ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি যেভাবে মেশিনের মতো রান করেছেন ইদানিং, তাতে অনেকেই অবাক। ব্য়াট হাতে মাঠে নামলেই সেঞ্চুরি করা যেন অভ্য়াসে পরিণত করে ফেলেছেন। একের পর এক রেকর্ড গড়ে ছলেছেন। সাম্প্রতিক ফর্মের বিচারে অনেকে তাকে গ্রেটেস্ট ক্রিকেটার শচীনের থেকেও এগিয়ে রাখতে পছন্দ করছেন। বিরাটের ফর্ম যেন অতিমানবীয় হয়ে উঠছে। টেস্ট ক্রিকেটে অধিনায়ক তো ছিলেনই, সেই সঙ্গে এবছরের শুরুতে সীমিত ওভারের ক্রিকেট দলের অধিনায়কত্ব হাতে ওঠার পর থেকে আরও খুনে মেজাজ ধরেছেন তিনি। বিপক্ষ দলের বোলারদের প্রায় শেষ করে ছাড়ছেন। একমাত্র নিজে উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে এলে রক্ষা, নাহলে বিরাটকে কিভাবে আটকানো যায়, এ উত্তর যেন কোনও বোলারের কাছেই নেই।
একদিনের ক্রিকেটে ৩২টি শতরান করা হয়ে গিয়েছে বিরাটের। পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটে সর্বকালের সেরা সেঞ্চুরি করাদের তালিকায় বিরাট দু’নম্বরে। অথচ বয়স মাত্র আটাশ। নিউজিল্য়ান্ড সিরিজে যেভাবে ব্য়াট করেছেন, তাতে মনে হয়নি, অস্ট্রেলিয়া সিরিজে সেভাবে রান পাননি তিনি। চলতি বছরে এক ক্য়ালেন্ডার বর্ষে দু’হাজারের ওপর রান করা হয়ে গিয়েছে ভারত অধিনায়কের। এবছর প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে একদিনের ক্রিকেটে হাজারও পেরিয়ে গিয়েছেন। টেস্টের আসরে দু’টি এবং একদিনের ফরম্য়াটে ছ’টি সেঞ্চুরি মিলিয়ে আটটা শতরান। ভারত অধিনায়ক যে কি ধরণের মারাত্মক ফর্মে আছেন, তা তাঁর সাম্প্রতিক পরিসংখ্য়ানই বলে দিচ্ছে।
এই ক’দিন আগেও ভারতীয় দলে ক্রিকেটারদের নির্বাচন নিয়ে নাম না করে বিরাট কোহলির সমালোচনা করেছিলেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক সুনীল গাভাস্কার। গায়ের ট্য়াটু নিয়েও খোঁচা দিয়েছিলেন বর্তমান জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের। সেই গাভাস্করই বিরাট কোহলির ফর্মের প্রশংসা না করছেন এখন।
একটি বেসরকারি সংবাদমাধ্য়মকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সানি বলেন, ”বিরাট ব্য়াটহাতে যেভাবে ধারাবাহিকতা দেখাচ্ছে। তা অসাধারণ বললেও কম হবে। তার চেয়েও বেশি কিছু। নিউজিল্য়ান্ডের বিরুদ্ধে যে ও শতরান করবে, এ নিয়ে কারও দ্বিধা ছিল না। কারও মনে কোনও প্রশ্ন ছিল না। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে যে ভুলগুলি করেছিল, তার থেকে ও শিক্ষা নিয়েছে। নিউজিল্য়ান্ড সিরিজে ওকে থার্ড ম্য়ানের দিকে জোর করে শট নিতে দেখা যায়নি। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পাঁচ ম্য়াচের সিরিজে দু’টি ম্য়াচে ওভাবেই নিজের উইকেট দিয়ে এসেছিল।”
বিরাটের ধারাবাহিকতা সম্পর্কে গাভাস্কার আরও বলেন, ”বিরাটের ধারাবাহিকতার আসল কারণ হলো, ও ভুল থেকে শিক্ষা নেয় এবং সেই ভুল কিভাবে এড়াতে হয়, তাও জানে। এই কারণেই বিরাট এগিয়ে চলেছে।
ভবিষ্য়তে বিরাট একই রকমভাবে হয়ত কয়েকটা ম্য়াচে আউট হবে। কারণ, এটাই ক্রিকেট। মানুষ ভুল করে এবং ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে তা এড়িয়ে চলতে শেখে। বোলার বল করছে উইকেট নেওয়ার জন্য়। একটা ভালো বল আউট করল ওকে, সেটা মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু, নিজের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে, সেই ভুল কিভাবে এড়িয়ে চলতে হয়, বিরাট সেটা ভালো করে জানে। এই কারণেই বিরাট অন্যদের থেকে আলাদা মাপের ক্রিকেটার। আর সেই জন্য়ই এতটা ধারাবাহিক।”