আইপিএল ২০১৮: ম্যাচ ২২, মুম্বাইয়ের সম্ভাব্য একাদশ

ম্যাচ হারা বা জেতাটা একটা অভ্যেস, এবং চলতি আইপিএলে শেষ ওভারের রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স সম্ভবত হারাটা অভ্যেস করে ফেলেছে। কিন্তু তাদের জন্য সময় এসে গিয়েছে ৪ ম্যাচে শেষ ওভারের হার কে সংশোধন করার এবং তাদের খেলার উন্নতি ঘটানোর। তাদের যদি তারা জেতার রাস্তায় ফিরে আসতে না পারে, তাহলে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের জন্য সম্ভবত এই মরশুম দ্রুতই শেষ হয়ে যাবে। যদিও তারা আগামি ম্যাচে ওয়াংখেড়েতে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের মুখোমুখি হতে চলেছে যারা নিজেরাও দুর্ভাগ্যের শিকার হয়েছে তাদের শেষ ম্যাচে। রয়্যালসের বিরুদ্ধে, মনে হচ্ছিল তারা সহজেই জিতে যাবে, তাদের ডেথ বোলারদের জন্য, কিন্তু তাদের বোলাররা শেষ কয়েক ওভারে চাপের মুখে ভেঙে পড়ে। আবার ওই একই বোলারাওই তাদের শুরুতেই ম্যাচে ফিরিয়ে এনেছিল গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে। তাদের ব্যাটিংকে দোষ দেওয়া যেতে পারে, যারা সঠিকভাবে শেষ করতে ব্যর্থ হয় তাদের টপ অর্ডার দারুণ শুরু করার পরও। এই মুহুর্তে তাদের প্রায় প্রত্যেকটি প্লেয়ারই হাত তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে যেভাবেই হোক তাদের দলকে জয়ের রাস্তায় ফেরাতে। একবার দেখে নেওয়া যাক হায়দ্রাবাদের বিরুদ্ধে মুম্বাইয়ের প্রথম একাদশ কি হতে চলেছে।

আইপিএল ২০১৮: ম্যাচ ২২, মুম্বাইয়ের সম্ভাব্য একাদশ 1

ওপেনার্স (সূর্য কুমার যাদব, এভিন লুইস)

সূর্যকুমার যাদব তার দলের জন্য তখন থেকে উদাহরণ যোগ্য যবে থেকে তিনি ওপেন করা শুরু করেছেন। তিনি তার ভুমিকায় সঠিকভাবেই মানিয়ে নিয়েছেন এবং ব্যাটিং অর্ডারের শীর্ষে থেকে বেশ কিছু ম্যাচ খেলেছেন মুম্বাইকে দারুণ শুরুয়াত দিয়ে। শেষ ম্যাচে এভিনের ৭২ রানের ইনিংস তাদের জন্য মঞ্চ প্রস্তুত করে দিয়েছিল, এবং দলের ফিনিশার্সদের ফর্মের কথা মাথায় রেখেই তাকে সতর্ক থাকতে হবে শেষ ওভার পর্যন্ত টিকে থাকার জন্য। এভিন লুইসও দারুণ ছন্দে রয়েছেন এবং তার শক্তিরও প্রদশর্ন করেছেন। তবে তার অবস্থা হয় সব কিছু নইলে কিছুই নয়, যা একটা সমস্যা। এই ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটারকে ধারাবাহিক হতে হবে এবং ঝুঁকিপূর্ণ শট খেলার সময় তাকে যথেষ্ট সতর্কও থাকতে হবে।

আইপিএল ২০১৮: ম্যাচ ২২, মুম্বাইয়ের সম্ভাব্য একাদশ 2

মিডল অর্ডার (ঈশান কিষাণ, রোহিত শর্মা, জেপি ডুমিনি)

এখনও পর্যন্ত ঈশান কিষাণ এই মরশুমে দুরন্ত ফর্মে রয়েছেন। এখনও পর্যন্ত পাঁচটি ইনিংসে ৩০ এরও বেশি গড়ে ১৪৫.১৯ স্ট্রাইক রেট নিয়ে ১৫১ রান করেছেন। এখন তিনি বড় ইনিংস খেলার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন কারণ তার ৫০ রান হওয়ার পরপরই তিনি উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে এসেছেন। এমনকী রয়্যালসের বিরুদ্ধেও অপ্রয়োজনীয় বড় শট মারার চেষ্টায় উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে আসেন, যার পরই মুম্বাই ইনিংসে ধস নেমে যায়। এই তরুণ তারকা দলকে টেনে নিয়ে যাওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকবেন যদি তিনি আবারও এই ম্যাচে সেট হয়ে যেতে পারেন।
যদি মুম্বাইকে দুরন্তভাবে এই মরশুমে ফিরে আসতে হয় তাহলে রোহিত শর্মাকে অধিনায়ক হিসেবে সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিতে হবে। এখনও পর্যন্ত পুরোনো হিটম্যান রোহিতকে দেখা যায় নি এবং যদিও তিনি আরসিবির বিরুদ্ধে ৯৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন কিন্তু এটাই তার ব্যাট হাতে একমাত্র মহত্বপূর্ণ যোগদান। সম্ভবত এই ম্যাচে দূমুল্য প্রমানিত হওয়া কায়রণ পোলার্ডের জায়গায় দলে আসতে পারেন জেপি ডুমিনি, যা তাদের দলকে বাড়তি বোলিং অপনেরও সুযোগ এনে দেবে। এই বাঁহাতি প্রয়োজনে বড় শটও মারতে পারেন এবং এটাই সঠিক সময় তাকে দলে জায়গা দেওয়ার।

