এই মুহুর্তে চলতি আইপিএলে একেবারে বিপরীত মেরুতে রয়েছে কিংস ইলেভেন পঞ্জাব এবং দিল্লি ডেয়ারডেভিলস। ফলত আশা অনুযায়ীই এই ম্যাচ জিতে নেয় কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। যদিও এই ম্যাচ জেতা এত সহজ হয় নি পাঞ্জাবের পক্ষে। শেষ বল পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যায় দিল্লি। প্রথমে টস জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন দিল্লির অধিনায়ক গৌতম গম্ভীর। অধিনায়কের সিদ্ধান্তের মান রাখতেই আবেশ খান দ্রুতই ফিঞ্চের উইকেট তুলে নেন। ময়ঙ্ক আগরওয়াল এবং কেএল রাহুল ম্যাচ পাঞ্জাবের নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলেও এই দুই ব্যাটসম্যানকে তুলে নেন লিয়াম প্ল্যাঙ্কেট। এরপর পাঞ্জাব ইনিংসকে যথেষ্ট প্রভাবশালীভাবে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন ডেভিড মিলার এবং করিণ নায়ার কিন্তু দ্রুতই তাদের ফিরিয়ে দেন প্ল্যাঙ্কেট এবং ড্যানিয়েল ক্রিস্টিয়ান।
প্ল্যাঙ্কেট ছাড়াও বল হাতে দিল্লির হয়ে প্রভাব ফেলেন ট্রেন্ট বোল্ট। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে পাঞ্জাব ১৪৩ রান তোলে। জবাবে ব্যাট করতে নেনে দিল্লির ওপেনার ১৮ বছর বয়েসী পৃথ্বী শ’ দুরন্ত শুরুয়াত করেন। ২২ রানে তাকে আউট করেন অঙ্কিত রাজপুত, এরপরই তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়ে দিল্লির ব্যাটিং লাইনআপ। মাত্র ১২ ওভারের মধ্যেই তাদের ৫ উইকেট পড়ে যায়। তা সত্ত্বেও একমাত্র শ্রেয়স আইয়ারই দৃঢ় সংকল্প দেখান এবং দিল্লির ইনিংসক এগিয়ে নিয়ে যেতে চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষ ওভারে মুজিব উর রহমানে ঠান্ডা মাথার বোলিং পাঞ্জাবকে এই ম্যাচে জয় এনে দেয়।
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ অঙ্কিত রাজপুত
“পাঞ্জাবের হয়ে এটা আমার দ্বিতীয় ম্যাচ ফলে আমি ভীষণই খুশি। এই পারফর্মেন্স আমার দলের প্রতিদায়বদ্ধতা। আমার মনে হয়েছিল যে যদি অধিনায়ক আমাকে দায়িত্ব দেয় তাহলে আমাকে ভাল কিছু করে দেখাতে হবে সেই সঙ্গে উইকেট তুলতে হবে। কারণ আমি এই লো স্কোরিং ম্যাচে দলকে জেতাতে চেয়েছিলাম। উইকেট টু উইকেট বল করাই আমার লক্ষ্য ছিল। আমি বলে লেংথ ঠিক রেখেছি এবং খুব বেশি বৈচিত্র আনার চেষ্টা করি নি। আমার স্পেলের শেষ দিকে আমি শ্রেয়সকে আউট করতে চেষ্টা করেছি কারণ ওকে আউট করলেই আমরা ওদের দ্রুত শেষ করতে পারতাম”।
দিল্লি অধিনায়ক গৌতম গম্ভীর
“ আমার মনে হয় যদি আপনি প্রথম ৬ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেন, তখন বিপক্ষকে ম্যাচে ফেরার সুযোগ করে দেন। আমরা রান করার পাশাপাশি প্রচুর উইকেটও হারিয়েছি। আমাদের বোলাররা সত্যিই ভালো বল করেছে ওদের আটকাতে কিন্তু প্রথম ৬ ওভারে বড্ড বেশি উইকেট হারিয়ে ফেলেছিলাম আমরা এবং এমন যখন ঘটে তখন ভীষণই কঠিন হয়ে যায়। হ্যাঁ ও (শ্রেয়স) সত্যি দারুণ ব্যাট করেছে আবেশও ভাল পারফর্ম করেছে। পৃথ্বী শ’ ভবিষ্যতের প্লেয়ার। আমাদের এখনও ৮টা ম্যাচ রয়েছে এবং সত্যি আমাদের আরও ভাল খেলতে হবে। আশার কথা আমাদের বোলাররা সত্যিই ভাল বল করেছে কিন্তু আমাদের ব্যাটসম্যানরা তাদের কাজটা সম্পূর্ণ করে উঠতে পারে নি”।
পাঞ্জাব অধিনায়ক রবিচন্দ্রন অশ্বিন
“ আমরা শেষ ওভারে কাকে দিয়ে বল করানো যায় তা না ভেবে কিভাবে বলা করা যায় তা নিয়েই আলোচনা করছিলাম, কারণ আমি শেষ ওভারটা আমি মুজিবকে দিয়েই করাব ভেবেই নিয়েছিলাম। কারণ আগের ওভারে শ্রাণ ইয়র্কার করার চেষ্টা করে মার খেয়েছে। তাই আমরা শেষ ওভারে ওই নিয়েই আলোচনা করছিলাম, বলের লেংথ, স্লোয়ার বল এরকমই কিছু নিয়ে। এ জে (টাই) এদিনের আমার সেরা বোলার ছিল, তাই তাকে তাড়াতাড়ি বল করাতে চেয়েছিলাম, কারণ যদি শ্রেয়স আইয়ারের উইকেট পেয়ে যায়, তাহলেই সেটাই ম্যাচ ঘুরিয়ে দিত এবং তাই আমি তাড়াতাড়ি ওকে বল করিয়ে দিই। আমি বিশ্বাস করেছিলাম যে লোয়ার অর্ডার এবং বিদেশি ব্যাটসম্যানদের পক্ষে ক্রিজে এসে মুজিবকে মারাটা শক্ত। কোচ সত্যি সত্যিই কিছুই বলে নি। আমরা একটা দল যারা এই চ্যাম্পিয়নশিপে ভাল প্রদশর্ন করার ব্যাপারে সিরিয়াস এবং যে কোনও দূরত্বই পার করতে পারি। এটাই সেই ম্যাচ যা আমরা অতীতে চেয়েছিলাম। যদি আপনি একবার কোনও কম রান ডিফেন্ড করে ফেলেন, তাহলে আপনি যে কারও উপরেই বাজি ধরতে পারেন এবং সকলের বিরুদ্ধেই সেই দূরত্ব অতিক্রম করতে পারেন। এটাই আমার ছেলেদের কাছে পরিস্কার করে দিয়েছিলাম আমি এবং তারা তার ভালই সাড়া দিয়েছে। তারা প্রথম ৬ ওভারে সামনে দাঁড়িয়ে আক্রমণ করতে চেয়েছেএবং এটা সত্যিই আমাদের হাতে চলে এসেছিল কারণ এটা সেরকম উইকেট নয় যেখানে আপনি আসতে পারেন, নিয়ে যেতে পারেন এবং সবকিছুই আপনার হাতে রাখতে পারেন। আমি এক সময়ে এক ওভার করেই ভেবেছি, কারণ যদি আপনি অনেকদূর চিন্তা করে নেন তাহলে খুব তাড়াতাড়িই আপনার চুল পেকে যাবে”।