কার্তিকের ব্যাটের জাদুতে থমকে গেলো নাগিন ডান্স

কার্তিকের ব্যাটের জাদুতে থমকে গেলো নাগিন ডান্স 1

এভাবে যে নাগিন ডান্স থমকে যেতে পারে তা ভাবতে পারেন নি অতি বড়ো বাংলাদেশ সমর্থকও। নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে মুখোমুখী হয়েছিল দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র। ইদানিং ভারত বাংলাদেশ ম্যাচ মানেই পাকিস্থান ম্যাচের মত না হলেও যথেষ্ট উত্তেজনা থাকে। যা শুরু হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপ থেকেই। এদিনের ফাইনালেও টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এই সিরিজে বিরাটের অনুপস্থিতিতে অধিনায়কত্বের দায়িত্বে থাকা রোহিত শর্মা। ভারতীয় বোলারদের দাপটে এক সময় বাংলাদেশের স্কোর ছিল তিন উকেটের বিনিময়ে ৩৩ রান। শেষ পর্যন্ত প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠে বাংলাদেশ তাদের নির্ধারিত ২০ ওভারে করে ১৬৬ রান। যা বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল বলেই মতামত দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। আর এই টার্গেট ছুঁতে পারা যে খুব সহজ হবে না তা বোঝা গিয়েছিল ভারতের ব্যাটিংয়ের শুরুতেই। ভারতের ব্যাটিংয়ের শুরুতেই ঝড় তোলার কাজটা শুরু করেছিলেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা।

কার্তিকের ব্যাটের জাদুতে থমকে গেলো নাগিন ডান্স 2

তবে ভালো শুরু করেও রোহিতকে যোগ্য সঙ্গত করতে ব্যর্থ গব্বর ওরফে শিখর ধবন। মাত্র দশ রানে আউট হন তিনি। তারপর স্কোরবোর্ডে কোনও রান যোগ না করেই শূণ্য রানে ফিরে যান সুরেশ রায়নাও। সেই সময় ভারতও দুই উইকেট হারিয়ে ধুকতে শুরু করেছিল। কিন্তু ক্রিজে এসে কেএল রাহুল ভরসা দেন মারমুখী রোহিতকে। তাদের জুটিতে রান ওঠে ৫১। রাহুল আউট হন ব্যক্তিগত ২৪ রানের মাথায়। এরপর ক্রিজে আসেন মনীশ পান্ডে। কিন্তু তিনি শুরুটা বেশ ধীর গতিতেই করেন। সেই সময় ম্যাচে ফিরতে শুরু করে বাংলাদেশ। ফলে রান ধীরে ওঠা শুরু হওয়ায় চাপে পড়েন রোহিত। ফল স্বরূপ রানরেট বাড়াতে গিয়ে তুলে মারতে গিয়ে ব্যক্তিগত ৫৬ রানের মাথায় আউট হন রোহিত শর্মা। এরপর ভারতের রানের গতিকে বাড়াবার চেষ্টা করেন মনীশ এবং বিজয় শঙ্কর। কিন্তু ম্যাচের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের চাপে আটকা পড়তে দেখা যায় ভারতকে। বাংলাদেশ সেই সময় কীভাবে ভারতকে চেপে ধরেছিল তা বোঝা যায় মুস্তাফিজুরের করা ম্যাচের ১৮ তম ওভার দেখলেই। ওই ওভারে মুস্তাফিজুর দেন মাত্র এক রান। তাও সেই রান আসে লেগ বাই রূপে।

কার্তিকের ব্যাটের জাদুতে থমকে গেলো নাগিন ডান্স 3

ওই ওভারে মনীশকেও(২৮) আউট করেন মুস্তাফিজুর। মনীশের আউটই যেন ভারতের পক্ষে শাপে বর হয়ে দাঁড়ায়। মনীশের জায়গায় ক্রিজে এসে দীনেশ কার্তিক পুরোপুরি দখল নিয়ে নেন ম্যাচে। মাত্র আট বলে দীনেশ করেন ২৯ রান। রুবেলের বলে রীতিমতো ঝড় তুলে ১৯ তম ওভারে তিনি নেন ২২ রান। কিন্তু তাতেও খেলার পাল্লা ভারী ছিল বাংলাদেশের দিকেই। এমনকী ২০ ওভারের শেষ বল পর্যন্ত ম্যাচ ছিল বাংলাদেশের দিকেই। শেষ বলে ভারতের দরকার ছিল ৫ রান। বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত ধরে নিয়েই তাদের সমর্থকরা ম্যাচের শেষ বল হওয়ার আগেই গ্যালারিতে নাগিন ডান্স করতে শুরু করে দেন। আর সেই ডান্স সৌম্য সরকারকে কভারের উপর দিয়ে শেষ বলে ছয় মেরে থামিয়ে দেন ডিকে। সেই সঙ্গে ফিরিয়ে আনেন জাভেদ মিয়াঁদদের শারজার স্মৃতি। ভারতের বিরুদ্ধে শেষ বলে ছয় মেরে পাকিস্থানকে জয় এনে দিয়েছিলেন জাভেদ মিয়াঁদাদ। এদিনও ইতিহাসের পুণরাবৃত্তি করে শেষ বলে ছয় মেরে ইতিহাস গড়লেন কেকেআরের নতুন অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *