকবেন ২০০৩ ওয়ার্ল্ডকাপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তার স্বপ্নের বোলিং স্পেলের জন্য ঠিক ততটাই স্মরণীয় হয়ে থাকবেন তাঁর স্মিত চওড়া হাসির জন্যেও। কিন্তু তাঁর সেই চওড়া হাসির পেছনে এমন একটা মানুষ রয়েছেন যিনি স্পষ্ট কথা বলতে কখনও পিছু হাঁটেন না। বুধাবার জীবনের শেষ ম্যাচ খেলে ফেলার পরেও তার মধ্যে সেই ধারা এখনও অব্যাহত রয়েছে। তাই নির্বাচক প্রধান এমএসকে প্রসাদের সাম্প্রতিক মন্তব্যের ক্রিস্টাল ক্লিয়ার জবাব দিতেও তিনি পিছু হটেন না। নেহেরার অবসর ঘোষনার পরের দিনই নির্বাচক প্রধান মন্তব্য করেন, নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে চলতি সিরিজে কোনো মতেই তারা নেহেরার কথা ভাবেন নি। এই মন্তব্যের পর সকলেই ধরে নিয়েছিল যে নেহেরার অবসরের সিদ্ধান্ত অনেকটাই নির্বাচকদের এই মনোভাব দ্বারা প্রভাবিত। যদিও ৩৮ বছর বয়েসি এই বাঁ হাতি পেসার ঘটনাটি স্পষ্ট করে দিয়ে বলেছেন এ ব্যাপারে নির্বাচকরা কখনই তার সঙ্গে কোনো রকম যোগাযোগ করেন নি। নেহেরা বলেন, ‘ নির্বাচক প্রধানের কথা আমি শুনেছি। এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। নির্বাচক প্রধান এ ব্যাপারে কখনই আমাকে কিছু বলেন নি। আপনি এ ব্যাপারে আমাকে প্রশ্ন করছেন, কিন্তু আমি আপনাকে শুধু এটাই জানাতে পারি যে আমার টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আমার কি কথা হয়েছে। যখন আমি রাঁচি পৌঁছই তখনই আমি বিরাটকে আমার সিদ্ধান্তের কথা জানাই। আর বিরাটের প্রথম কথাই ছিল, তুমি কি নিশ্চিত? তুমি এখনও আইপিএল খেলতে পারো। আইপিএলে এখনও তুমি কোচ এবং প্লেয়ার হিসেবেই খেলতে পার।
কিন্তু আমি জানিয়েছিলাম আমি সব কিছু থেকেই সরে দাঁড়াতে চাই”। নেহেরা আরো জানিয়েছেন, তিনি কোনো ফেয়ারোয়েল ম্যাচ চান নি। কিন্তু ঘরের মাঠে পরিচিত দর্শকদের সামনে জীবনের শেষ ম্যাচ খেলতে পারা তার কাছে তার পরিশ্রম এবং ঈশ্বরের আশির্বাদের ফসল। “আমি এটা বারবার বলেছি। সৌভাগ্যবশত ম্যাচটা দিল্লীতে হয়েছে। আমি কখনই ফেয়ারওয়েল ম্যাচ বা অন্য কিছু চাইনি। কিন্তু সম্ভবত ভগবান গত ৮-৯ বছর ধরে করে আসা আমার মেহেনতের পুরস্কার স্বরূপ আমাকে এই উপহার দিয়েছেন। টিম ম্যানেজমেন্টের অঙ্গ হিসেবে একমাত্র বিরাট আর রবি শাস্ত্রীর সঙ্গেই আমি কথা বলেছিলাম। এছাড়া অন্য কোনো নির্বাচকের সঙ্গে এই ব্যাপারে আমি কথা বলি নি। যখন আমি ক্রিকেট খেলা শুরু করি তখনও আমি কোনো নির্বাচকের অনুমতি নিয়ে শুরু করি নি। আর যখন আমি খেলা ছাড়ছি তখনও আমার তাদের অনুমতির প্রয়োজন হয়নি। সম্প্রতি এমএসকে প্রসাদ দাবী করেছিলেন যে নির্বাচক কমিটি নেহেরার সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিস্কার করে দিয়েছিল যে তারা ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে নতুনদের প্রতিই ভরসা রাখতে চান। নেহেরা আরও পরিস্কার করে দেন যে তার অবসরের ভাবনা তিনি হঠাৎই নিয়েছিলেন। প্রসাদের মন্তব্যের কয়েকদিন আগে বা পরেই আস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজে তিনি একটাও ম্যাচ খেলেন নি। কিন্তু নেহেরা পরিস্কার করে দিয়েছিলেন যে তিনি অবসর নিচ্ছেন।