কপাল ভালো বলতে হবে শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমলের। একে তো বৃষ্টির কারণে শ্রীলঙ্কা ম্য়াচে ব্য়াকফুটে ভারতকে ঠেলে দেয়। তারপর দ্বিতীয় ইনিংসে ভারত ম্য়াচে ফিরে শ্রীলঙ্কার সাত উইকেট ধসিয়ে দিয়েও শ্রীলঙ্কা ম্য়াচ ড্র করল। আর সময় ছিল না হাতে। ভারত-শ্রীলঙ্কা তিন ম্য়াচের টেস্ট সিরিজ ০-০ ফলে দাঁড়িয়ে। সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবে ২৪ তারিখ থেকে নাগপুরে।
গত বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) প্রথম টেস্ট ম্য়াচ শুরু হয়। গত তিনদিনই যা খেলা হয়েছে ভালোভাবে। কলকাতা টেস্ট ড্র হওয়ার পর বিরাট বলছেন, ”হাতে যা সময় ছিল, তাতে আমাদের কিছু একটা করতে হতো বলার মতো। এই টেস্টে চতুর্থ আর পঞ্চম দিনে পিচ অন্য়রকম আচরণ করতে শুরু করে। এই তো আপনারা সেটা নিয়েই কথা বলছিলেন। আমরা কিন্তু ব্য়াকফুটে থেকেও লড়াই করার মতো চারিত্রিক বৈশিষ্ট দেখিয়েছি। শ্রীলঙ্কার বোলারদের কৃতিত্ব দেবো। যদিও আমরা জানতাম, আমাদের বোলাররা লেগে থাকলে ম্য়াচে ফিরে আসবই। শ্রীলঙ্কার ব্য়াটিংয়ে ধস নয়, আসলে আমাদের আত্মবিশ্বাস কাজ করেছে। এই ধরনের পিচে খেলা খুব কঠিন। ম্য়াচ যে অবস্থাতে শেষ করলাম, তাতে আমাদের বাহবা প্রাপ্য়।”
বোলার ভুবনেশ্বর কুমারের প্রশংসা করে ভারত অধিনায়ক আরও বলেন, ”ভুবি বেশ পেস আদায় করে নিয়েছে উইকেট থেকে। টেস্ট ম্য়াচ খেলার সুযোগকে ও দু‘হাতে লুফে নিয়েছে। বিদেশের মাটিতে ভুবিকে কাজে লাগবে। ওকে আমরা তিন ধরনের ফরম্য়াটেই খেলাতে চাই। এই টেস্টে ও আট উইকেট নিলো। কৃতিত্ব দিতেই হবে ওকে।”
নিজের শতরান সম্পর্কে বিরাট এরপর বলেন, ”(ঋদ্ধিমান) সাহার উইকেট চলে যাওয়ার পর আমি আর ভুবি ক্রিজে ওই সময়টা এনজয় করার চেষ্টা করেছি। ভাগ্য় ভালো থাকায় ওরাও নতুন বল নেয়। পুরনো বল নরম হয়ে এসেছিল। কেরিয়ারের পঞ্চাশতম শতরান করে বেশ ভালোলাগছে। দলকে এই ধরনের মুহূর্তে সাহায্য় করতে গিয়ে রান করলেই আমার আনন্দ লাগে। ক‘টা শতরান করলাম সে নিয়ে ভাবি না।”
ইডেন টেস্টের ম্য়ান অফ দ্য় ম্য়াচ ভুবনেশ্বর কুমার বললেন, ”দ্বিতীয় ইনিংসে বল করা কঠিন ছিল। ব্য়াটে বল সহজেই আসছিল। অবশ্য়, রিভার্স সুইংয়ে হচ্ছিল পিচে। আমি ওটাই বেশি করে ব্য়বহার করেছি। যখন টেস্টের আসরে প্রথম পা রাখি, সে সময় সুইংয়ের ওপরেই আমাকে ভরসা করতে হয়েছিল। বিরাট সেদিনের কথা মনে করে ক্রমাগত চেষ্টা করে যেতে বলেছিল।”
ইডেন আবার ঘরের মাঠে মহম্মদ সামির। ম্য়াচের পর তিনি জানান, ”অতিরিক্ত প্রচেষ্টার দরকার ছিল। ভারত সেটাই করেছে। গত তিনদিন উইকেট অনেক সহজ হয়ে গিয়েছিল খেলার জন্য়। শেষ দিনে আমাদের কামড় দেওয়ার প্রয়োজন ছিল। আমরা দিইও। কিন্তু, জয় আসেনি। ভারত প্রথম ইনিংসে ২০০ রান করলে জিততে পারত কি না, সে বিষয় নিয়ে পরে আলোচনা করা যাবে।”
ওদিকে, শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমাল নিজেদের পারফরম্য়ান্স সম্পর্কে বললেন, ”টস জেতাটা কাজে দিয়েছে। ভালো ক্রিকেট খেলেছি। লড়াই করেছি গোটা টেস্ট ম্য়াচে। দুর্ভাগ্য়বশত শেষ ১০-১৫ ওভারে আমাদের ওপরে চাপ পড়ে যায়। গত দু‘বছর ধরে (সুরঙ্গা) লকমল ভালো বল করে যাচ্ছে। অধিনায়ক হিসেবে যে কেউ ওর উপরে ভরসা রাখবে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্য়াট ককরতে পারছি না আমরা। আরব আমির শাহিতেও আমরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দ্বিতায় ইনিংসে ব্য়াট করতে পারিনি ভালোভাবে।”
সংক্ষিপ্ত স্কোর –
ভারত –
প্রথম ইনিংস – ১৭২ ও দ্বিতীয় ইনিংস – ৩৫২/৮ (ডিক্লেয়ার্ড)
শ্রীলঙ্কা –
প্রথম ইনিংস – ২৯৪ ও দ্বিতীয় ইনিংস – ৭৫/৭
ম্য়াচের ফলাফল – ড্র