শ্রীলঙ্কার স্বাধীনতার ৭০ বছর উপলক্ষে অনুষ্ঠিত নিদাহাস ট্রফিতে তাদের তৃতীয় ম্যাচে লাগাতার দ্বিতীয় জয় হাসিল করল ভারত। এখনও পর্যন্ত তিনটি ম্যাচ খেলে ভারত দুটিতে জয় লাভ করেছে। ম্যাচের শুরুতেই ভারতীয় দলের বোলাররা শ্রীলঙ্কাকে বেঁধে রাখে মাত্র ১৫২ রানে। ভারতের যা ব্যাটিং লাইনআপ তাতে এই রান এমন কিছু কঠিন ছিল না। ফলে শুরুয়াতি আঘাত কাটিয়ে উঠে ভারত এই ম্যাচ ৯ বল বাকি থাকতেই ৬ উইকেটে জিতে নেয়।
এই ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে ম্যাচটি শুরু হয় এক ঘন্টা দেরীতে। প্রবল বর্ষনের কারণেই ম্যাচ দেরীতে শুরু হওয়ায় দু’দলের জন্যই ম্যাচ নেমে আসে ১৯ ওভারে। টসে জিতে রোহিত শর্মা শ্রীলঙ্কাকে আগে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানান। ধনুশকা গুনতিলকা এবং কুশল মেন্ডিসের ব্যাটে ভর করে শ্রীলঙ্কা শুরটা ভালই করেছিল। ভারতকে ম্যাচের প্রথম সাফল্য এনে দেব শার্দূল ঠাকুর। শ্রীলঙ্কার স্কোর বোর্ডে ২৫ রানের মাথায় গুনতিলকাকে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান তিনি। অন্যদিকে মেন্ডিস এক দিক ধরে থেকে বেশ কিছু দুর্দান্ত শট খেলে শ্রীলঙ্কাকে অনেকটাই এগিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু সে সুযোগ নিতে ব্যর্থ হয় লঙ্কার বাকি ব্যাটসম্যানরা। মেন্ডিস এই ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি করেন।
শেষ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা দল নির্ধারিত ১৯ ওভারে ১৫২ রানই তুলতে পারে। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে ২৭ রানে চার উইকেট নিয়ে শীর্ষে থাকেন শার্দূল। শার্দূল চার উইকেট নিলেও ম্যাচের আসল নায়ক কিন্তু ওয়াশিংটন সুন্দর। শ্রীলঙ্কার ইনিংসের মাঝের ওভারে তিনি রানের গতি আটকে দেন সেই সঙ্গে মাত্র ২১ রান দিয়ে দুই উইকেটেও নেন তিনি। ভারতের শুরুটা কিন্তু কিন্তু মোটেও ভালো হয় নি। এদিনও ব্যর্থ ওপেনার রোহিত শর্মা। ভারতের দুই ওপেনারকে দ্রুত প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান আকিলা ধনঞ্জয়। এরপরই পরিস্থিতি সামাল দেন লোকেশ রাহুল এবং সুরেশ রায়না। এই দুজনের মদহ্যে ৪০ রানের পার্টনারশিপ তৈরি হয়। কিনতি এই দুজনও বেশিক্ষন ক্রিজে থাকতে পারেন নি। একটা সময় ভারতের স্কোর দাঁড়ায় ৮৫/৪। এখান থেকেই খেলা ধরে মনীশ পান্ডে এবং দীনেশ কার্তিক। এই দুজনের অপরাজিত ৬৮ রানের পার্টনারশিপ ভারতকে ৯ বল বাকি থাকতে জয় এনে দেয় ৬ উইকেটের বিনিময়ে।
মনীশ অপরাজিত থাকেন ৪২ রানে এবং কার্তিক করেন অপরাজিত ৩৯ রান। ম্যাচ শেষের সাংবাদিক সম্মেলনে ভারত অধিনায়ক সমস্ত কৃতিত্ব দেন ভারতীয় বোলারদের। তিনি জানান, “স্মার্ট পারফর্মেন্স, বিশেষ করে বোলারদের। শ্রীলঙ্কার এরকম একটা ব্যাটিং ইউনিটকে এভাবে আটকে রাখার জন্য বোলারদের প্রচেষ্টা সত্যিই তারিফ যোগ্য। তবে বোলারদের জন্য পরিস্থিতি খুব একটা সহজ ছিল না। মাঠে বেশ শিশির ছিল। ফলে না স্পিনারদের জন্য না জোরে বোলারদের জন্য পরিস্থিতি খুব সহজ ছিল না। তবে ওরা ওদের পরিকল্পনাকে দারুণ ভাবে সফল করেছে। যেখানে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আমরা শেষ করেছিলাম এদিন সেখান থেকেই শুরু করেছে ওরা। বোলারদের পরিকল্পনামাফিক কাজ করা সত্যিই দারুণ ছিল। আমরা ম্যাচের আগে অনেক কিছু নিয়েই আলোচনা করেছিলাম। সেই আলোচনার ছাপ সকলেই ম্যাচে আমাদের খেলায় দেখতে পেয়েছেন। আমরা সত্যিই ভীষণ ভগভীরভাবে ব্যাট করেছি। দেখতে গেলে আমাদের এরকম একটা ব্যাটিং লাইনআপ আগে ছিল না। আমাদের হাতে অনেক অলরাউন্ডার রয়েছে। সেভাবে দেখতে গেলে সাম্প্রতিক অতীতে আমাদের মিডল অর্ডার সেভাবে ব্যাট করার সুযোগ পায় নি। কিন্তু আজ সুযোগ পাওয়ার পর দেখা গেলো মনীশ এবং কার্তিক দারুণ ব্যাট করেছে। আমাদের এই জয় কোন একজনের পারফর্মেন্সের কারণে নয়, এটা সম্পূর্ণ দলগত একটা প্রয়াস। আমরা এখান থেকে পেছনে ফিরে দেখতে চাই না। তিনটে দলই এখনও এই টুর্নামেন্টে জীবিত রয়েছে”।