২০১৩য় ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের ব্যান ঘোষনার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বড়োসড়ো পদক্ষেপ নিলেন শ্রীসন্থ। বোর্ডের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে অ্যাপিল করলেন তিনি। বিশ্বকাপ জয়ী এই বোলারকে স্পট ফিক্সিংয়ের জন্য আজীবন নির্বাসিত করে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের নিয়মরক্ষা কমিটি। যদিও এর বছর দু’য়েকের মধ্যেই দিল্লীর একটি ট্রায়াল কোর্ট এমসিওসিএ আইনের আওতায় প্রমানের অভাবে তাকে ক্লিনচিট দেয়। সংগঠিত অপরাধ সিন্ডিকেট ও সন্ত্রাসবাদ রুখতে এরপরই মহারাষ্ট্র সরকার একটি আইন পাশ করে। কিন্তু এর পরেও বিসিসিআই তার আগের সিদ্ধান্ত বদলায় নি। তাদের বক্তব্য ওই আইন ফৌজদারী মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, এবং তারা স্বাশাসিত সংস্থা, তাই তারা তাদের নিয়ামক রক্ষা কমিটির রায়ই বলবৎ রাখবেন।
স্কটল্যান্ডে লিগ ক্রিকেট খেলার ব্যাপারে বিসিসিআই ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ দিতে অস্বীকার করলে এ বছরের ফেব্রুয়ারীর গোড়ার দিকে শ্রীসন্থ তার আজীবন নির্বাসনের বিরুদ্ধে কেরালা হাইকোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করেন। গত আগস্টে বিশ্বকাপ জয়ী এই বোলারের কাছে আশার দরজা খুলে যায়, যখন নির্দিষ্ট কোনো প্রমান না থাকায় বিচারক এ মুহম্মদ মুস্তাক বিসিসিআইকে এই বোলারের বিরুদ্ধে ব্যান প্রত্যাহার করে নিতে নির্দেশ দেন। যদিও গত মাসে বিসিসিআই কেরালা হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চের কাছে এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আবেদন করলে বোর্ডের পক্ষেই রায় দেয় সেই ডিভিসন বেঞ্চ। তারা বোর্ডের তরফে নেওয়া শ্রীসন্থের আজীবন নির্বাসনের রায়কে বলবৎ রাখেন। সংবাদমাধ্যকে এই জোরে বোলার জানিয়েছেন, ‘‘আমার জন্য এখন একটাই রাস্তা খোলা রয়েছে। আর তা হল সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া। ক্রিকেট বাদ দিলে দিনের শেষে আমার জীবন ভালোই কাটছে। আমি শুধু লড়াই করছি আমার অধিকারের জন্য। এটা শুধু দেশের হয়ে খেলার লড়াই নয়, লড়াই আমার সম্মান ফিরে পাওয়ার।’’ সংবাদমাধ্যমকে তিনি আরও জানিয়েছেন, গত সাড়ে চার বছর ধরে তিনি চুপ করেছিলেন কিন্তু এখন তার মনে হচ্ছে এটাই সঠিক সময় নিজের অধিকার বুঝে নেওয়ার। তিনি বলেছেন, ‘‘এটা সবে শুরু। আরও অনেক কিছু সামনে আসবে।’’ এদিন তিনি পরিস্কার করে দেন যে বিসিসিআই-এর অ্যান্টিকোরাপশন অ্যান্ড সিকিউরিটি ইউনিটের বিরুদ্ধে তিনি যে কোনও অভিযোগ করেননি। যদিও চলতি সপ্তাহের গোড়াতেই বিসিসিআই-এর অ্যান্টিকোরাপশন অ্যান্ড সিকিউরিটি ইউনিটের প্রধান নিরজ কুমার শ্রীসন্থের গভর্নিং বডির বিরুদ্ধে আনা বৈষম্যের আভিযোগ আস্বীকার করেন। এখানেই থেকে না থেকে শ্রীসন্থ জানিয়েছেন, ‘‘আমি শুধু শুধু এই প্রশ্নটাই আমি করেছিলাম। জানতে চেয়েছি, স্পট ফিক্সিং মামলায় ১৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু বাকিদের প্রতি কেন অন্য রকম ব্যবহার করা হল। আমি একবারও বলিনি তাদের নাম বাইরে আনতে। অন্য অনেকের থেকে আমি অনেক ভাল মতো জানি এই বিষয়ে। কারণ এই কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে আমাকেই যেতে হচ্ছে। ’’ স্পট ফিক্সিং মামলায় বিসিসিআইকেও একহাত নিয়েছেন শ্রী। এব্যাপারে তিনি বলেন, ‘‘একজনকে দোষী বলে দাগিয়ে দেওয়া সহজ। কিন্তু সে গোটা বিশ্বকে এটা প্রমাণ দিচ্ছে সে দোষী নয়। বিসিসিআই একের পর এক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে। তারা ভুলে গেছে মানুষ বোকা নয়।’’