এখনও পর্যন্ত সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের আইপিএল অভিযান মোটামুটি ভালই কেটেছে। আইপিএলে তাদের প্রথম তিনটি ম্যাচ জেতা এবং গত ম্যাচে হার সত্ত্বেও, তারা তাদের শক্তি সম্পর্কে অবগত থাকবেন এবং সেটাকেই ধরে রাখবেন। হায়দ্রাবাদের চলার পথ এবং তাদের ধারাবাহিক চতুর্থ জয়ে মাঝে নিশ্চিতভাবেই ক্রিস গেইল এসে পড়েন এবং উইনিভার্সাল বসের সেঞ্চুরিতে ওই ম্যাচ ১৫ রানে জিতে যায় কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের জন্য এখন থেকেই কাজটা কঠিন হয়ে পড়ে কারণ তাদের আগামি ম্যাচেই মুখোমুখি হতে হচ্ছে দু’বারের আইপিএল চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই সুপার কিংসের, যারা এই ম্যাচে খেলতে নামছে রাজস্থানের বিরুদ্ধে বড় জয় ভাল করে। এই ম্যাচে হ্যাদ্রবাদের জয় তাদেরকে লিগ টেবিলের শীর্ষে নিয়ে যাবে এবং চেন্নাইয়ের জয়ও চেন্নাইকে একইভাবে শীর্ষে নিয়ে যাবে। দল গঠন নিয়ে হায়দ্রাবাদ সমর্থকদের প্রচুর চিন্তাও রয়েছে। অনেকেই বিলি স্ট্যানলেকঅকে একটি ম্যাচে না খেলানোর পিছনে কি কারণ রয়েছে তা বুঝতে পারেন নি, এবং যার দাম হয়ত তাদের দিতে হতে পারে। হায়দ্রাবাদের ঘরের মাঠে প্রবল প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অরেঞ্জ বাহিনী কেমন হতে পারে একবার দেখে নেওয়া যাক।
ওপেনার (শিখর ধবন এবং ঋদ্ধিমান সাহা)
গত ম্যাচে তার খেলা প্রথম বলটাই ধবনকে মাঠের বাইরে চলে যেতে বাধ্য করে কারণ তার কনুইতে বাজেভাবে আঘাত করে। কোনও রিস্ক না নিয়েই টিম ম্যানেজমেন্ট সিদ্ধান্ত নেয় তাকে মাঠ থেকে তুলে নেওয়ার এবং সম্ভবত তিনি এই ডার্বি ম্যাচে সম্পূর্ন সুস্থ হয়ে ফিরে আসবেন। তার কাছ থেকে একটা ভালো শুরুয়াতই তার দলের কাছে অনিবার্য হয়ে উঠতে পারে।
ঋদ্ধিমান সাহা হয়ত তার খারাপ ব্যাটিং পারফর্মেন্স নিয়ে এই ম্যাচে টিম ম্যানেজমেন্টে কড়া নজরে থাকবেন। কিন্তু কীপার হিসেবে উইকেটের পিছনে তিনি সবসময়েই দুর্দান্ত। ওপেনার হিসেবে তার ট্র্যাক রেকর্ডও মোটামুটি ভদ্রস্থ, এবং সেটাই একমাত্র কারণ হিসেবে তিনি সম্ভবত টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে আরও কিছু ম্যাচে সুযোগ পাবেন।
মিডল অর্ডার (কেন উইলিয়ামসন, মনীশ পান্ডে, ইউসুফ পাঠান)
দলের হয়ে ধারাভিক দুটি হাফ সেঞ্চুরি করেছেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন, কিন্তু কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে করা হাফ সেঞ্চুরিটি সামান্য ধীর গতির ছিল। তিনি প্রয়োজনীয় রানরেট ধরতে অক্ষম হন, এবং তিনি বাস্তবে কখনওই রান তাড়া করতে পারেন নি। একই ঘটনা মনীশ পান্ডের ক্ষেত্রেও যিনি খুব খারাপভাবে ট্রোলড হয়েছেন যেভাবে তিনি রান তাড়া করতে নেমেছিলেন তা নিয়ে। গত ম্যাচে ইউসুফ পাঠানকে উপরের দিকে পাঠানো হয়েছিল রান করার জন্য। কিন্তু এই সত্যিই আশানুরূপ ফলাফল দিতে পারেনি, কিন্তু পাঠান বেশ কয়েকটি বাউন্ডারি মারতে সক্ষম হয়েছিলেন। কেকেআরের বিরুদ্ধে ম্যাচেও তিনি ভাল ফিনিশিং টাস দিতে পেরেছিলেন।
অলরাউন্ডার (দীপক হুডা, সাকিব আল হাসান)
শেষ পর্যন্ত গত ম্যাচে দীপক হুডা বল করার সুযোগ পেয়েছিলেন এই প্রতিযোগিতায় কারণ বাকি বোলাররা গেইল নামক ঝড়ে রীতিমতো খড়কুটোর মত উড়ে গিয়েছিলেন। ব্যাট হাতেও তিনি নতিস্বীকার করেছিলেন এবং কিছুই করতে পারেন নি। যদিও তিনি দলের জন্য যথেষ্ট মূল্যবান সংযোজন এবং সম্ভবত তিনি পুরো মরশুমেই খেলবেন। এই মরশুমে হায়দ্রাবাদের সবচেয়ে বড় আবিস্কার সাকিব আল হাসান এবং এখনও পর্যন্ত তিনি দুরন্ত পারফর্মেন্স করে চলেছেন। ব্যাট এবং বল হাতে তিনি তার কাজ করে চলেছেন এবং তিনি সানরাইজার্সের জন্য ভীষণই গুরুত্বপূর্ণ একজন প্লেয়ার। যেভাবে হায়দ্রাবাদ ম্যানেজমেন্ট সাকিবকে ব্যবহার করে চলেছেন তা সত্যি প্রশংসাযোগ্য, যা তার গত ফ্রেঞ্চাইজি করতে ব্যর্থ হয়েছিল।
বোলারস (ভুবনেশ্বর কুমার, রশিদ খান, বিলি স্ট্যানকেল, সিদ্ধার্থ কৌল)
পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে ম্যাচে দুরন্ত ছিলে ভুবনেশ্বর কুমার। যেখানে সমস্ত বোলারাই রান দিচ্ছিলেন, সেখানে তিনি মাত্র ২৫ রান দিয়ে একটি বড় উইকেটও তুলে নেন। আশা করা হচ্ছে বিলি স্ট্যানলেক প্রথম একাদশে ফিরে আসবেন, জর্ডনের পরিবর্তে। তার মধ্যে একটি এক্স ফ্যাক্টির রয়েছে ব্যাটসম্যানদের সমস্যায় ফেলার, সানরাইজার্সের উচিৎ তাকে সর্বতভাবে প্রভাব ফেলার জন্য তাকে ব্যবহার করা। রশিদ খান গত ম্যাচে একটি বাস্তবিক শিক্কা পেয়েছেন যে টি২০ ক্রিকেট ততটাও সোজা নয় যতটা মানুষ ভাবেন। গেইল ঝড়ে ওই ম্যাচে ৫৫ রান দেন রশিদ। যদিও কেউই এটা অস্বীকার করবেন না যে তিনি কতটা গুরুত্বপূর্ণ বোলার। প্রথম একাদশে নিজের জায়গা ধরে রাখবেন সিদ্ধার্থ কৌল কারণ তিনি ধারাবাহিকভাবেই ডেথ ওভারে ভাল পারফর্ম করে চলেছেন।