আইপিএল ২০১৮: ম্যাচ ২২, মুম্বাইয়ের সম্ভাব্য একাদশ 3

অলরাউন্ডার (হার্দিক পান্ডিয়া, ক্রুণাল পান্ডিয়া))

ব্যাট হাতে ক্রুণাল পান্ডিয়ার ফর্ম সামান্যই নীচের দিকে রয়েছে এবং দল হঠাৎই তার দল বিপদে পড়ে গিয়েছে দরকারের সময় ইনিংস শেষ করার ক্ষেত্রে। তিনি বল হাতে এবং ফিল্ডিংয়ে দারুণ যোগদান দিয়ে চলেছেন, কিন্তু ক্রুণাল যথেষ্ট ভাল ব্যাটসম্যানও এবং গত মরশুমের ফর্মকে পুণরায় ফিরিয়ে আনার দরকার তার। যদি তিনি তা করতে সক্ষম হন তাহলে মুম্বাই ব্যাটিং লাইনআপকে আবারও সম্পুর্ণ দেখাবে এবং বড় রান সহজেই তাড়া করতে সক্ষম হবেন তারা। পান্ডিয়া ভাইদের ব্যাটিং ব্যাড প্যাচের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন এবং হার্দিক পান্ডিয়াও এই একই সমস্যায় ভুগছেন। গত ম্যাচে জোফ্রা আর্চারের একটি দুরন্ত ডেলিভারিতে তিনি আউট হয়ে গিয়েছিলেন কিন্তু এই প্রতিভাবান ক্রিকেটারের এই মরশুমে এখনও তার দলকে ব্যাট হাতে কোনও যোগদান দিতে পারেন নি। যদিও তার বোলিং যথেষ্টই ভাল হচ্ছে এবং টিম ম্যানেজমেন্টের এদিকটা নিয়ে কোনও চিন্তাই নেই।

আইপিএল ২০১৮: ম্যাচ ২২, মুম্বাইয়ের সম্ভাব্য একাদশ 4

বোলার্স (ময়ঙ্ক মারকান্ডে, মিচেল ম্যাকলেনাঘন, জসপ্রীত বুমরাহ, মুস্তাফিজুর রহমান)

এখনও পর্যন্ত ৮টি উইকেট নিয়ে পার্পল ক্যাপ জিতে নিয়েছেন ময়ঙ্ক মারকান্ডে কিন্তু তার সমস্ত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও মুম্বাই হেরে গিয়েছে। ব্যাক্তিগতভাবে তাকে একজন চ্যাম্পিয়নের মতই লাগছে এবং ইতিমধ্যেই তাকে এই মরশুমে মুম্বাইয়ের আবিস্কার হিসেবে মেনে নেওয়া হচ্ছে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে তাকে মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে এবং দলের হয়ে পারফর্ম করে যেতে হবে। এখনও পর্যন্ত মোটামুটি ঠিকঠাকই বল করে চলেছেন মিচেল ম্যাকলেনাঘন। এখন এই কিউয়ি বোলারের দরকার নিজের ছন্দকে ধারাবাহিকভাবে খুঁজে পাওয়া। সম্ভবত তার সামনে মাত্র আর সামান্যই সুযোগ পড়ে রয়েছেন কারণ মুম্বাইয়ের রিজার্ভ বেঞ্চে সুযোগের অপেক্ষায় বসে রয়েছেন বেন কাটিংয়ের মত প্লেয়ার। শেষ ম্যাচে নো বল করার জন্য আবারও মাইক্রোস্কোপের তলায় রয়েছেন জসপ্রীত বুমরাহ। সৌভাগ্যবশত এর জন্যখুব একটা মূল্য দিতে হয় নি বেশি রান দেওয়ার ক্ষেত্রে, কিন্তু রান তাড়া করার ক্ষেত্রে বাড়তি বল সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ প্রমানিত হয়। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে বুমরাহ মাথা ঠান্ডা রেখে আগামি ম্যাচে ভাল বল করুন। মুস্তাফিজুরও তার কাজটি ভালভাবেই সম্পন্ন করছেন। কিন্তু মাঝের ওভারে তার কাছ থেকে উইকেট চান অধিনায়ক যাতে তিনি পরের স্পেলে ফিরে এসে ব্যাটসম্যানদের সমস্যায় ফেলতে পারেন।

আইপিএল ২০১৮: ম্যাচ ২২, মুম্বাইয়ের সম্ভাব্য একাদশ 5

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *